সোমবার- ১লা জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৭ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজশাহীতে সিআইডি’র হাতে লম্পট শিক্ষক আটক

এনায়েত উল্লাহ, রাজশাহী অফিস:

রাজশাহীতে ১০ বছরের কম বয়সি ৩০ জন স্কুলছাত্রের সঙ্গে বিকৃত যৌন নিপীড়নের অভিযোগে এক শিক্ষককে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। গ্রেফতারকৃতের নাম আব্দুল ওয়াকেল (৩৩)। শনিবার তাকে রাজশাহী মহানগরীর মতিহার থানাধীন ডাঁসমারী এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

সিআইডির মিডিয়া কর্মকর্তা পুলিশ সুপার আজাদ রহমান জানান, যৌন নিপীড়নের দৃশ্যগুলো ভিডিও ধারণ করে ওই শিক্ষক নিজের মোবাইল ফোন, পেনড্রাইভ, কম্পিউটার এবং এক্সটার্নাল হার্ডডিস্কে সংরক্ষণ করে রাখেন। এরপর সার্চ ইঞ্জিনে এসব তথ্য পৌঁছে দেয় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ন্যাশনাল সেন্টার ফর মিসিং অ্যান্ড এক্সপ্লয়েট চিলড্রেন (এনসিএমইসি) প্রতিষ্ঠানের কাছে।

আন্তর্জাতিক সংস্থার পার্টনার হওয়ায় কনটেন্টটি সিআইডিতে পাঠানো হলে সিআইডির নিজস্ব ক্রিমিন্যাল ইন্টেলিজেন্স টিম তদন্ত শুরু করে। স্থানীয় ভুক্তভোগী অনেক ছাত্র ও তাদের অভিভাবক তদন্তকারী টিমের কাছে শিক্ষক মো. আব্দুল ওয়াকেলের অপকর্মের সম্পর্কে ভয়ংকর তথ্য সরবরাহ করে।

এসপি আজাদ রহমান আরও জানান, শনিবার সিআইডির একটি বিশেষ টিম তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে রাজশাহী মেট্রোর মতিহার থানাধীন ২৯নং-ওয়ার্ড ডাঁশমারী এলাকায় অভিযান চালিয়ে আব্দুল ওয়াকেলকে গ্রেফতার করে।

প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, আব্দুল ওয়াকেল রাজশাহীর, কাটাখালীর আশরাফ মেমোরিয়াল মডেল স্কুলের শিক্ষক। ছাত্রাবস্থায় তিনি তার এলাকায় টিচ-ইন্ট নামে একটি কোচিং সেন্টারে শিক্ষকতা করতেন। কোচিংয়ের শিক্ষকতা করার সময় থেকেই তিনি কোমলমতি ছাত্রদের টার্গেট করে চকলেট এবং মোবাইলে গেমস খেলার প্রলোভন দেখিয়ে সখ্য গড়ে তুলতেন। পরে তাদেরকে ফুসলিয়ে কোচিং সেন্টারে অথবা নিজ বাড়িতে এবং কখনো কখনো আশপাশের আম/লিচু বাগানে নিয়ে যেতেন। সরলমনা ছাত্রদের চকলেট এবং পাবজি গেম ডাউনলোড করা মোবাইল ফোন হাতে দিয়ে পাবজি গেম খেলতে বলতেন। বাচ্চারা তখন পাবজি গেম খেলা নিয়ে প্রচণ্ড ব্যস্ত থাকত। এই সুযোগে তাদের সঙ্গে বিকৃত যৌনচার করে সেগুলো ভিডিও করে রাখতেন।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আব্দুল ওয়াকেল স্বীকার করেন যে, অনার্স পড়ার সময় থেকে ছেলে শিশুদের সঙ্গে বিকৃত যৌনাচার করে আসছেন তিনি। এ নেশার কারণে তিনি বালকদের নিয়ে কোচিং সেন্টার চালু করেছিলেন। কোচিং সেন্টারে পড়া বাচ্চাদের নানাভাবে প্রলুব্ধ করে বিভিন্ন গোপনীয় স্থানে নিয়ে অশ্লীল ভিডিও ধারণ করতেন। তার ভাষ্যমতে, এ পর্যন্ত তিনি ৩০ জন স্কুল ছাত্রকে বলৎকার করেছেন। গ্রেফতারকালে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, পেনড্রাইভ এবং কম্পিউটারের একাধিক হার্ডডিস্কে স্কুল পড়ুয়া ছাত্রদের বিপুলসংখ্যক নগ্ন ছবি, ভিডিও এবং চাইল্ড পর্নোগ্রাফির কন্টেন্ট পাওয়া যায়।

২৯ বার ভিউ হয়েছে
0Shares