শুক্রবার- ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -২০শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকারের টানা ১৩ বছর

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকারের টানা ১৩ বছর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে টানা ১৩ বছর ক্ষমতায় আওয়ামী লীগ। এই সরকারের বর্তমান মেয়াদের তিন বছর পূর্তি আজ। ১৩ বছরের ঈর্ষণীয় সাফল্যের সঙ্গে বাড়ছে চ্যালেঞ্জও। সফলতার সঙ্গে দুষ্কৃতি মহলও নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্তে। তার পরও বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা থেমে যাননি। একের পর এক উন্নয়নের মহাযজ্ঞ সাফল্য এনে দিচ্ছেন তিনি।

এই ১৩ বছরে খাদ্য নিরাপত্তা, শান্তি চুক্তি, সমুদ্র বিজয়, শিক্ষা, স্বাস্থ্য খাতের অগ্রগতি, শতভাগ বিদ্যুাতায়ন, ডিজিটাল পদ্ধতির ব্যবহার, নারীর ক্ষমতায়ন, অর্থনৈতিক উন্নতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন, পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, কর্ণফুলী টানেলসহ মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন উন্নয়নের ক্ষেত্রে ঈর্ষণীয় সাফল্য আওয়ামী লীগ সরকারপ্রধানের হাতেই।

অথচ ২০০৮ সালের আগে দেশ ছিল তীব্র বিদ্যুত্ সংকটে। ছিল বেকারত্বসহ নানা সমস্যা। ডিজিটাল বাংলাদেশ ছিল বহুদূরের কথা। তত্কালীন সরকারি দলের নেতাকর্মী তথা শাসকগোষ্ঠী ছিল নিজেদের ভাগ্য বদল নিয়ে। দুর্নীতির সূচকে বিশ্বে টানা একাধিকবার শীর্ষে ছিল বাংলাদেশ।
দেশের এমন অবস্থার মধ্যে ২০০৮ সালের শেষে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। দেশ পরিচালনায় জনগণের ম্যান্ডেড পায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। সমস্যা জর্জরিত দেশের হাল ধরেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কন্যা ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। সেই ২০০৯ সাল থেকে শুরু। ২০২২ সালে এসে আকাশচুম্বী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা আর অগ্রগতির নতুন মাইলফলক সৃষ্টি করে সাফল্যের এক যুগ পূর্ণ করে বঙ্গবন্ধুকন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার। টানা তৃতীয় মেয়াদে জয়ী হওয়া বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের তিন বছর পূর্তি ও চতুর্থ বর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বর্তমানে গ্রামীণ অবকাঠামো রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট, স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসা, মেডিক্যাল কলেজ, মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, জেলা-উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কমিউনিটি ক্লিনিকসহ নানামুখী সেবা পৌঁছে গেছে মানুষের দোরগোড়ায়। বাস্তবায়ন হচ্ছে পদ্মা সেতু ও মেট্রোরেলসহ বড় বড় মেগা প্রকল্প। বঙ্গবন্ধু কন্যার দূরদর্শী নেতৃত্বে গঠন হয়েছে দুর্নীতি, চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসমুক্ত দেশ। আওয়ামী লীগ সরকারের এক যুগের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার উন্নয়ন-অগ্রযাত্রাকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নযাত্রা হিসেবে দেখছে ক্ষমতাসীন দলটি। ২০০৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর নবম জাতীয় নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয়ের পর ২০০৯ সালের ৬ ডিসেম্বর যাত্রা শুরু করে এ সরকার। এরপর ২০১৪ এবং ২০১৮ সালে জয়ের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় টানা ১৩ বছর পূর্ণ করেছে আওয়ামী লীগ সরকার। ২০০৮ সালের শেষে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘দিনবদলের সনদ’ নামে নির্বাচনী ইশতেহারে ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলটির ইশতেহারের স্লোগান ছিল ‘শান্তি গণতন্ত্র উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।’

