অনলাইন জুয়া খেলা নিয়ে বিরোধের জের ধরে ইদুকে গলা কেটে হত্যা আদালতে আসামি আবুর স্বীকারোক্তি


এ ঘটনায় পুলিশের হাতে আটক অভিযুক্ত মোঃ রফিক ওরফে হাবু ওরফে আবু (২৮) মঙ্গল বার দুপুরে ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী প্রদান করে।
নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) সাহেব আলী পাঠান মঙ্গলবার (৩ জুন) বিকেল সাংবাদিকদের কাছে প্রেরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে মোহনগঞ্জ থানা পুলিশ ও জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের একটি টিম গত সোমবার মোহনগঞ্জ উপজেলার ছয়াশী (হাটনাইয়া) এলাকায় যৌথ অভিযান চালিয়ে আবুকে আটক করে।
আটককৃত মোঃ রফিক ওরফে হাবু ওরফে আবু উপজেলার ছয়াশী গ্রামের মৃত আব্দুল হেকিমের ছেলে।
পুলিশ জানায়,গত ২৬ মে রাত সাড়ে ৯টার দিকে মোহনগঞ্জ উপজেলার আদর্শনগর শিবির এলাকার বাসিন্দা রায়হান আহমেদ ইদু মিয়া নিখোঁজ হন। পরদিন সকালে স্থানীয়রা পাশের পরিত্যক্ত ব্র্যাক শিশু স্কুলের ভেতরে তার ক্ষত-বিক্ষত ও গলা কাটা লাশ উদ্ধার করে। বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
এ ঘটনায় পরদিন নিহতের বড় ভাই মোঃ সুমন মিয়া বাদী হয়ে মোহনগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ঘটনার রহস্য উদঘাটনে থানা ও ডিবি পুলিশের যৌথ একটি টিম অভিযান শুরু করে। এক পর্যায়ে একটি সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ঘটনার রহস্য উদঘাটনে সক্ষম হয় পুলিশ। পরে গতকাল সোমবার উপজেলার ছয়াশী এলাকা থেকে রফিক ওরফে হাবু ওরফে আবুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যায় সম্পৃক্ত থাকার কথা স্বীকার করেছে আবু। পরে ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে আবুকে হাজির করা হলে ১৬৪ ধারা মোতাবেক স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে।
আবুর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীর বরাত দিয়ে পুলিশ আরও জানায়, স্থানীয় মোশারফ হোসেন নামে এক যুবকের সঙ্গে অনলাইন জুয়া খেলা সংক্রান্ত আর্থিক বিরোধ ছিলে ইদুর। এরই জেরে ২৬ মে রাতে ইদুকে কৌশলে ডেকে বাইরে নিয়ে যায় মোশাররফ ও আবুসহ আরও কয়েকজন। পরে মুখ বেঁধে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি আঘাত করে এবং পরে গলা কেটে নির্মমভাবে হত্যা করে। হত্যার পর ব্যবহৃত অস্ত্রটি ঘটনাস্থলের পাশের একটি বিলে ফেলে পালিয়ে যায় তারা।
মোহনগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আমিনুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পরপরই রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করি। এক পর্যায়ে একটি সিসিটিভি ফুটেজ আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে সহায়তা করে। মূলত অনলাইন জুয়া খেলা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এই হত্যাকাণ্ড। হত্যায় জড়িত সবাইকে শনাক্ত কর হয়েছে। একজন আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে এবং স্বীকারোক্তি দিয়েছে। পলাতক মোশারফসহ অন্য আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। দ্রুত তাদের গ্রেফতার করা হবে।