শনিবার- ২৯শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৫ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
তানোর মুন্ডুমালা পৌরসভার ভূমি রেজিস্ট্রির করের টাকা তছরুপ

তানোর মুন্ডুমালা পৌরসভার ভূমি রেজিস্ট্রির করের টাকা তছরুপ

তানোর প্রতিনিধি: রাজশাহীর তানোর উপজেলার মুন্ডুমালা পৌরসভার ভূমি রেজিস্ট্রির ২% করের টাকা তছরুপ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। করের টাকা তছরুপ করে মেয়র সাইদুরের আলিশান জীবন যাত্রা হলেও বছর ধরে কর্মকর্তা কর্মচারীরা বেতন না পেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। আবার পৌরসভার তেমন উন্নয়ন না হলেও মেয়রের আলিশান বাড়ি চলছে। ফলে যে আশা নিয়ে পৌরবাসী একজন নৈশ প্রহরীকে মেয়র নির্বাচিত করেছিলেন সে আশায় গুলেবাড়ি। এতে করে পৌরবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।
জানা গেছে, বিগত ২০২১ সালে মুন্ডুমালা পৌর নির্বাচনে নৌকা না পেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে ভোট করে মাত্র ৬১ ভোটে মেয়র নির্বাচিত হন মুন্ডুমালা মহিলা কলেজের নৈশ প্রহরী সাইদুর রহমান। যদিও তিনি নৈশ প্রহরীর নামে চাকুরী করতেন। কিন্তু মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে নানা অনিয়ম দুর্নীতি শুরু করেন। পৌরসভার নাগরিক মান না থাকলেও মেয়র নিয়ম বহির্ভুত ভাবে পাচ তলা বিশিষ্ট আলিশান বাড়ি করেই চলেছেন। প্রতি বছর জমি রেজিস্ট্রির ২% করের টাকা আসে লাখ লাখ। সেই টাকা প্রতি সপ্তাহে ব্যাংকে জমা হওয়া মাত্রই উত্তোলন করে তছরুপ করছেন মেয়র, সচিব ও হিসাব রক্ষক বলে একাধিক নির্ভর যোগ্য সুত্র থেকে নিশ্চিত হওয়া গেছে। পৌরসভা প্রতিষ্ঠার পর থেকে সচিব পদে আবুল হোসেন ও হিসাব রক্ষক পদে আওয়াল বহাল রয়েছেন।
পৌরসভার একাধিক নাগরিকরা জানান, পৌরবাসীর জীবন মান না বাড়লেও কর্তাবাবুদের ঠিকই সম্পদ হয়েছে। অতীতে তেমন উন্নয়ন হয়নি, শুধু লুটপাট হয়েছে। কিন্তু বর্তমান মেয়র সাইদুর নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর চোখের পর্দা নামিয়ে ফেলেছেন। তিনি নৈশ প্রহরীর আগে মুন্ডুমালা বাজারের কুলির সর্দার ছিলেন। তিনি ভোটারদের বলতেন আমি আপনাদের কুলির মতই বোঝা বহন করে সেবক হিসেবে কাজ করতে চায়। তিনি করোনা ভাইরাসের লকডাউনের সময় মেয়র হওয়ার জন্য প্রচুর খাবার বিতরন করেন। আমরা জানতাম ব্যক্তিগত তহবিল থেকে। আবার তিনি রাজশাহী সিটি মেয়রের ফান্ডে ৫০ হাজার টাকা দিলেন। এত পরিমান খাবার বিতরন ঈদ সামগ্রী দেওয়া। শুধু মেয়র হওয়ার জন্যই তিনি এসব করেছিলেন এটাই এখন প্রমানিত।
 আবার মেয়র হওয়ার পর বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে চাঁদা তুলে ভোট করেছে কর্মীরা এমন কথা বলেও সাক্ষাতকার প্রচারিত হয়। এর চেয়ে মিথ্যা আর কিছুই হতে পারেনা।
পৌরসভার বেশকিছু কর্মচারীরা জানান, মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে যত কাজ হয়েছে তা করেছে মেয়রের নিকটতমরা। বিভিন্ন লাইসেন্সে কাজ করা হয়েছে। সেটা সবাই অবহিত। মিথ্যা দিয়ে সাময়িকের ভালবাসা বা সহানুভূতি পাওয়া যায়। কিন্তু স্থায়ী ভাবে কিছুই হয় না। মেয়র সাইদুরের ক্ষেত্রেও তাই। চলতি বছরের কোন বেতন হয় নি। কিভাবে দিন পার হচ্ছে সেটা আমরাই জানি। ইচ্ছে থাকলে বেতন দেওয়া যাবে। কারন উপজেলার মধ্যে মুন্ডুমালা পৌর এলাকার জমি কেনা বেচা হয় বেশি। জমি রেজিস্ট্রির ২% করের টাকা প্রতি সপ্তাহেই উত্তোলন করে বিভিন্ন ভাবে লুটপাট হয়। তিন মাস কিংবা ছয় মাস পর করের গোচ্ছিত টাকা তুললে বেতন না হলেও উন্নয়ন হবে। কিন্তু এই সচিব ও হিসাব রক্ষক থাকলে কখনই দূর্নীতি বন্ধ হবে না। আমাদের বেতন না হলেও মেয়র সচিব, ইঞ্জিনিয়ার ও হিসাব রক্ষকসহ হাতেগোনা কয়েক জনের ভাগ্য বদল হতেই আছে।
২০১১ সাল ও ২০১৬ সালের নির্বাচনে রাব্বানী মেয়র হলেও ঠিকাদারের যত কাজ সবই করতে তার আস্থাভাজন সাইদুর। সব কিছুই সাইদুর নিয়ন্ত্রন করতেন। শুধু এখানেই শেষ না মুন্ডুমালা মাদ্রাসার মার্কেট ভেঙ্গে গোল চত্বর করছেন এবং ভাঙ্গা দোকানের যাবতীয় মালামাল পৌরসভায়। এসব নিয়েও পৌরবাসী চরম ক্ষিপ্ত।
প্রতিষ্ঠা কালীন থেকে অদ্যবদি পৌর সচিব আবুল হোসেনের কাছে জমি রেজিস্ট্রি ২% করের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, দু মাসের বেতন দেওয়া হয়েছে ও বিভিন্ন কাজে ব্যয় হয়। অথচ কোনই বেতন ভাতা দেওয়া হয়নি।
৭৬ বার ভিউ হয়েছে
0Shares