এর আগে ২০০৮ সালে ১২ ডিসেম্বর ‘দিনবদলের সনদ’ শিরোনামে দলের নির্বাচনী ইশতেহার তুলে ধরেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। ওই ইশতেহারে ‘রূপকল্প ২০২১’ শিরোনামে বাংলাদেশের উন্নয়নে আওয়ামী লীগের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার কথা তুলে ধরা হয়েছিল, যার মধ্যে অন্যতম ছিল ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলা এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা। ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর মধ্যে এটা বাস্তবায়নই ছিল আওয়ামী লীগের প্রধান নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি। সেটিও বাস্তবায়ন করেছে বর্তমান সরকার। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় নির্বাচনে ২০০৮ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষিত বিষয়গুলোর অগ্রগতি তুলে ধরার পাশাপাশি ২১০০ সাল পর্যন্ত পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়েছে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে ১০০ বছর মেয়াদি ‘ডেল্টা প্ল্যান’।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও সচেতন জনগণ মনে করেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কথা রেখেছেন। গত ১৩ বছরে ঈর্ষণীয় সাফল্য কুড়িয়েছে সরকার। ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল পাচ্ছেন রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিক। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নাগরিক সেবা, মাথাপিছু আয়, হাতে হাতে মোবাইল ফোন আর ইন্টারনেটের বদৌলতে পাল্টে গেছে জীবনমান।

২০০৯ সালের ২৯ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে পাস হয়। এরপর যুদ্ধাপরাধের দায়ে অভিযুক্তদের বিচারের জন্য ২০১০ সালের ২৫ মার্চ ট্রাইব্যুনাল, আইনজীবী প্যানেল এবং তদন্ত সংস্থা গঠন করা হয়। ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পাঁচ খুনির ফাঁসি কার্যকর করা হয়। সর্বশেষ ২০২০ সালের ৭ এপ্রিল ক্যাপ্টেন (অবসরপ্রাপ্ত) আবদুল মাজেদকে গ্রেফতার করা হয়। ১২ এপ্রিল তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার, যুদ্ধাপরাধের বিচারের মতোই চ্যালেঞ্জ নিয়েই ছিটমহল সমস্যার সমাধান, সমুদ্র সীমানার বিরোধেরও নিষ্পত্তি করে বাংলাদেশকে অনন্য উচ্চতায় নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নিয়ে বিরোধ মীমাংসায় আন্তর্জাতিক সালিশ আদালতের এক রায়ে নতুন করে প্রায় সাড়ে ১৯ হাজার বর্গকিলোমিটার সমুদ্র এলাকা পায় বাংলাদেশ। এটা ছিল শেখ হাসিনার দূরদর্শিতার ফসল। এদিকে একটি ভাইরাস ঠেকাতে অভাবনীয় লকডাউনে জীবনযাত্রা থমকে যাওয়ার এমন দিন আর দেখেনি বাংলাদেশ; সে কারণে বড় একটা সময় ঘরবন্দি করে রাখার কোভিড মহামারীর দ্বিতীয় বছরে স্বাস্থ্য খাতই ছিল আলোচনায়, যার সর্বাগ্রে ছিল ডেল্টা, রেকর্ড সংক্রমণ, মৃত্যুর ভয়াবহতা আর টিকা। বেড়েছে সরকারের রফতানি আয় ও বৈদেশিক বিনিয়োগ। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ হিসাবে দেশের মাথাপিছু আয় এখন ২ হাজার ৫৫৪ ডলার। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে মাথাপিছু আয় ছিল ২ হাজার ২২৭ ডলার।

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরই পদ্মা সেতু নির্মাণকে অগ্রাধিকার মেগা প্রকল্প হিসেবে গ্রহণ করে শেখ হাসিনা সরকার। নানা ষড়যন্ত্র ও দেশ-বিদেশের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে নিজস্ব অর্থায়নেই পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের স্বপ্নের সেই পদ্মা সেতুর মূল কাঠামো দৃশ্যমান। চলছে রেল সংযোগের কাজও।

২০২২ চ্যালেঞ্জ: ২০২২ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে অন্তত চারটি বড় চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এগোতে হবে। মূল্যস্ফীতির লাগাম টানা এর মধ্যে অন্যতম। বাকি তিন চ্যালেঞ্জ হলো- আন্তর্জাতিক বাজারে মুদ্রা বিনিময় হার, সরকারের ভর্তুকিসংক্রান্ত নীতিনির্ধারণ ও আর্থিক খাতে সংস্কার। এ ছাড়া করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন নিয়ন্ত্রণ। নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে রাজনৈতিক সংলাপ শুরু করেছেন রাষ্ট্রপতি। কিন্তু শুরুতেই অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি ও সিপিবি সংলাপে না যাওয়ার ঘোষণা দেয়ায় এ উদ্যোগ বড় ধাক্কা খেয়েছে। সব দলের মতামতের ভিত্তিতে ইসি কমিশন গঠনও একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

