বুধবার- ২২শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -৮ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
জিয়াউর রহমান একটা জটিল অবস্থা বাংলাদেশে তৈরী করতে চেয়েছিল — নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি

জিয়াউর রহমান একটা জটিল অবস্থা বাংলাদেশে তৈরী করতে চেয়েছিল — নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি

শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড। আমাদের শিক্ষা যদি সঠিকভাবে আমরা এগিয়ে নিতে না পারি, তাহলে একটি দেশ কখনও মাথা উঁচু করে দাড়াতে পারেনা। এই যে দৃষ্টি ভঙ্গি, এটা চিন্তা করেই কিন্তু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী হওয়ার পর তিনি যেমন আমাদেরকে একটি শাষণতন্ত্র দিয়েছিলেন, যেই শাষণতন্ত্রের ভিত্তিতে বাংলাদেশ পরিচালিত হবে, তেমনিভাবে তিনি বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা কি হবে, যে আমাদের বিখ্যাত বিজ্ঞানী ড. কুদরত ই খোদাকে দিয়ে একটি শিক্ষা কমিশন গঠন করেছিলেন এবং এই শিক্ষা কমিশনের রিপোর্ট সরকারের কাছে দেয়া হয়েছিল, কিন্তু সেটা আর বাস্তবায়ন হয় নাই, আলোর মুখ দেখে নাই। কারণ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কে স্বপরিবারে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আজকের শিশুরা, আজকের ছাত্ররা সেই নির্মমতার কথা হয়তো সেভাবে জানে না। এই নির্মম হত্যাকান্ড একজন ব্যক্তি কিংবা একটি পারিবারিক হত্যাকান্ড নয়। এই হত্যাকান্ড একটি দেশকে হত্যা করার সুগভীর ষড়যন্ত্র ছিল। আমাদের মুক্তিযদ্ধ ছিল আমাদের গর্ব, আমাদের অহংকার। এই মুক্তিযুদ্দের মধ্য দিয়ে আমরা সকল ধর্ম বর্ণের মানুষ পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করেছিলাম। একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণ হবে, সেই মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে একটি সোনার বাংলা হবে, যেই বাংলাদেশ সকলে মিলে একটি মানসম্পন্ন জাতিতে পরিণত হবে। বিশ্ব ভূখন্ডে মাথা উঁচু করে দাড়াবে, এটাইতো ছিল আমাদের স্বপ্ন। ৭৫ এর ১৫ আগস্টে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কে হত্যা করার মধ্য দিয়ে আমরা দেখলাম একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে যারা আমাদের গণহত্যা সংঘটিত করেছে, মা-বোনের ইজ্জত লুন্ঠন করেছে, তাদের বিচারের জন্য যে দালাল আইন করা হয়েছিল সেই দালাল আইন বাতিল করে দেয়া হলো এবং ঐ দালালদেরকে ঐ অপরাধীদেরকে রাজনীতিতে পূণর্বাসিত করা হলো। পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর খূনিদের বিচার করা যাবে না সংবিধানের মধ্যে ইনডেমনিটি এ্যাক্ট ঢুকিয়ে দেয়া হলো। এর মধ্য দিয়ে একটি গর্বিত জাতির গর্বিত যে ইতিহাস সেই ইতিহাসকে ভূলন্ঠিত করা হলো, ক্ষমতায় কুক্ষিগত করে থাকার জন্য। আমার যে যুবকেরা, যে তরুণেরা ঐ পাক হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করেছিল, সেই তরুণদের হাতে মাদক এবং অস্ত্র তুলে দিয়ে বাংলাদেশের সব সম্ভাবনাকে ধ্বংস করে দেয়া হলো। আমাদের মেধাবী ছাত্রদের হাতে অস্ত্র তুলে দেয়া হলো, অর্থ তুলে দেয়া হলো। এইভাবে বাংলাদেশের তরুণ এবং শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধীরে ধীরে ধ্বংস করে দেয়া হলো। এই মাদক এবং অস্ত্রের রুপকার হলো বঙ্গবন্ধুর খুনি জিয়াউর রহমান। আপনাদের মনে আছে তিনি বলেছিলেন, “রাজনীতি আমি জটিল করে দিবো, রাজনীতিবীদদের জন্য”। রাজনীতি যদি জটিল হয়ে যায়, কেমন হয়? আমরা যারা গ্রামের মানুষ, যেই মানুষগুলো একটু বেশি প্যাঁচ দেয়, আমরা গ্রামের ভাষায় সেই মানুষকে বলি, এই মানুষটা একটা জটিল মানুষ। আমরা বলি এর মাথায় এত প্যাঁচ, এটা খোলা যায় না। এইরকম জিয়াউর রহমান একটি জটিল অবস্থা বাংলাদেশে তৈরী করতে চেয়েছিল। কি একটি জটিল অবস্থা বাংলাদেশে তৈরী করতে কিছু মুক্তিযোদ্ধা, কিছু রাজাকার, কিছু খুনি, কিছু বামপন্থি, কিছু ডানপন্থি, নিয়ে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করলেন। তাদের কাজই হলো বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে উল্টোদিকে ঘুরিয়ে দেয়া। এইভাবে বাংলাদেশকে একটা প্রকৃত জায়গায় না নিয়ে একটা বিকৃত জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এই ধারাবাহিকতা একুশ বছর যাবৎ বজায় রয়েছে। এই ধারাবাহিকতার মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ যুদ্ধ করেছে।
