রবিবার, ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

তেঁতুলিয়ায় স্থানীয়দের দুই গ্রæপের মধ্যে সংঘর্ষে বিএনপির কর্মীসহ আহত ১৫,আটক ৭ জন

তেঁতুলিয়ায় স্থানীয়দের দুই গ্রæপের মধ্যে সংঘর্ষে বিএনপির কর্মীসহ আহত ১৫,আটক ৭ জন

২১ Views

মো জুলহাস উদ্দীন,তেঁতুলিয়া প্রতিনিধি: তেঁতুলিয়া উপজেলায় বাংলাবান্ধায় দুটি গ্রুপের সাথে ব্যাপক সংঘর্ষ ঘটেছে। এ সংঘর্ষে ভাড়াটিয়া লোক ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ বাংলাবান্ধা ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কুদরত ই খুদা মিলনের বিরুদ্ধে। সংঘর্ষের সময় সাতজনকে পুলিশ-বিজিবির হাতে সোপর্দ্য করেছে বিক্ষুদ্ধ জনতা। আহত হয়েছেন প্রায় ১৫ জন। এদিকে এ ঘটনার জেরে ক্ষিপ্ত হয়ে চেয়ারম্যানের বাড়ি ও গাড়িতে অগ্নি সংযোগ করেছে বিক্ষুদ্ধ জনতা।

সোমবার (১৬ আগস্ট) সকাল থেকে বিকালে তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের সামনে সিপাইপাড়া বাজারে হঠাৎ একদল মানুষ এসে স্থানীয়দের উপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় স্থানীয়দের মধ্যে তাদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এবং এ ঘটনায় দুই পক্ষের প্রায় ১৫ জন আহত হয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকেই কুদরত ই খুদা মিলনের বিরুদ্ধে স্থানীয়রা জমি দখল, সিন্ডিকেট, মিথ্যা মামলা ও হয়রানির অভিযোগ এনে আন্দোলনে নামেন। তাকে বিচার ও চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারণ চেয়ে মানববন্ধন, বিক্ষোভ, জুতা মিছিল ও স্মারকলিপিও প্রদান করেন তারা ।
এদিকে সোমবার ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কতৃক কয়েক শতাধিক বিভিন্ন চোরকারবারী ব্যক্তিদের ভাড়া করে নিয়ে আসেন বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী ও স্থানীয়দের। আবার অনেকেই অভিযোগ করেন তিনি দীর্ঘ দিন ধরে পরিষদের না আসায় আজ তিনি ভাড়াটে লোলজন নিয়ে তার অফিসে বসতে এসেছে ছিলেন। এসময় তার ভাড়াটে লোকজন দিয়ে হামলা শুরু করেন। এমন সময় তার বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসা ভুক্তভোগীরা সামনাসামনি হলে শুরু হয় সংঘর্ষ।
এ সংঘর্ষে সিপাইপাড়া বাজারে বিভিন্ন দোকানপাট ভাংচুর করা হয়। মারধরের শিকার হন অনেকেই। এ সময় সংঘর্ষের ঘটনায় দুই পক্ষের লোকজন, স্থানীয় পথচারী,ব্যবসাসী ও বিএনপি তিন সমর্থকসহ মোট ১৫জন আহত হয়েছেন। পরে তাদের দ্রæত ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে তেতুলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তেতুলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ ভর্তি রয়েছেন কয়েকজন। পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন ৭ জন ও এবং বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। তবে যারা আটক হয়েছে তারা সবাই চেয়ারম্যানের লোক বলে জানান স্থানীয়রা। তবে বিষয়টি এখনো খোলাসা করেনি পুলিশ।
বিকেলে স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ হয়ে বিকেলের দিকে বাংলাবান্ধা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কুদরত ই খুদা মিলেনের বাড়ি ও গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়। পরে তেতুলিয়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
এদিকে চেয়ারম্যান বিরুদ্ধে অন্যের জমি দখল, চাকুরি দেওয়ার নামে টাকা আত্মসাৎ ও বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের কুলি শ্রমিকদের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ । দীর্ঘ ১৫ বছর আওয়ামীলীগ সরকার থাকাকালে মিলন এ ইউনিয়নে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম,অন্যায়ভাবে মানুষের জমি নিজে দাঁড়িয়ে থেকে দখল অনেককে চাকুরী দেয়ার নামে ও মানুষের জমি আরেকজনকে দখল করে দেয়ার নামে টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের৷ এছাড়া তার বিরুদ্ধে কথা বলায় মাদক মামলা সহ নানা মামলা দিয়ে মানুষকে হয়রানি করেছেন। অনেকে তার রোষানলে পড়ে নিঃস্ব হয়েছেন। অবিলম্বে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে দৃস্টান্তুমূলক শাস্তি দাবি জানিয়ে আসছে দীর্ঘ দিন ধরে।
তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুজয় কুমার রায় এ ঘটনায় ৭ জনের আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত ৭ জনকে আটক করেছেন।

Share This

COMMENTS