![ভাঙ্গা-যশোর-বেনাপোল ভায়া নড়াইল এক্সপ্রেসওয়ে সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণে অর্থ প্রাপ্তি নেই ভাঙ্গা-যশোর-বেনাপোল ভায়া নড়াইল এক্সপ্রেসওয়ে সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণে অর্থ প্রাপ্তি নেই](https://spnewsbd.com/wp-content/uploads/2022/09/received_491014756181337.jpg)
ভাঙ্গা-যশোর-বেনাপোল ভায়া নড়াইল এক্সপ্রেসওয়ে সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণে অর্থ প্রাপ্তি নেই
![](https://spnewsbd.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি: ভাঙ্গা-যশোর-বেনাপোল ভায়া নড়াইল এক্সপ্রেসওয়ে সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণে অর্থ প্রাপ্তি নেই। নড়াইলের মধুমতী নদীর ওপর নির্মিত দেশের প্রথম ৬ লেনের কালনা সেতুর নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের কালনা সেতু নিয়ে আগ্রহ বেড়েছে। সেতু চালু হওয়ার পর এই অঞ্চরের কিন্তু ভাঙ্গা-যশোর-বেনাপোল ভায়া নড়াইল এক্সপ্রেসওয়ে সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণে অর্থ প্রাপ্তি নেই। ফলে গোপালগঞ্জ-বাগেরহাট-খুলনা-যশোর হয়ে বেনাপোল পৌঁছাতে ৮৬ কিলোমিটার পথ বেশি পাড়ি দিতেa হচ্ছে কলকাতাগামী যাত্রীসাধারণের। এতে অর্থ অপচয়সহ বাড়ছে ভোগান্তি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত চার লেনে এক্সপ্রেসওয়ে সড়ক নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। অর্থ প্রাপ্তি না থাকায় ভাঙ্গা-যশোর-বেনাপোল ভায়া নড়াইল এক্সপ্রেসওয়ে সড়ক চার লেনের নির্মাণকাজ থমকে আছে। সওজ বলছে, ভাঙ্গা থেকে বেনাপোল ভায়া নড়াইল এক্সপ্রেসওয়ে সড়কের দূরত্ব ১৩০ কিলোমিটার। ১৩০ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়ে সড়ক চার লেনে উন্নীতকরণের জন্য ১১ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। কিন্তু অর্থ প্রাপ্তি না থাকায় কাজ বন্ধ হয়ে আছে। এই সড়কটি উন্নীতকরণ হলে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে বেনাপোল স্থলবন্দরসহ ভারতের কলকাতার যোগাযোগ অনেক সহজতর হবে। এতে ঢাকার সঙ্গে বেনাপোল স্থলবন্দরের দূরত্ব কমবে ৮৬ কিলোমিটার।
‘ভাঙ্গা-যশোর-বেনাপোল জাতীয় মহাসড়ককে ৪ লেনে উন্নীতকরণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ ও ইউটিলিটি স্থানান্তর প্রকল্প’ শীর্ষক প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণের জন্য ভূমির মৌজাভিত্তিক মূল্য, অধিগ্রহণ ব্যয়সহ অবকাঠামো, গাছপালা ইত্যাদির ক্ষতিপূরণ ব্যয় প্রাক্কলন প্রেরণ প্রসঙ্গে প্রকল্প পরিচালক (সওজ), সড়ক ভবন ঢাকা থেকে ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, নড়াইল এবং যশোর জেলা প্রশাসকের কাছে ২০২০ সালের ১ অক্টোবর চিঠি দেন।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ভাঙ্গা থেকে বেনাপোল পর্যন্ত জাতীয় মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীতকরণের জন্য মোট ১১ হাজার কোটি টাকার ডিপিপি প্রণয়নের কাজসহ সড়কের নকশার কাজ শেষ হয়েছে অনেক আগেই। এর মধ্যে ৫টি ফ্লাইওভার, নড়াইল এবং যশোর অংশে আলাদা ২টি বাইপাস সড়ক হবে।
