শুক্রবার, ২৩শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, English Version

সিরাজগঞ্জের তাঁতের শাড়ি লুঙ্গি-গামছা দেশের গন্ডি পেরিয়ে যাচ্ছে বিদেশে

সিরাজগঞ্জের তাঁতের শাড়ি লুঙ্গি-গামছা দেশের গন্ডি পেরিয়ে যাচ্ছে বিদেশে

এইচএম মোকাদ্দেস,সিরাজগঞ্জ : দেশজুড়ে সিরাজগঞ্জ তাঁত শিল্প সমৃদ্ধ জেলা হিসেবে পরিচিত । সিরাজগঞ্জ সদর, বেলকুচি, এনায়েতপুর, শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া ও চৌহালী উপজেলায় পাওয়ার লুম ও হ্যান্ডলুম মিলে অন্তত আড়াই লক্ষাধিক তাঁত রয়েছে। এখানে তৈরি হয় আন্তর্জাতিক মানের লুঙ্গি, গামছা ও শাড়ি। এখানকার উৎপাদিত লুঙ্গি, গামছা ও শাড়ির কদর দেশের গন্ডি পেরিয়ে এখন বিদেশেও রপ্তানী হচ্ছে। জেলার অর্থনৈতিক চালিকাশক্তির অন্যতম শিল্পটির সঙ্গে সরাসরি যুক্ত রয়েছে অন্তত ১০ লাখ মানুষ। বছরে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার তাঁত পণ্য উৎপাদিত হয় এ জেলায়। এ কারণে জেলার ব্র্যান্ডিং ঘোষণা করা হয়েছে এ তাঁত শিল্পকে। নাম দেয়া হয় ‘তাঁতকুঞ্জ সিরাজগঞ্জ’।
দিনের আলো ফোঁটার সাথে সাথেই তাঁতের খট খট শব্দে মুখরিত থাকতো সিরাজগঞ্জের তাঁত পল্লীগুলো। কালের পরিক্রমায় এখন আধুনিকতার ছোয়া লেগেছে তাঁত কারখানাগুলোতে। উৎপাদন বাড়াতে প্রতিটি কারখানায় যন্ত্র চালিত পাওয়ার লুম দিয়ে লুঙ্গি আর গামছা তৈরি করা হয়। তাঁত শ্রমিক শাহ আলম, সাহেদ আলী, সোবাহান, সুফিয়া, জাহানারা জানান ঈদকে সামনে রেখে এখন এখানকার তাঁত মালিকরা কারখানা চালু করেছেন। ফলে আমাদের ব্যস্ততা বেড়েছে, এখন প্রতিদিনই কাজ হচ্ছে। কিছুদিন আগেও মাঝে মাঝে তাঁত বন্ধ থাকতো তখন সংসারে অভাব-অনটন লেগে থাকতো। এখন তাঁত চালু হওয়ায় আমাদের অভাব দূর হয়েছে।
এনায়েতপুর এলাকার তাঁত মালিক ইমরান খান বলেন, এখানে উৎপাদিত তাঁতের লুঙ্গি ও গামছার দেশব্যাপী ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। সারা দেশ থেকে ব্যপারীরা এসে বিভিন্ন হাট থেকে কিনে নিয়ে যান এসব শাড়ি-লুঙ্গি। তিনি বলেন, আমাদের উৎপাদিত পণ্য বড় বড় কোম্পানিগুলো তাদের নিজস্ব পণ্য বলে চালিয়ে দেয়।
বেলকুচি তাঁত মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বৈদ্যনাথ বলেন, এই জেলায় আড়াই লক্ষাধিক তাঁতে প্রায় ১০ লাখ মানুষ কর্মরত রয়েছেন। এদের হাতে উৎপাদিত উন্নত মানের তাঁত সামগ্রী উৎপন্ন হচ্ছে যার সুনাম দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশে পৌঁছেছে। এটা আমাদের গর্বের বিষয়। এরপর আমাদের উৎপাদিত লুঙ্গি ও গামছা জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় আমরা আরো গর্ববোধ করি।
তাঁত মালিক সমিতির সভাপতি হাজি আব্দুল বাকী বলেন, এই স্বীকৃতি আমাদের দীর্ঘদিনের পরিশ্রম ও চেষ্টার ফল। এতে আমাদের ব্যবসার আরো প্রসার ঘটবে বলে আশা করি। তিনি বলেন, আমাদের উৎপাদিত লুঙ্গি-গামছা দেশের বিভিন্ন বড় বড় কোম্পানি কিনে নিয়ে বিদেশে রফতানি করছে। সৌদি আরব, বৃটেনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যাচ্ছে আমাদের সিরাজগঞ্জে উৎপাদিত তাঁত পণ্য এতে আমরা গর্ববোধ করি।

সিরাজগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর সভাপতি সাইদুর রহমান বাচ্চু বলেন, জেলার অর্থনৈতিক চালিকাশক্তির অন্যতম শিল্প হচ্ছে তাঁত শিল্প। এর সঙ্গে সরাসরি যুক্ত রয়েছে অন্তত ১০ লাখ মানুষ। বছরে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার তাঁত পণ্য উৎপাদিত হয় এ জেলায়। এ কারণে জেলার ব্র্যান্ডিং ঘোষণা করা হয়েছে এ তাঁত শিল্পকে। এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হলে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতার পাশাপাশি দেশের বস্তুখাতের শীর্ষ ব্যবসায়ীদের এখানে বিনিয়োগ করা প্রয়োজন।###

বার ভিউ হয়েছে
0Shares

COMMENTS