শুক্রবার- ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
আত্রাইয়ে স্ত্রীর সাথে মেম্বারের বিয়ে প্রতারণা, প্রবাসীর ১৮লাখ টাকা আত্নসাৎ

আত্রাইয়ে স্ত্রীর সাথে মেম্বারের বিয়ে প্রতারণা, প্রবাসীর ১৮লাখ টাকা আত্নসাৎ

নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর আত্রাই উপজেলার ভোঁপাড়া গ্রামের ৩৫বছর বয়সী প্রবাসী যুবক শফিকুল ইসলাম। ২০০৯সালে একই গ্রামের মঞ্জিল শেখের মেয়ে মুন্নি আক্তার ( ২৫) এর সাথে বিয়ে হয়। তাদের ঘরে ৮বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। ২০১০সালে কাজের সন্ধানে দুবাই পারি জমান। বিদেশ থাকাকালীন সময় মাঝে মাঝে বাড়িতে আসেন। গত ২০১৪সালে আবার মালয়েশিয়াতে চলে যান কাজের সন্ধানে। বেশ কয়েক বছর ভালোই চলছিল তাদের সংসার। এর মাঝে স্থানীয় ইউপি সদস্য বিল্পব আকন্দের নজর পড়ে মুন্নি ও তার টাকার দিকে। মুন্নিকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুলে শফিকুলের পাঠানো অর্থ আত্নসাৎ করেন । চলতি মাসের ৫তারিখে শফিকুল জানতে পারেন মুন্নির সাথে একই গ্রামের ইউপি সদস্য বিল্পব আকন্দের সাথে ঘর-সংসার করছেন। এর পর শফিকুল ইসলাম নিরুপায় হয়ে ছুটি নিয়ে চলতি মাসের ২২তারিখে দেশে এসে তার শ্বশুর বাড়ি গেলে তাকে বাড়িতে প্রবেশ করতে বাঁধা দেওয়া হয় এবং মুন্নি ও তার পরিবারের সদস্যরা বলে তোমাকে তালাক দিয়ে বিল্পবকে বিয়ে হয়েছে। কিন্তু কাজী অফিস বা আদালত কৃর্তক কোন তালাকনামা দেখাতে পারেননি। স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের বিষয়টি জানানো হলেও ইউপি সদস্য প্রভাবশালী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে চাচ্ছেন কেউ। এর মাঝেই শফিকুলের পাঠানো প্রায় ১৮লাখ টাকা ও দুই ভরি স্বর্ণ হাতিয়ে নিয়েছেন মুন্নি ও বিল্পব। বর্তমানে নিস্ব অবস্থায় সুষ্ঠ বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন প্রবাসী শফিকুল ইসলাম।

কথা হলে প্রবাসী শফিকুল ইসলাম বলেন, আমাকে যে তালাক দিয়েছে তার কোন বৈধ কাগজপত্র নাই। তালাক দিতে হলে কাজী অফিসে বা কোর্টের মাধ্যমে তালাক দিতে হয় সেটা করা হয়নি। এছাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের চেয়ারম্যানের কাছে তালাকনামার কপি যাবে। কিন্তু সেটাও করা হয়নি বা আমাকে জানানোও হয়নি।
তাহলে আমাকে কিভাবে তালাক দিলো। আমি বাড়ি আসার পর একটি এফিডেভিট করা কাগজ আমার কাছে পৌঁছানো হয়েছে। সেখানে লেখা আছে মুন্নি ও বিল্পব বিয়ে করেছেন। তালাক না দিয়েই কিভাবে বিয়ে হয়। বিদেশ থাকাকালীন আমি প্রতি মাসেই মুন্নির আত্রাই শাখার ইসলামী ব্যাংক একাউন্ট নাম্বারে টাকা পাঠিয়েছি। এ পর্যন্ত প্রায় ১৮লাখ টাকা পাঠিয়েছি। সেই টাকাগুলো মুন্নি ও বিল্পব আত্নসাৎ করে আমাকে পথে বসিয়েছে।

শফিকুল আরও বলেন, তারা যে বিয়ের মিথ্যা ডকুমেন্ট দেখাছে সেটা চলতি মাসের ১তারিখে বিয়ে করেছেন বলে সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সে আমার বউ হিসেবে ঘর-সংসার করার অভিনয় করে অর্থ আত্নসাৎ করেছে। একজন জনপ্রতিনিধি হয়েছে আমার সুখের সংসার নষ্ট করেছে, আমার বাচ্চার ভবিষৎ নষ্ট করেছে। আমি এর সুষ্ঠ বিচার চাই। প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে থানায়ও অভিযোগ করারও সাহস পাচ্ছিনা আর সুষ্ঠ বিচারও পাচ্ছিনা।

মুন্নির বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। এর পর তার মা ছালেয়া বেগম এর সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমার মেয়ে আর শফিকুলের সাথে ঘর সংসার করবেনা। শফিকুলকে তো তালাক দিয়েছে। তালাক দিলে তালাকনামা তো নাই, তাহলে কিভাবে তালাক দেওয়া হলো, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন উত্তর না দিয়ে ফোনের সংযোগ কেটে দেয়।

অভিযুক্ত ইউপি সদস্য বিল্পব আকন্দের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, মুন্নি আর শফিকুলের বউ নয়, আমার বউ। আমি তাকে বিয়ে করেছি। তালাকনামার কাগজপত্র দেখতে চাইলে তিনি উত্তেজিত হয়ে বলেন, আপনাকে সব কিছু দেখানোর প্রয়োজন মনে করছিনা বলে তিনি ফোনের সংযোগ কেটে দেয়।

ভোঁপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দিন মন্ডল বলেন, আমি জানি বিল্পব ও মুন্নির বিয়ে হয়েছে। তবে কতটুকু আইন মেনে বিয়ে করেছে তা জানা নেই। তবে শফিকুল মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছেন। মঙ্গলবার (২২আগষ্ট ) রাতে সবাইকে নিয়ে বসা হলে সুরাহা হয়নি। প্রয়োজনে আবার বসে সুরাহা করা হবে।

৩৫ বার ভিউ হয়েছে
0Shares