বাংলাদেশ সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্পের আওতায় জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) অর্থায়নে ৯৫৯ দশমিক ৮৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬ লেনের কালনা সেতু নির্মাণসহ প্রকল্প এলাকায় আরও ৫টি ছয় লেনের ব্রিজের কাজ চলমান আছে। চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের অর্থের বিষয়ে বর্তমানে জিটুজি (সরকার টু সরকার) আলোচনা চলছে।
ট্রাকচালক শমসের শেখ জানান, বেনাপোল থেকে খুলনা-গোপালগঞ্জ হয়ে ঢাকার দূরত্ব ২৯০ কিলোমিটার। ভাঙ্গা-যশোর-বেনাপোল ভায়া নড়াইল সড়ক হয়ে ঢাকার দূরত্ব মাত্র ২০০ কিলোমিটার। ভাঙ্গা থেকে নড়াইল-যশোর হয়ে বেনাপোল পর্যন্ত পুরোনো এই সড়কের প্রশস্ত মাত্র ১৮ ফুট। কোথাও আবার ২৪ ফুট আছে। এই সড়কে ১০ থেকে ১৪ ফুট প্রশস্তের কয়েকটি ঝুঁকিপূর্ণ সেতু রয়েছে। এই সেতুর ওপর দিয়ে ৫ টনের বেশি ওজনের গাড়ি ওঠানো সরকারিভাবেই নিষেধ। সে জন্য তারা সড়কটি ব্যবহার না করে বেনাপোল থেকে খুলনা-গোপালগঞ্জ ঘুরে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে ঢাকা যাতায়াত করেন। নড়াইল জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও নড়াইল পৌরসভার প্যানেল চেয়ারম্যান কাজী জহিরুল হক বলেন, ‘ইতিমধ্যে পদ্মা সেতু উদ্বোধন হয়েছে। মধুমতী নদীর ওপর নির্মিত কালনা সেতু উদ্বোধন হলে এই সড়কে যানবাহনের চাপ বেড়ে যাবে। দ্রুত এই সড়কটি চার লেনে উন্নীতকরণের দাবি জানাই।
সওজ নড়াইলের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুজ্জামান বলেন, ‘পদ্মা সেতু চালুর পর ভাঙ্গা-যশোর-বেনাপোল জাতীয় মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীতকরণ জরুরি হয়ে পড়েছে। সরকার বিষয়টি অতি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। পদ্মা সেতু চালুর পর এই সড়কে গাড়ির চাপও অনেক বেড়ে গেছে। গাড়ির চাপ সামলাতে প্রাথমিকভাবে কালনা থেকে যশোর পর্যন্ত সড়কটি আরও ৬ ফুট চওড়া করার কাজ করা হচ্ছে। দেড় বছরের মধ্যে এই কাজ শেষ হবে।’
তিনি দাবি করে বলেন, ‘ভাঙ্গা-যশোর-বেনাপোল ভায়া নড়াইল সড়ককে চার লেনে উন্নীতকরণের কাজ শুরু হলে ৫ বছরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। সড়কটি নির্মাণ হলে বেনাপোলের সঙ্গে ঢাকার দূরত্ব অনেক কমে যাবে। তখন পদ্মা সেতুর পুরোপুরি সফল পাবে এলাকার মানুষ।
সড়ক বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী একেএম মনির হোসেন পাঠান চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। ১৬ ফেব্রুয়ারি তিনি কালনা সেতুর নির্মাণকাজ পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি সেতু নির্মাণকাজ দ্রুত শেষ করার তাগিদ দেন।
সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের কয়েকবার প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এ সময় তিনি কালনাঘাটে গণমাধ্যম কর্মীদের বলেছিলেন, ‘কালনা সেতু পদ্মা সেতুরই একটা অংশ। পদ্মা এবং কালনা সেতুর মাধ্যমে বেনাপোল স্থলবন্দর-যশোর-নড়াইল-ভাপিয়াপা ড়া-ভাঙ্গা-পদ্মা সেতু-মাওয়া-ঢাকা-সিলেট-তামাবিল সড়কের মাধ্যমে আঞ্চলিক যোগাযোগ স্থাপিত হবে। প্রকল্প এলাকাসহ দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন হবে।
৫৭ বার ভিউ হয়েছে