শার্শায় প্রান্তিক চাষিদের বোরো ধান চাষে ভাগ্য বদল ধান ঘরে তুলতে পারলেই খুশিতে আত্মহারা চাষিরা

শার্শায় প্রান্তিক চাষিদের বোরো ধান চাষে ভাগ্য বদল ধান ঘরে তুলতে পারলেই খুশিতে আত্মহারা চাষিরা

শার্শা (যশোর) থেকে আব্দুল মান্নান \ যশোরের শার্শায় প্রান্তিক চাষিদের বোরো ধান চাষে এবার ভাগ্য বদল। প্রাকৃতি পরিবেশ অনুকলে থাকায় এ বছর শার্শা উপজেলায় দীর্ঘ কয়েক বছরের মধ্যে এ বছর প্রচুর পরিমানে বোরো ধান উৎপাদন হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দ্রিপক কুমার শাহার দেওয়া তথ্য মতে শার্শা উপজেরায় এ বছর ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে ২৩ হাজার ৪১১ হেক্টর জমিতে ব্যোরো ধান চাষ হয়েছে। উৎপাদন ধরা হয়েছে ১০৫৩৫০ মেট্রিক টন চাউল। গত ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে রোধান চাষ হয়েছিল ২৩৩৯০ হেক্টর ১০৫০২১ মেঃ টন চাউল উৎপাদন হয়। বৈশাখ মাসের ৭ তারিখ পর্যন্ত প্রাকৃতিক পরিবেশ অনুকুলে আছে। চাষিরা কোমর বেধে নেমেছে তাদের কষ্টার্জিত বোরো ফসল ঘরে তোলার জন্য। অনেক চাষি ইতোমধ্যে তাদের স্বপ্নের ব্যোরো ধান কেটে ঘরে তুলেছেন। অনেকে বাহিরের লোক দিয়ে প্রতি বিঘা জমি ৬ হাজার টাকায় (ফুরোন) চুক্তি ভিত্তি¡ক ধান কাটা কাজ শুরু করেছেন। সূবর্ণখালী গ্রামের প্রান্তিক চাষি আবু জাফর, আঃ হান্নান, নাসির উদ্দীন, জসিম এক স্বাক্ষাতকারে জানান এ বছর যে সুন্দর ব্যোরো ফসল হয়েছে ১৫/২০ বছরের মধ্যে এ ধরনের ফসল কখনই দেখিনি। অন্যান্য বছর ব্যোরো ধান লাগানর পর থেকে বিভিন্ন পোকার আক্রমন যেমন মাজরা পোকা, কারেন্ট পোকা, লেদা পোকা সহ বিভিন্ন প্রকার ক্ষতিকর পোকার আক্রমনের ফলে ফসল উৎপদন খুবি কষ্টকর ছিল। কিন্তু এ বছর তার ব্যাতিক্রম, যে পোকার আক্রমন একেবারেই নেই বলে­ই চলে। আমরা এ বছর প্রতি মন ধানের দাম ব্রি-৫০ জাতের ১৭০০ টাকা, মিনিকেট ১৪০০ টাকা দর পেয়ে খুবিই লাভবান। কারণ দাদন নিয়ে ব্যোরো ধান করে খুব বেশী লাভবান হওয়া যায় না। তবে এ বছর প্রাকৃতিক দূযোর্গ না হওয়ায় প্রতি বিঘা জমিতে খরচের পরিমান প্রায় ১৬ হাজার থেকে ১৮ হাজার টাকা। তাতেও কোন সমস্যা নেই এ বছর বিঘা প্রতি গড় উৎপাদন প্রায় ২৫ মন ধান। এ বছর শার্শা উপজেলায় হাইব্রিড জাতের ধান ব্রি-৫০ খুবই কম চাষ হয়েছে। বেশী চাষ হয়েছে রড মিনিকেট জাতের ভারতীয় ধান। উপজেলার লক্ষণপুর ইউনিয়নের কৃষক সামছুর রহমান, খোকন, মিন্টু, জুলফিক্কার ডিহি ইউনিয়নের প্রান্তিক চাষি ইছাহাক, খায়রুল, ওলিয়ার আব্দুল গনি নিজামপুর ইউনিয়নের প্রান্তিক চাষি আতিয়ার রহমান, বদিয়ার রহমান, মিজানুর রহমান, সিরাজুল ইসলাম, বেনাপোল ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য রায়হান উদ্দীন, আমিরুল ইসলাম, গয়ড়া গ্রামের আজিজ মোড়ল, পুটখালীর বিল­াল হোসেন, আহাসান আলী, আব্দুল গফ্ফার সর্দার, কায়বা ইউনিয়নের রহিম, শফিকুল ইসরাম, মান্দার বক্স একই অভিমত ব্যক্ত করে বলেন চাষিদের ভাগ্য উন্নয়নে একমাত্র আল­াহই ভরসা। কারণ দাদন ব্যবসায়ীদের কারনেই অতিরিক্ত চড়া সুদ দিয়ে প্রায় ৬০ ভাগ প্রান্তিক চাষিরা ব্যোরো ধান চাষ করে কষ্টার্জিত ফসল উৎপাদন করে থাকে। উলে­খিত ব্যাক্তিরা তাদের স্বাক্ষাতকার বলেন সার, কিটনাষক, চড়া দামের কারনে ফসল উৎপাদন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। তাছাড়া নিত্যপন্য সামগ্রীর দাম বৃদ্ধির ফলে হালচাষ ও দিনমুজুরী বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতি বছর চাষিদের উৎপাদনের লক্ষমাত্রা লক্ষে পৌছাতে গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত খরচের টাকা। এ ব্যাপারে শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার ডাক্তার কাজী নাজিব হাসান এক স্বাক্ষাতকারে জানান প্রতিবছরের তুলনায় শার্শা উপজেলায় আশানুরুপ ব্যোরো ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। কারন এ বছর প্রান্তিক কৃষদের মাঝে বিনামূল্যে মূল্যে বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। প্রাকৃতিক পরিবেশ অনুকুলে থাকলে সাধারণ প্রান্তিক চাষিরা তাদের ক্ষতি অনেকটাই পুষিয়ে নিতে পারবে। বিগত আমন ফসল অতি বর্ষনে পানিতে নিমজ্জিত হলেও বর্তমানে ব্যোরো ধান ঘরে তুলতে পারলেই খুশিতে আত্মহারা চাষিরা। শার্শা উপজেলা ব্যোর ধান উৎপাদনের যশোর জেলার মধ্যে অন্যতম। যা শার্শা ইউপজেলার চাহিদা মিটিয়ে অন্য জেলায় রপ্তানী করা হয়।

১১ বার ভিউ হয়েছে
0Shares

COMMENTS