বৃহস্পতিবার- ২৭শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৩ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
মেহেরপুরে কনস্টেবল হত্যার অভিযোগে ৪ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড

মেহেরপুরে কনস্টেবল হত্যার অভিযোগে ৪ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড

মেহের আমজাদ,মেহেরপুর : কনস্টেবল আলাউদ্দিন হত্যার অভিযোগে আনিস মন্ডল, তাহাজুত হোসেন, শাকিল হোসেন এবং রুবেল হোসেন নামের ৪ ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। এ ছাড়াও ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা। অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদন্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।

 বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে মেহেরপুরের অতিরিক্ত জজ আদালতের বিচারক রিপতি কুমার বিশ্বাস এ রায় দেন। সাজাপ্রাপ্ত আনিস মন্ডল কুষ্টিয়া জেলার মিরপুর উপজেলার বালিদাপাড়া গ্রামের কালু মন্ডলের ছেলে, তাহাজুত হোসেন একই গ্রামের আব্দুল মালেক মন্ডলের ছেলে, শাকিল হোসেন ও রুবল হোসেন সোনাউল্লাহ’র ছেলে । মামলার বিবরণে জানা গেছে ২০১৫ সালের ২৪ জুলাই গাংনী উপজেলার পিরতলা আইসি ক্যাম্পের এস আই সুবীর রায়ের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল বামুন্দি-কাজিপুর এলাকায় টহল থাকাকালীন সময়ে গোপন সূত্রে খবর পান মাইক্রোযোগ ঐ সড়ক দিয়ে মাদকদ্রব্য পাচার করা হবে।

এসময় পীরতলা সাহেবনগর নামক নামক স্থানে অবস্থান নিয়ে মাইক্রোবাসটিকে আটকানোর জন্য রাস্তার উপরে কাঠের গুড়ি ফেলে ব্যারিকেড সৃষ্টি করেন। এ সময় মাইক্রোবাসটি কাছাকাছি এসে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে গাছের গুড়ির পাশ কাটিয়ে মাইক্রো চালক পালিয়ে যাবার চেষ্টা করে। এ সময় রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশ কনেস্টবল আলাউদ্দিনকে ধাক্কা দিলে তিনি ছিটকে মাইক্রোর বাম্পার এর উপরে আটকে যান। এসময় পুলিশ কনস্টেবল আলাউদ্দিনকে টেনেহিঁচড়ে ঘটনাস্থল থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে নিয়ে হাড়াভাঙ্গা ডিএইচসিপি আর ফাজিল মাদ্রাসার সামনে স্পিড ব্রেকার এর নিকট কনস্টেবল আলাউদ্দিন ছিটকে পড়েন। পরে তাকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য কুষ্টিয়ায় পাঠানো হলে সেখানে কনস্টেবল আলাউদ্দিন মৃত্যুবরণ করেন। ঘটনাস্থল থেকে দুটি বস্তায় মোট ৩৪০ বোতলফেন্সিডিল উদ্ধার করা হয় এবং কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার বালিদাপাড়া গ্রাম থেকে কুষ্টিয়া-চ ০২-০০১১ নাম্বারের একটি মাইক্রো উদ্ধার করেন।

ওই ঘটনায় এসআই সুবীর রায় বাদী হয়ে গাংনী থানায় আনিস মন্ডল, তাহাজুত হোসেন, শাকিল হোসেন এবং রুবেল হোসেন নামের ৪ ব্যক্তিকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন যার সেশন মামলা নং১৩৪/২০১৬। জি আর কেস নং২২০/১৫। একই ঘটনায় ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয় এবং আনিস মন্ডল,তাহাজুত হোসেন, শাকিল হোসেন ও সিদ্দিক আতিউর রহমানকে আসামি করে মাদকের একটি মামলা দায়ের করেন। পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রাথমিক তদন্ত শেষে আসামিদের বিরুদ্ধ চার্জশিট দাখিল করেন। এ হত্যা মামলায় মোট ১৬ জন স্বাক্ষী তাদের সাক্ষ্য প্রদান করেন স্বাক্ষীদের স্বাক্ষ্যে আনিস মন্ডল, তাহাজুত হোসেন, শাকিল হোসেন এবং রুবেল হোসেন দোষী প্রমাণিত হওয়ায় তাদের প্রত্যেককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয় এবং ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদন্ডাদেশ দেন। মামলার রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পিপি কাজি শহীদ এবং আসামিপক্ষে অ্যাডঃ আহসানুল আলম খোকন ও কামরুল হাসান কৌশলী ছিলেন। এদিকে ওই ঘটনায় সময় ফেন্সিডিল রাখার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আনিস মন্ডল,তাহাজুত হোসেন, শাকিল হোসেন এবং রুবেল হোসেনকে ৭ বছর করে সশ্রম কারাদন্ড এবং ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদন্ডাদেশ দেওয়া হয়। মেহেরপুরের স্পেশাল ট্রাইবুনাল-২আদালতের বিচারক রিপতি কুমার বিশ্বাস এ রায় দেন।

৩৩ বার ভিউ হয়েছে
0Shares