শনিবার- ২৯শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৫ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শার্শায় গরুর পক্স ও খুরা রোগ ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়েছে : ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে খামারীসহ সাধারন মানুষ

শার্শায় গরুর পক্স ও খুরা রোগ ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়েছে : ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে খামারীসহ সাধারন মানুষ

শার্শা (যশোর) সংবাদদাতা : যশোরের শার্শার প্রতিটি গ্রামে গৃহপালিত পশুর মড়ক দেখা দিয়েছে। যে কারনে প্রতিদিন কোন না কোন গ্রামে ব্যাপক হারে গরু/ ছাগলের মৃত্যু হচ্ছে। খোজ খবর নিয়ে জানা গেছে বিশেষ ভাবে পক্স ও খুরা রোগে আক্রান্ত গরুর মৃত্যু হচ্ছে বেশি। ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে খামারীসহ সাধারন মানুষ।

শার্শা উপজেলার একাধিক ব্যাক্তি জানান, তাদের পোষা গরুর গায়ে গোলাকৃতি পক্স দেখা দিয়ে গরুর সারা গায়ে ক্ষত হয়ে ঘা হচ্ছে। এ সময় তারা গ্রামের কোহাক(হাতুড়ে) ডাক্তার দিয়ে হাজার হাজার টাকা খরচ করে চিকিৎসা দিচ্ছে। তার পরও আক্রান্ত গরু অসুস্থ্য হয়ে কিছুই খাচ্ছে না। কিছু দিন পর আক্রান্ত গরু মারা যাচ্ছে। বেশি ভাগ মৃত ঝুকিতে পড়ছে বাচ্ছা গরু ও গাভী। এ ছাড়া শার্শায় দেখা দিয়েছে খুরা রোগ। খুরা রোগে মরছে গরু। খুরা রোগে আক্রান্ত গরু গ্রামের কোহাক(হাতুড়ে) ডাক্তারা বিভিন্ন ভাবে চিকিৎসা দিলেও নিরাময় হচ্ছে না। এজন্য অনেক খামারী ও সাধারন মানুষ খুরা রোগে আক্রান্ত বড় বড় গরু স্বল্প মুল্যে মাংশ ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছে। আক্রান্ত গরু অল্প মুল্যে ক্রয় করে মাংশ ব্যবসায়ীরা কোন ডাক্তারী পরীক্ষা ছাড়াই রাতের আধারে এসব গরু জবাই করে মাংশ বিক্রি করছে। এমন ঘটনা সারা শার্শায় ঘটলেও দেখার কেউ নেই। নেই কোন প্রতিকার। যে কারনে অসুস্থ্য গরুর মাংশ খেয়ে অসুস্থ্য বা মারাত্বক ঝুকিতে সাধারন মানুষ। বিষয়টি প্রশাসনের দৃষ্টি প্রয়োজন।

শার্শা উপজেলা প্রানী সম্পদ অফিস নাভারন পশু হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, শার্শা উপজেলায় গরুর খামার রয়েছে প্রায় ৯৯৮৫, ছাগল ১০৮৩০, ভেড়া ৫৫ টি। জানাগেছে, অধিকাংশ খামারে গরু/ ছাগরের আক্রান্ত হয়েছে। মারাও গেছে অনেক খামারের গরু। উলাশী গ্রামের খামারি আল আমিন বলেন দুই দিনে তার দুটি গাভী মারা গেছে। যার বাজার মুল্য প্রায় দেড় লক্ষ টাকা।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে, শার্শা উপজেলা প্রানী সম্পদ অফিস নাভারন পশু হাসপাতাল এর প্রাণি সম্পদ সম্প্রসারন কর্মকর্তা ডাক্তার রুবাইয়াত ফেরদৌস বলেন, শার্শা উপজেলার অনেক গ্রামে গরু ছাগলের পক্স, খরা রোগ সহ বিভিন্ন রোগ বালাই হচ্ছে। যার মুল কারন সাধারন মানুষ বা খামারীদের অসচেতনতা। তিনি বলেন অনেক খামারীরা স্থানীয় কোহাক (হাতুড়ি) ডাক্তার দিয়ে তাদের পশু চিকিৎসা করান। যার অধিকাংশ চিকিৎসা ভুল। এ জন্য ভুল চিকিৎসায় অনেক গরু ছাগল মারা যায়।

ডাক্তার রুবাইয়াত ফেরদৌস আরও বলেন, গত ৩ মাসে প্রায় শার্শা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে প্রায় ১০/১২ হাজার গরু,ছাগরৈর বিভিন্ন রোগের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। খামারী সহ সাধারন মানুষকে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করাসহ মাঠ দিবস পালন করা হয়েছে। শার্শায় পশু চিকিৎসায় সচেতনতা সৃষ্টির জন্য ১৬টি উঠান বৈঠক করা হয়েছে। তার পরও এসব সাধারন মানুষ ও খামারীরা হাসপাতালে তাদের পশুকে না এনে স্থানীয় কোহাক ডাক্তার দিয়ে পশু চিকিৎসা করান। এর পর যখন দেখেন পশু মরার পথে তখন পশুর মালিকেরা হাসপাতালের স্বরনাপন্ন হন। তিনি বলেন মানুষের মত পশু যখন অসুস্থ্য হবে তখনি অসুস্থ্য পশুকে ডাক্তারের কাছে হাপাতালে আনতে হবে।

শার্শা উপজেলা প্রানী সম্পদ অফিস নাভারন পশু হাসপাতাল এর প্রাণি সম্পদ সম্প্রসারন কর্মকর্তা ডাক্তার রুবাইয়াত ফেরদৌস আরও বলেন শার্শা উপজেলায় ঘরে ঘরে পশু চিকিৎসার জন্য কোহাক(হাতুড়ি) ডাক্তার নাম ধারীদের অভিযানের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। তা না হলে ভুল চিকিৎসায় শার্শা উপজেলায় অনেক গৃহপালিত পশুর মৃত্যু হবে। ক্ষতিগ্রস্থ্য হবে সাধারন মানুষ।

৭৯ বার ভিউ হয়েছে
0Shares