আমরা বলেছিলাম, এই বাংলাদেশকে সোনার বাংলা গড়বো। এই বাংলাদেশকে শিক্ষিত জাতি হিসেবে গড়বো। আমরা বলেছিলাম এই বাংলাদেশে ক্ষুধা দারিদ্র থাকবে না। আমরা বলেছিলাম এই বাংলাদেশে মঙ্গা থাকবে না, খালি গায়ে থাকবে না। আমরা বলেছিলাম বাংলাদেশের প্রত্যেকটি শিশু স্কুলে যাবে, শিক্ষা আমার অধিকার। আজকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই ফান্ডামেন্টাল লাইফ বাংলাদেশে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ প্রতিষ্ঠা করেছে। আজকে বাংলাদেশে খাদ্যের কোন অভাব নাই, বিনা কাপড়ে কেউ চলাফেরা করে না, প্রতিটা শিশু স্কুলে যায়, আমাদের দোড়গোড়ায় স্বাস্থ্য ব্যবস্থা চলে গেছে, ভূমি এবং গৃহ প্রদানের মধ্য দিয়ে গৃহহীন এবং ভূমিহীনদের পূণর্বাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে, বছরের প্রথম দিন আমাদের শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে বই পায়, উপবৃত্তি মোবাইলের মাধ্যমে পৌছে যাচ্ছে। বাংলাদেশে মাত্র কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ছিল, আজকে বাংলাদেশে দেড়শটি বিশ্ববিদ্যালয় শেখ হাসিনা প্রতিষ্ঠা করেছে। প্রত্যেকটি উপজেলায় একটি করে কলেজ একটি করে মাধ্যমিক বিদ্যালয় শেখ হাসিনা সরকারি করেছে। বাংলাদেশের ৩৭ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়কে একইসাথে সরকারিকরণ করেছে। এই ব্যবস্থা ৭৫ পরবর্তী কোন সরকার একুশ বছরে করে নাই, সেটা শেখ হাসিনা করেছে। আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন হয়েছে। দেশকে স্বয়ং সম্পূর্ণ করতে বিভিন্ন উন্নয়নমূখী কর্মকান্ড পরিচালিত হচ্ছে। গর্বের পদ্মা সেতু আগামী মাসে উদ্বোধন করা হবে।
শনিবার বিকেলে বিরলের রামপুর উচ্চ বিদ্যালয় ও কানাইবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৪ তলা ভিত্তি বিশিষ্ট ১ তলা একাডেমিক ভবন নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্তরের শুভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি এসব কথা বলেন।
রামপুর ইচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক রমা কান্ত রায় এর সভাপতিত্বে ভিত্তি প্রস্তরের উদ্বোধন শেষে সূধী সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেব উপস্থিত ছিলেন জেলা শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরে নির্বাহী প্রকৌশলী এ এস এম শাহিনুর ইসলাম, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোছাঃ আফছানা কাওছার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুজন সরকার, উপজেলা আওয়ামী লগের সভাপতি ও পৌর মেয়র আলহাজ্ব সুবজার সিদ্দিক সাগর, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুকিল চন্দ্র রায়। এর আগে প্রধান অতিথি ৪ নং শহরগ্রাম ইউনিয়নের নওপাড়া গ্রামে স্বর্গীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা অমল চন্দ্র রায়ের বিদেহী আত্মার সৎ গতি ও শান্তি কামনার্থে আদ্যশ্রাদ্ধ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ এবং পরে উপজলা পরিষদ চত্ত্বরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃক স্থানীয় কৃষকদের মাঝে কম্বাইন হারভেস্টর বিতরণ, বিরল মডেল সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্ণামেন্ট বালক (অনুর্দ্ধ-১৭) এর চুড়ান্ত খেলার পুরষ্কার বিতরণ এবং শ্রী শ্রী কান্তজিউ মন্দিরে মহানামযজ্ঞ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন।
৪৬ বার ভিউ হয়েছে
0Shares