মঙ্গলবার- ২১শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
তানোরে ডাসবিনের মেয়াদ উত্তীর্ন ভিজে গলা স্যালাইনে ডায়রিয়া রোগীর চিকিৎসা 

তানোরে ডাসবিনের মেয়াদ উত্তীর্ন ভিজে গলা স্যালাইনে ডায়রিয়া রোগীর চিকিৎসা 

তানোর প্রতিনিধি: বেশকিছু দিন ধরে ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত সংখ্যালুঘু মহিলা রানু, চরম অসহায় দরিদ্র,  ডায়রিয়া রোগের চিকিৎসা নিতে যান রাজশাহীর তানোর উপজেলার কামারগাঁ ইউনিয়ন(ইউপির) উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে। কিন্তু করত্যরত স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ফার্মাসিষ্ট ফারজানা  তাকে ডাসবিনের মেয়াদ না থাকা ভিজে গলা স্যালাইন দেন। গত বুধবার সকাল ১১ টার দিকে কামারগাঁ ইউপি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে ঘটে এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনা। এঘটনার একটি ভিডিও ফেসবুকে ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে
জানা গেছে, রানু পড়া লিখা কিছুই জানেন না। বিনা টাকায় সরকারী স্যালাইন পেয়ে বাড়িতে যেতে লাগেন। কিন্তু পথে এক ব্যক্তি হাতে এধরনের স্যালাইন দেখে জানান মেয়াদ নাই, এস্যালাইন কোনভাবে খাওয়া যাবে না। খেলে রোগ আরো বাড়বে। দ্রুত ফেরত দিয়ে আসেন।
মলিন মুখে পুনরায় আসেন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। কিন্তু কর্তব্যরত ওই ফার্মাসিষ্ট ধমক দিয়ে নানান ধরনের আজেবাজে কথাবার্তা বলেন। এরই ফাকে স্থানীয় লোকজন জড়ো হয়ে চিকিৎসকের উপর চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন, আর বলেন এভাবেই চলে সরকারী স্বাস্থ্য কেন্দ্র গুলো। এটাই চিকিৎসা ব্যবস্থার অন্যতম সফলতা। ফলে মানুষের জীবন নিয়ে খেলা করা এসব কর্মকর্তা দের আইনের আওতায় এনে চরম শাস্তি দেওয়া প্রয়োজন।
সরেজমিনে বৃহস্পতিবার দেখা যায়, কামারগাঁ ইউনিয়ন পরিষদে যাওয়ার আগেই ইউপি উপস্বস্থ্য কেন্দ্রটি। মুল গেটে তালা মারা। বিশাল ভবন। নেই কোন চিকিৎসক। তখন প্রায় দুপুর ১২ টা বাজে। জরাজীর্ণ এক অবহেলিত কেন্দ্রটি। দুর থেকে দেখে কেউ বলবে না এটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র। হাত ধোয়ার সাদা টাইলস লালচে কালার, মুল কেচি গেটের উপরে ঘাস আবর্জনায় ভরা। জানালা দিয়ে ভিতরেও একই অবস্থা। যাকে বলে উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রটি বড় এক রোগী। তাকেই আগে চিকিৎসা দেওয়া খুবই প্রয়োজন। অবশ্য সবকিছু ডিজিটাল তো সমস্যা খুব একটা নাই। কারন তথ্য বাবা, দরবেশ বাবারা আছেন তো।
চলতি মাসের গত ১৯ অক্টোবর বুধবার সকাল ১১ টার দিকে উপজেলার কামারগাঁ শ্রীখন্ডা গ্রামের বিপুল চন্দ্রের স্ত্রী রানু কয়েকদিন ধরে ডায়রিয়া রোগে আক্রান্ত। তিনি কামারগাঁ ইউপির উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে গত বুধবার সকালে আসেন। কিছুক্ষন বসে থাকার পর ডাক পায় রানু।
রানু জানান, কয়েকদিন ধরে ডায়রিয়া। বুধবার সকাল থেকে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আসা পর্যন্ত ছয় সাত বার পায়খানা ও বমন হয়। ধাপ মারতি পারছিনা, শরীর চরম দূর্বল। আমরা খুবই গরীব কষ্টকরে শ্রীখন্ডা থেকে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে আসার পর একজন মহিলা এসব স্যালাইন দেন, সেটা নিয়ে বাড়িতে যাওয়ার সময় একজন এসব স্যালাইন দেখে বলে মেয়াদ নেই, ভিজে গলা, এসব খেলে ডায়রিয়া বাড়বে কমবে না। আমি আবার স্বস্থ্য কেন্দ্রে আসি। এসে যে মহিলা আমাকে স্যালাইন দিয়েছে তাকে বলা মাত্রই আমার উপর রেগে যান। ওই ব্যক্তি যদি আমাকে মেয়াদ নাই খাওয়া যাবেনা ইত্যাদি ইত্যাদি না বললে আমি এসব খেতাম। তাহলে এরা মানুষের জীবন নিয়ে খেলছে। এভাবে কত জনকে তারা দিয়েছেন কে জানে। আমি এর দৃষ্টান্ত মুলুক শাস্তি চায়।
মেডিকেলের এক চিকিৎসক জানান, ফারজানা ফার্মাসিষ্ট, তিনি যেটা করেছেন সেটা অনৈতিক, অমানুবিক। তিনি শুধু গর্ভবতীদের চেকআপ করতে পারবেন, কোন ঔষুধ দিতে পারবে না।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভারপ্রাপ্ত টিএইচও ডাক্তার আব্দুল হাকিমের মোবাইলে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও রিসিভ করেন নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পংকজ চন্দ্র দেবনাথ জানান, বিষটি নিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
৩৯ বার ভিউ হয়েছে
0Shares