শনিবার- ২৯শে জুন, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৫ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
পার্বতীপুরে চল্লিশ দিনের শ্রমিক দিয়ে কাবিটার রাস্তায় মাটি ভরাট\ প্রকল্পের টাকা লুটপাট

পার্বতীপুরে চল্লিশ দিনের শ্রমিক দিয়ে কাবিটার রাস্তায় মাটি ভরাট\ প্রকল্পের টাকা লুটপাট

আমজাদ হোসেন, পার্বতীপুর ঃ পার্বতীপুরে হতদরিদ্রদের কর্মসংস্থান কর্মসূচির চল্লিশ দিনের শ্রমিক দিয়ে কাবিটার রাস্তায় মাটি ভরাট করে প্রকল্পের টাকা লুটপাট করার অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি প্রকল্প বাস্তাবায়ন কর্মকর্তাকে বারবার জানানোর পরেও সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের সভাপতির বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি বলে অভিযোগ রয়েছে।

জানা যায় ২০২২-২০২৩ অর্থ বছরে ত্রাণ ও পুণর্বাসন মন্ত্রনালয় পার্বতীপুর উপজেলায় ১০টি ইউনিয়নে কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচি (কাবিখা) ও কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) প্রকল্প বরাদ্ধ দেয়া হয়। উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে প্রকল্প কতটি এবং প্রকল্পগুলোর বিপরীতে কত মেট্রেক টন চাল বা কত লাখ টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে এ রকম তথ্য পার্বতীপুর প্রকল্প বাস্ত বায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে পাওয়া যায়নি। তথ্য অধিকার আইনে প্রকল্পগুলোর তথ্য দেয়ার বিধান থাকলেও পার্বতীপুরে তা মানা হয়চ্ছে না। পার্বতীপুর উপজেলায় ১০টি ইউনিয়নে চলমান প্রকল্পের সংস্থা কত এবং প্রকল্পের বিপরীতে কতলাখ টাকা বা কি পরিমান চাল বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে তা বলা মুশকিল। প্রকল্প কর্মকর্তায় কার্যালয়ে তথ্য চাইলে বলা হয় তথ্য দেয়া যাবেনা উপরের নির্দেশ রয়েছে। পার্বতীপুরে ১০টি ইউনিয়নে প্রায় একই সময়ে কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসুচি (কাবিখা) ও কাজের বিনিময়ে টাকা(কাবিটা) এবং হতদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসুচির চল্লিশ দিনের কর্মসুচি শুরু হয়। কাবিখা/কাবিটা ও হতদবিদ্রদের জন্য চল্লিশ দিনের কর্মসংস্থান কর্মসুচি আলাদা আলাদা প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। প্রকল্পগুলোর সমানে সাইনবোর্ড লাগার নিয়ম থাকলেও কোন প্রকল্পেই সাইনবোর্ড লাগানো হয়নি। ফলে প্রকল্প দেখে বুঝা যায় না কোনটি কোন প্রকল্পের কাজ। এ সুযোগে কাবিখা ও কাবিটা প্রকল্পের সভাপতিরা চল্লিশ দিনের শ্রমিক দিয়ে রাসÍায় মাটি ভরাট করে প্রকল্পের বরাদ্ধকৃত টাকা লুটপাট করায় বঞ্চিত হচ্ছে প্রকল্প থেকে সুবিধা ভোগি অসহায় মানুষেরা। অপরদিকে চন্ডিপুর, হাবড়া ও হরিরামপুর ইউনিয়নে এ রকম অনিয়মের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা যায়নি।

এদিকে উপজেলার পলাশবাড়ি ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের চকবাজার পাকা রাস্তা হইতে বালাপাড়া ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তার সংস্কার ও মাটি ভরাটের জন্য কাজের বিনিময়ে টাকা(কাবিটা) অধিনে ৬ লক্ষ টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়। প্রকল্প সভাপতি ইউপি সদস্য রিয়াজ মাহামুদ ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের চল্লিশ দিনের শ্রমিক দিয়ে ১৫ দিন ধরে কাবিটার প্রকল্পের রাস্তায় মাটি ভরাট কাজ শেষ করে। এ ঘটনায় ৪ জুন একই ওয়ার্ডের চকবোয়ালিয় গ্রামের আব্দুল হাই সরকার প্রকল্প চেয়ারম্যান ইউপি সদস্য রিয়াজ মাহামুদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পার্বতীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। উপজেলা প্রশাসন এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত প্রকল্প সভাপতির বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসি চল্লিশ দিনের প্রকল্পের শ্রমিক দিয়ে কাবিটা’র রাস্তায় মাটি ভরাট করে প্রকল্পের টাকা আতœসাতকারি প্রকল্প সভাপতির বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছেন।

প্রকল্প সভাপতি ও ইউপি সদস্য রিয়াজ মাহমুদের সাথে মোবাইল (০১৭৪৪-৩৮৩৩২০) ফোনে মতামত জানার জন্য যোগাযোগের চেষ্ঠা করে মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তার মতামত জানা সম্ভব হয়নি।

এব্যাপারে উপজেলা জেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ ইসমাইল হোসেন এর সাথে কথা হলে তিনি লিখিত অফিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন তদন্তের জন্য টিওকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

ঘটনার ব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শফিউল হক এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ হয়েছে কি না আমার জানা নাই। তবে কাবিটার রাস্তায় চল্লিশ দিনের শ্রমিক দিয়ে মাটি ভরাটের কাজ হচ্ছে এ রকম তথ্য মোবাইল ফোনে জানতে পেরে বিষয়টি দেখার জন্য লোক পাঠিয়েছিলাম।

২৭৩ বার ভিউ হয়েছে
0Shares