শনিবার- ২৯শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৫ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
তালন্দ কলেজের ডিগ্রি পরিক্ষার ৩০টি খাতা হারিয়েছে! দায় নিবে কে?

তালন্দ কলেজের ডিগ্রি পরিক্ষার ৩০টি খাতা হারিয়েছে! দায় নিবে কে?

তানোর প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোর উপজেলার তালন্দ ললিত মোহন ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষ পরীক্ষার ৩০টি উত্তরপত্রের একটি প্যাকেট হারিয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। হারিয়ে যাওয়া প্যাকেটের মধ্যে রয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ২৩টি এবং একই বর্ষের উদ্ভিদ বিজ্ঞানের ৭টি উত্তরপত্র। গত ২৩ জুলাই এই দুটি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। খাতাগুলো চার্জার ভ্যানে কোন ধরনের পুলিশ প্রটেকশন ছাড়াই আয়াকে দিয়ে পোস্ট অফিসে পাঠানো হয়। ওই ভ্যানে উঠে বস্তাবন্দি প্যাকেট দেখে মহিলাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন তালন্দ কলেজের ডিগ্রি পরিক্ষার্থীদের খাতা পোস্ট অফিসে দিব। সাথে সাথে ছবি তুলতে চাইলে ওই মহিলা অনুরোধ করে বলেন স্যারেরা নিষেধ করেছে ছবি তুলা মানে আমার বিপদ। ফলে কলেজ ও পোস্ট অফিসের উদাসীনতায় এমন কাজ হয়েছে বলে মনে করছেন শিক্ষক মহল।
জানা গেছে, পরীক্ষা শেষে গত ২৩ জুলাই দুপুরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বরাবার তানোর সদর পোস্ট অফিসের মাধ্যমে উত্তরপত্রগুলো সিলগালা করে রিসিভ কপি নেয় তালন্দ ললিত মোহন ডিগ্রি কলেজ কর্তৃপক্ষ।
কিন্তু সন্ধ্যায় রাজশাহী মেইল প্রসেসিং সেন্টার থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানানো হয় তানোর পোস্ট অফিস থেকে তাদের (রাজশাহী মেইল প্রসেসিং সেন্টার) অফিসে পৌঁছানোর রাস্তায় একটি প্যাকেটের উত্তরপত্র পড়ে গেছে। পরে আর সেগুলো খুঁজে পাওয়া যায়নি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ উপবিভাগীয় পোস্ট অফিসের পরিদর্শক মজিবুর রহমান এই ঘটনায় রোববার রাতে তানোর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
এদিকে, এ ঘটনায় তালন্দ ললিত মোহন ডিগ্রি কলেজ কেন্দ্রের সচিব, কলেজটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জসিম উদ্দিন ও উপজেলা পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিল্লাল হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অবগত করেন। এ ঘটনায় কলেজ কর্তৃপক্ষের কোনো ধরনের গাফিলতি নেই বলেও দাবি করেন তিনি। কিন্তু পুলিশ প্রটেকশন ছাড়াই এক মহিলার মাধ্যমে ভ্যানে খাতা পাঠানো যায় কিনা প্রশ্ন করা হলে উত্তরে বলেন, মহিলার হাতে খাতা পাঠানোর প্রশ্নই উঠেনা। আমি গুবিরপাড়া মোড়ে ওই ভ্যানে উঠে মহিলাকে বলেছিলাম কিসের খাতা ও কোন কলেজের  তিনি বলেছিলেন তালন্দ কলেজের অধ্যাক্ষকে অবহিত করা হলে তিনি বলেন এসব ভিত্তিহীন কথা বলে দায় সারেন। যে সকল খাতা হারিয়ে গেছে ওইসব পরিক্ষার্থীর কি হবে জানতে চাইলে তিনি জানান জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে অবহিত করা হয়েছে তারা সিদ্ধান্ত নিবেন,পোস্ট অফিসে দেয়া হয়েছে তার রিসিভও আছে বলে দায় সারেন তিনি।
তবে তানোর পোস্ট অফিসের পোস্ট মাস্টার মুখলেছুর রহমান বলেন, যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে উত্তরপত্রগুলো সিলগালা অবস্থায় চুক্তিবদ্ধ গাড়ি চালকের মাধ্যমে রাজশাহী মেইল প্রসেসিং সেন্টারে পাঠানো হয়।
পরে রাজশাহী মেইল প্রসেসিং সেন্টার থেকে জানানো হয় একটি উত্তরপত্রের প্যাকেট পাওয়া যায়নি। যার নম্বর: ৩৫৯। এ ঘটনার পরপর তানোর থেকে রাজশাহীগামী সড়কে মাইকিং ও ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয়।
শিক্ষিত মহলের দাবি এতগুলো পরিক্ষার্থীর খাতা হারালো। খাতা পাওয়া যাবে বলে মনে হয়না। কারন এত দিনেও কোন খোজ পাওয়া যায়নি। তাহলে এসব পরিক্ষার্থীর জীবন নিয়ে খেলা ছাড়া কিছুই। পোস্ট অফিস ও কলেজ কর্তৃপক্ষ কোনভাবেই দায় এড়াতে পারেন না। এটা কলেজের জন্য মারাত্মক ক্ষতি কর।যা আগামীতে টের পাবে কলেজ।
 রাজশাহী ডেপুটি পোস্ট মাস্টার জেনারেল (ডিপিএমজি) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, উত্তরপত্রগুলো উদ্ধারে জোরালো কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
অন্যদিকে, তানোর উপজেলা পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বিল্লাল হোসেন বলেন, পোস্ট অফিস তাঁদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবগত করেছি।
এ নিয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বদরুজ্জামান বলেন, তিনি বিষয়টি এখনো অবগত নন। তবে পরীক্ষার্থীদের চিন্তার কোনো কারণ নেই বলেও তিনি জানান।
১৬১ বার ভিউ হয়েছে
0Shares