মঙ্গলবার- ২১শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলের জন্য জাতীয় বাজেটে বিশেষ বরাদ্দের দাবি

দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলের জন্য জাতীয় বাজেটে বিশেষ বরাদ্দের দাবি

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দুর্যোগ কবলিত দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলকে দুর্যোগ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করে ওই ঝুঁকি মোকাবিলায় জাতীয় বাজেটে বিশেষ বরাদ্দের দাবি জানিয়েছেন জনপ্রতিনিধি ও নাগরিক সমাজের নেতারা। তারা উপকূলের টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও সুপেয় পানি সরবরাহে সরকারের নেওয়া প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন ও প্রয়োজনীয় নতুন প্রকল্প গ্রহণের সুপারিশ করেছেন।
মঙ্গলবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই সুপারিশ তুলে ধরা হয়। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘লিডার্স’ এবং নাগরিক সংগঠন ‘সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলন’ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উত্থাপন করেন লিডার্সের নির্বাহী পরিচালক মোহন কুমার মণ্ডল।
সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্রের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতা করেন এডাব পরিচালক জসীম উদ্দীন, উন্নয়ন ধারা ট্রাস্টের সদস্য সচিব আমিনুর রসুল বাবুল, ডিআরইউর সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ, নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে, বিএমএ দফতর সম্পাদক ডা. মো. শহীদুল্লাহ, স্ক্যান সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মুকুল, সমাজ কল্যাণ উন্নয়ন সংস্থা (স্কাস) চেয়ারম্যান জেসমিন প্রেমা, ফেইথ ইন অ্যাকশনের কর্মসূচি সমন্বয়কারী তীমন বাড়ই, সচেতন সংস্থার সাকিলা পারভীন প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে উত্থাপিত সুপারিশে বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাটসহ উপকূলীয় অঞ্চলে স্থায়ী ও টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ করতে হবে। ওই এলাকায় পর্যাপ্ত সাইক্লোন শেল্টারসহ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। উপকূলবাসীর সুপেয় পানির টেকসই ও স্থায়ী সমাধান করতে হবে। একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের আদলে উপকূলীয় এলাকায় একটি বাড়ি একটি সেল্টার কার্যক্রম শুরু করতে হবে। নদীভাঙন ও ভূমিক্ষয় ঠেকাতে উপক‚লে ব্যাপকহারে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি গ্রহণ ও সবুজ বেষ্টনী গড়ে তুলতে হবে। উপকূলের রক্ষাকবচ সুন্দরবন রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সর্বোপরি উপকূল উন্নয়ন বোর্ড গঠন করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ভৌগোলিক অবস্থান, ঘন ঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ভঙ্গুর অবকাঠামো, দারিদ্র্য, দীর্ঘমেয়াদি লবণাক্ততা, সঙ্কটাপন্ন কৃষি প্রভৃতি কারণে উপকূলীয় এলাকার মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সাতক্ষীরা, খুলনা ও বাগেরহাট জেলা। তাই ওই এলাকাকে জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা ঘোষণা করে দীর্ঘমেয়াদি মহাপরিকল্পনা নেওয়া দরকার। কারণ করোনা পরিস্থিতি এবং সুপার সাইক্লোন আম্ফান ও ইয়াসের পর এখনও জনজীবনে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসেনি। বরং স্বাভাবিক জোয়ারের পানিতেই উপকূলের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। তাই নতুন করে ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’র খবরে ওই অঞ্চলের মানুষ চরম আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ১৯৯১ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ১৯৭টি বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুখোমুখি হয়েছে। যা এ দেশের মানুষের জীবন-জীবিকা, সম্পদ, খাদ্য, পানি, বাসস্থানসহ অন্যান্য সঙ্কট সৃষ্টি করেছে। এ সঙ্কট দক্ষিণ-পশ্চিম উপক‚লীয় অঞ্চলে সব থেকে বেশি। এই সঙ্কট থেকে উত্তরণে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে অদূর ভবিষ্যতে দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চল জনশূন্য হয়ে পড়বে।
৫৮ বার ভিউ হয়েছে
0Shares

COMMENTS