বৃহস্পতিবার- ২৭শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৩ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
তানোরে এসএসসি পরিক্ষার্থীকে অপহরন ৬ দিন পর উদ্ধার রফাদফা

তানোরে এসএসসি পরিক্ষার্থীকে অপহরন ৬ দিন পর উদ্ধার রফাদফা

তানোর প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোরে এসএসসি পরিক্ষার্থীকে অপহরন করে অমানবিক নির্যাতন ও থানা থেকে অভিযোগ তুলে নেওয়ার ৬ দিন পর উদ্ধার, অবশেষে চেয়ারম্যান ফরহাদের নেতৃত্বে রফাদফা এবং মেয়ের পরিবারকে সমাজচ্যুত করা হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। চলতি মাসের ১২ জানুয়ারি তালন্দ বাজার থেকে অপহরনের ঘটনাটি ঘটে। আর গত ১৮ জানুয়ারি বুধবার সকালে ছেলে সাগরের চাচা রশিদের বাড়িতে বসে রফাদফার পর পরিবারের হাতে ছাত্রীকে দেওয়া হয়। উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়ন (ইউপিতে) ঘটেছে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি। এদিকে অপহরনের দায় চাপিয়ে মেয়ের পিতাকে সমাজচ্যুত করা হয়েছে বলেও একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেন। ফলে চেয়ারম্যানের এমন হটকারিতা ও থানা পুলিশের এমন ঘটনায় এলাকায় চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। সেই সাথে একের পর এক সালিশ বানিজ্যে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনসাধারন।
জানা গেছে, চলতি মাসের ১২ জানুয়ারি জনৈক ব্যক্তির মেয়ে এসএসসি পরিক্ষার্থী পৌর এলাকার তালন্দ কোচিং সেন্টারে যান। সেখান থেকে কামারগাঁ ইউপির  মিরাপুর গ্রামের দেলশাদের পুত্র বখাটে সাগর জোরপূর্বক সিএনজিতে  অপহরন করে রাজশাহী শহরে নিয়ে যান। সময় মত মেয়ে না আসার কারনে পিতা থানায় অপহরনের অভিযোগ দায়ের করেন। এঅবস্থায় বখাটে সাগরের পরিবার অভিযোগের বিষয়টি জানতে পেরে ইউপি চেয়ারম্যান ইউপি আ”লীগ সভাপতি ফজলে রাব্বি ফরহাদ কে বলেন অভিযোগ তুলে নিলে মেয়ে পিতার কাছে দেওয়া হবে, নচেৎ ফেরত দেওয়া হবে না।
চেয়ারম্যান ফরহাদ জানান, আমি বিষয়টি জানার পর মেয়ের পিতাকে বলি অভিযোগ তুলে নাও মেয়েকে ফেরত দেওয়া হবে। এরই প্রেক্ষিতে গত বুধবার সকালের দিকে মেয়েকে ছেলে সাগরের চাচার বাড়ি কামারগাঁ ইউপির মিরাপুর গ্রামের রশিদের বাড়িতে রাখা হয়। দুপুরের আগে ওই বাড়িতে ৩জন ওয়ার্ড মেম্বার করিম, সাবেক মেম্বার বকুল ও মালার মোড়ের নাদিম এবং মুকুলসহ লোকজন বসে মেয়েকে পিতার নিকট দেওয়া হয়। ৬ দিন পর উদ্ধার হল থানায় অভিযোগ হয়েছে কিভাবে এমন প্রহসনের বিচার করলেন জানতে চাইলে চেয়ারম্যান জানান, আমি জনপ্রতিনিধি, আমার কাজ এলাকার ভালোমন্দ দেখা। মেয়ের পিতাকে সমাজচ্যুত করা হয়েছে এবং মেয়ে মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন এভাবে কি বিচার করা যায় প্রশ্ন করা হলে উত্তরে বলেন জনপ্রতিনিধিদের কে অনেক কিছু করতে হয় বলে দায় সারেন।
৩ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য করিম জানান, আমি বিচারে ছিলাম না চেয়ারম্যান সবকিছু বলতে পারবেন।
ছেলে সাগর জানান, আমাকে ওই মেয়ে অপহরন করেছে, বিচার সালিশ হয়ে গেছে সমস্যা কোথায় বলে দম্ভক্তি প্রকাশ করেন।
মেয়ের পিতা জানান, আমার মেয়েকে অপহরনের পর আমি পাগলের মত ছেলের পিতার হাত পা ধরেছি কিন্তু উদ্ধার হয় নি। পরে চেয়ারম্যান মেম্বারসহ সবাই ছেলের পক্ষ নিয়ে অভিযোগ তুলতে বলেন তাহলে মেয়েকে পাওয়া যাবে এজন্য অভিযোগ তুলে নিয়েছি। যে সর্বনাশ হয়ে গেছে সেটা তো বলার মত না। মেয়ে সামনে এসএসসি পরিক্ষা দিতে পারবে কিনা সন্দেহ। তবে এঘটনায় সমাজচ্যুত করেনি, বিগত এক বছর আগে সমাজচ্যুত করেছে।
স্থানীয়রা জানান, একটা মেয়েকে অপহরন করার ৬ দিন পর উদ্ধার হল। তাকে প্রচুর নির্যাতন করেছে, সে জন্য চরম অসুস্থ। আর চেয়ারম্যান কিভাবে এসব প্রহসনের বিচার করতে পারলেন। একজন চেয়ারম্যানের কাছে এমন বিচার কাম্য না। এমন বিচারের খবরে এলাকায় চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। পিতা অভিযোগ দিল, আবার তুলে নিল এবং কেন থানা পুলিশ ব্যবস্থা নিল না। আসলে দলীয় ব্যাপার হয়ে পড়েছে সবকিছু। এজন্য এমন অবস্থা।  একের পর এক নারী কেলেংকারির ঘটনা বিচারের নামে প্রহসন করছেন চেয়ারম্যান ও তার লোকজনরা।
ওসি কামরুজ্জামান মিয়া জানান, মেয়ের পিতা অভিযোগ করার পর সে অভিযোগ তুলে নিয়েছে। কোন মামলা করবে না। ৬ দিন পর উদ্ধার হল আবার বিচার সালিশে রফাদফা হয়েছে আপনি কোন ব্যবস্থা নিয়েছেন কি জানতে চাইলে তিনি জানান, মামলা না করলে আমি কি করব, এঘটনা কি এভাবে মিমাংসা করা যায় প্রশ্ন করা হলে উত্তরে বলেন, কেউ মামলা না করলে জোর করা যায় না।
১৫১ বার ভিউ হয়েছে
0Shares