মার্কিন নিষেধাজ্ঞা : গত বছরের শেষদিকে সবচেয়ে আলোচিত বিষয়গুলোর একটি ছিল বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত বিশেষ বাহিনী র্যাব এবং ওই প্রতিষ্ঠানের সাবেক ও বর্তমান ছয়জন কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ দপ্তরের নিষেধাজ্ঞা। যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দেয়ার ক্ষেত্রে র্যাবের বিরুদ্ধে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ আনে। সেই সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ না জানানো, মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ প্রকাশ বাংলাদেশের জন্য নেতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তকে একতরফা বলে বর্ণনা করা হয়েছে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে। কীভাবে এমন সিদ্ধান্ত এলে— এ প্রশ্ন তুলেছেন মন্ত্রীদের অনেকে। র্যাব এবং এর সাবেক ও বর্তমান ছয়জন কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বাংলাদেশে চলছে নানা আলোচনা।
২০১৩-১৪ জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতি দমন: বিএনপি-জামায়াত তথা ২০ দলীয় জোটের ডাকে কথিত অবরোধ ও হরতালে সারা দেশে শতাধিক সাধারণ মানুষকে পুড়িয়ে মারা হয়। শত শত দগ্ধ মানুষের চিত্কার ও তাদের স্বজনদের আহাজারিতে বিভিন্ন হাসপাতালের পরিবেশ শোকাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। বিভিন্ন অঞ্চলে বিএনপি-জামায়াতের পেট্রল বোমা হামলা ও নাশকতাকারীদের আইনিভাবে মোকাবিলা করা হয়েছে। তবে খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে চিকিত্সার দেয়ার ইস্যুতে বিএনপি আবারো মাঠে সক্রিয়। আন্দোলনের ঘোষণাও দিচ্ছে দলটি।

মুজিববর্ষ ও করোনা সংকট: এক যুগ ধরে রাষ্ট্র ক্ষমতায় বর্তমান সরকারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জের বছর ছিল সদ্য বিদায়ী ২০২১ সাল। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ঘিরে দেশব্যাপী উত্সবমুখর কর্মসূচি নেয়া হলেও বৈশ্বিক মহামারী করোনা সবকিছু থমকে দেয়। বড় ধরনের ধাক্কায় পড়ে সরকার। উত্সবের বছর পরিণত হয় আতঙ্ক আর হতাশায়। ২০২০ সালের শুরুতেই সারা বিশ্বসহ বাংলাদেশে যখন করোনা সংকটে নানা অনিশ্চয়তা তৈরি হয়, তখন তা মোকাবিলায় দ্রুত নানা পদক্ষেপ নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অর্থনীতি চাঙ্গা রাখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক লাখ ১২ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকার ২১টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেন। শেখ হাসিনার সফল নেতৃত্বের কারণেই ২০২১ সালেই কমে যায় করোনা সংক্রামণ। স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উপহার হিসেবে মুক্তিযোদ্ধাদের আবাসন সংকট নিরসনেরও উদ্যোগ নেয়া হয়। এ ছাড়া গৃহহীনদের ভূমি ও ঘর নির্মাণ তৈরির উদ্যোগ নেয় সরকার। ইতোমধ্যে লক্ষাধিক ঘর নির্মাণের পর হস্তান্তরও করে সরকার।

রোহিঙ্গা সংকট: মিয়ানমারের সামরিক জান্তার বর্বর নির্যাতনের শিকার হয়ে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট যেসব রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে সীমান্তে ভিড় করে, মানবিক কারণে তাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে কারণে প্রধানমন্ত্রী বিশ্বমানবতার বিবেক হিসেবেও প্রশংসা পেয়েছেন। নোয়াখালীর ভাসানচরে আধুনিক সুবিধাসংবলিত একটি সিটিও গড়ে তোলা হয়েছে। শরণার্থীদের সহায়তায় বিশ্বের বুকে এটি অনন্য দৃষ্টান্ত। চারপাশে শক্তিশালী বাঁধ নির্মাণ করে প্রায় ৩১ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে এক লাখ মানুষের আবাসনের জন্য এটি গড়ে তোলা হয়। ভাসানচরে আধুনিক সুযোগসংবলিত আবাসন ব্যবস্থার পাশাপাশি সাইক্লোন শেল্টার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, বাজার, মসজিদ, পুলিশ স্টেশন এবং ২৪ ঘণ্টা বিদ্যুত্ সরবরাহের ব্যবস্থা রয়েছে।

