রাজশাহীতে সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদকে কারাগারে প্রেরণ
নাজিম হাসান,রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি :
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন কর্মসূচিতে হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদকে পাঁচ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আদালতের আদেশে তাকে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। এর আগে তাকে বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) বিকেলে আদালতে নিয়ে আসা হয়। এরপর তিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এবং আদালতে তোলা হলে বিচারক সাইফুল ইসলাম তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এসময় আদালত থেকে বের করার সময় সেখানে জড়ো হওয়া বিক্ষুব্ধ জনতার তোপের মুখে পড়েন সাবেক এ এমপি। বিক্ষুব্ধ জনতার মধ্যে থেকে একজন নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেদ করে বাঁশ দিয়ে সাবেক এমপি কালামের মাথায় আঘাত করেন। তবে হেলমেট পরে থাকায় কোনো রকমে তার রক্ষা হয়। পরে কোর্ট পুলিশ তাকে খুব দ্রুত প্রিজন ভ্যানে তুলে দিয়ে কারাগারে পাঠায়। এর আগে বুধবার রাত ৮টার দিকে রাজধানীর মিরপুর শেওড়াপাড়া থেকে আবুল কালাম আজাদকে গ্রেফতার করে র্যাব। পরে বাগমারা থানা-পুলিশের একটি দল বৃহস্পতিবার সকালে তাকে ঢাকা থেকে রাজশাহী নিয়ে আসে। থানা পুলিশ ও এলাকাবাসি সুত্রে জানাগেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসন থেকে আবুল কালাম আজাদ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে নৌকা প্রতীকে বিজয়ী হন। এরপর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ৬ আগস্ট রাষ্ট্রপতি সংসদ বিলুপ্ত করলে তিনি এমপি পদ হারান। এর আগে, ২০১১ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত টানা তিনবার তাহেরপুর পৌরসভায় মেয়র নির্বাচিত হন। এরপর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। তার বাবার নাম মৃত মেছের আলী। তার গ্রামের বাড়ি তাহেরপুর পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড জামগ্রামে। এদিকে, সাবেক এমপি কালাম ঢাকা থেকে গ্রেফতার হওয়ার খবর বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকাসহ সোসাল মিডিয়ার মাধ্যমে এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে বাগমারার তাহেরপুর পৌরসভার হরিতলা চার রাস্তার মোড়ে বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের উদ্যোগে আতশবাজি ও পোটকা ফুটিয়ে একটি আনন্দ মিছিল বের করা হয়। পরে মিছিল শেষে মিষ্টি বিতরন করা হয়। এবিষয়ে জেলা কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক মো. আমান উল্লাহ জানান, বুধবার (২ অক্টোবর) রাজধানী ঢাকায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর বৃহস্পতিবার বিকেলে বাগমারা-৪ আসনের সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদকে অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এর আগে ছাত্র-জনতার আন্দোলন কর্মসূচিতে হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। হামলার মামলায় আদালতে তোলা হলে বিচারক সাইফুল ইসলাম তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।তবে ছাত্র-জনতার ওপর হামলার ঘটনায় করা পাঁচটি মামলার আসামি সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ। উল্লেখ্য,বাগমারায় যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও আওয়ামীলীগের ক্যাডারদেরা এখনো দিনের বেলায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। অথচ পুলিশ তাদেরকে গ্রেতার করছেনা। এবং বাগমারার তাহেরপুর ও ভবানীগন্জ পৌরসভাসহ বাগমারা উপজেলাজুড়ে যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও আওয়ামীলীগের ক্যাডারদের অবৈধ আগ্নায়অস্ত্র উদ্ধার হয়নি বলে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সাধারন সচেতন মহল মনে করছেন।