আগামী উন্নয়ন: আগামী দিনে পদ্মা সেতুর দুই পাড়ে সিঙ্গাপুরের আদলে শিল্পনগরী গড়ে তোলা, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পকে গ্রামভিত্তিক ক্ষুদ্র ও মাঝারি গুচ্ছশিল্প কাঠামোয় সংযুক্ত করা, ঢাকা ঘিরে এলিভেটেড রিংরোড এবং ইস্টার্ন বাইপাস নির্মাণ, ঢাকা-চট্টগ্রাম এক্সপ্রেসওয়ে এবং এক্সপ্রেসওয়ে রেললাইন নির্মাণ করা, চট্টগ্রাম, সিলেট, রাজশাহী, দিনাজপুর, পটুয়াখালী, খুলনা এবং কলকাতা পর্যন্ত বুলেট ট্রেন সার্ভিস সম্প্রসারণ করা, ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে থার্ড টার্মিনাল নির্মাণ, নতুন রাডার স্থাপন ও জেট ফুয়েল সরবরাহের জন্য পাইপলাইন নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা, বাগেরহাটে খানজাহান আলী বিমানবন্দর নির্মাণ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শেষ করা, কক্সবাজারে সুপিরিয়র বিমান অবতরণ ক্ষমতাসম্পন্ন বিমানবন্দর প্রতিষ্ঠা করা, ঢাকায় পাতাল রেল, মেট্রোরেল, সার্কুলার রেলপথ গড়ে তোলাসহ সরকারের বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

শেখ হাসিনার যত পুরস্কার : বাংলাদেশকে ঈর্ষান্বিত সাফল্য এনে দেয়ায় রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে শেখ হাসিনা কুড়িয়েছেন বেশকিছু আন্তর্জাতিক পুরস্কার। এর মধ্যে রয়েছে— ২০১৪ সালে শিক্ষা খাতের উন্নয়নের জন্য ইউনেস্কোর ‘ট্রি অব পিস’ সম্মাননা, ২০১৫ সালে দারিদ্র্য বিমোচনে ‘সাউথ সাউথ অ্যাওয়ার্ড’, পরিবেশ রক্ষা জাতিসংঘের ‘চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ’ পুরস্কার, আইসিটি খাতের উন্নয়নের জন্য ‘আইটিইউ অ্যাওয়ার্ড’, ২০১৬ সালে জাতিসংঘের ‘এজেন্ট অব চেঞ্জ অ্যাওয়ার্ড’, ‘প্লানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন’ পুরস্কার, ২০১৮ সালে নারীর ক্ষমতায়নের জন্য ‘গ্লোবাল উইমেন্স লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড এবং মানবতায় দৃষ্টান্ত দেখিয়ে ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ খেতাবে ভূষিত হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০২১ সালে জাতিসংঘের সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সল্যুশনস নেটওয়ার্ক (এসডিএসএন) দারিদ্র্য দূরীকরণ, পৃথিবীর সুরক্ষা ও সবার জন্য শান্তি-সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে উদ্যোগ গ্রহণের সর্বজনীন আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশের সঠিক পথে এগিয়ে নেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘এসডিজি অগ্রগতি পুরস্কার’ দেয়া হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলা : ২০০৯ সালে ঘূর্ণিঝড় ‘আইলা ও ‘মহাসেন’ ২০১৩ সালের ১৬ মে নোয়াখালী এবং চট্টগ্রাম উপকূলে আঘাত হানে। ঘূর্ণিঝড় ‘কোমেন’ ২০১৫ সালের ৩০ জুলাই চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে আঘাত হানে। ঘূর্ণিঝড় ‘রোয়ানু’ ২০১৬ সালের ২১ মে বাংলাদেশের উপকূল অঞ্চলে আঘাত হানে। ২০১৯ সালের ৩ মে বঙ্গপোসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র আঘাতে দেশে নয়জনের মৃত্যু হয়। প্রাণহানি কম হলেও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ছিল অনেক বেশি। তবে সরকার দক্ষতার সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ায়। সরকারের সহায়তার ফলে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ান ক্ষতিগ্রস্তরা।

১৭৯ বার ভিউ হয়েছে
0Shares