ঝরনা রানী সাহার জায়গা জমি উদ্ধারে সংবাদ সম্মেলন
মোঃ আফজাল হোসেন, ফুলবাড়ী, দিনাজপুর প্রতিনিধি : দিনাজপুরের ফুলবাড়ী থানা প্রেস ক্লাবে ঝরনা রানী শাহার জায়গা জমি উদ্ধারে সংবাদ সম্মেলন। গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় ফুলবাড়ী উপজেলার খয়েরবাড়ী ইউপির জিতেন্দ্রনাথ সাহার স্ত্রী ঝরনা রানী সাহার জায়গা জমি উদ্ধারে এক সংবাদ সম্মেলন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে ঝরনা রানী সাহা তার বক্তব্যের শুরুতেই বলেন যে, আমি হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন বৃদ্ধা মেয়ে মানুষ। আমার বয়স ৬৬ বছর। আমার বক্তব্যের শুরুতেই আমি বলিতে চাই যে, আমার বড় অপরাধ হইতেছে আমি হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক। সে কারণে আমার নিজ নামীয় নওগাঁ জেলার ধামইর হাট থানার জোতরাম মৌজার ৪.৫৯ একর এবং চন্দ্রকোলা মৌজার ৪.৫৭ একর সর্ব মোট- ৯.১৬ একর অর্থাৎ ২৭ বিঘা ১৬ শতক সম্পত্তি দুই মৌজার কিছু লাঠিয়াল ও ভূমি দর্স্যু লোকজন আমার নিজ নামীয় খারিজকৃত ৯.১৬ একর সম্পত্তি পেশি শক্তির মাধ্যমে জাল দলিল সৃষ্টি করিয়া আইন আদালতের তোয়াক্কা না করে আমার সম্পত্তি দখল করে নিয়েছে। জমি দখলকারী ভূমি দর্স্যু গনের বিরুদ্ধে নওগাঁর আদালতে ২০১৭ সালে দুই মোৗজায় মোট ৩১ জনকে বিবাদী করিয়া আমি পৃথক ভাবে দুইটি মামলা দায়ের করেছি। যাহার মামলা নং- ২০৮/১২০(ওসি)/১৭ এবং ২০৯/১৬১(ওসি)/১৭। মামলা দুইটি চলমান রয়েছে। এই দুইটি মামলায় আদালতের নির্দেশ ক্রমে জাল দলিল বিষয়ে ফরেন্সিক বিভাগের অনুসন্ধান অনুযায়ী নওগাঁ জেলার সি আই ডি’র দুইজন কর্মকর্তা আলাদা আলাদা ভাবে দুইটি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেছে। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী তদন্ত কর্মকর্তাগণ তদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ করেছে যে, বিবাদীদের অপরাধ প্রাথমিক ভাবে সত্য বলিয়া প্রতিয়মান হয়েছে। অর্থাৎ ২০৮/১২০(ওসি)/১৭ এবং ২০৯/১৬১(ওসি)/১৭ নং মামলার বিবাদীগণ জাল দলিল সৃষ্টি করে বিভিন্ন দাগে ৯.১৬ একর সম্পত্তি দখল করে নিয়েছে। বলা আবশ্যক যে, ইতি মধ্যে ৩১ জন আসামীর মধ্যে ১৫ জন আসামী হাজত বাস করেছে। বর্তমানে ঐ ১৫জন হাজত বাস আসামী জামিনে আছে। আমার সম্পত্তির জাল দলিল সৃষ্টি কারির মুল হোতা মামুনুর রশিদ ওরফে মামুনের পিতা মো: জামাল উদ্দিন, পিতা- মৃত: শুকুমুদ্দীন, সাং- জোত রাম এবং মো: সিদ্দিকুর রহমান, পিতা- মৃত: বাদুল্যা মন্ডল, সাং- চন্দ্র কোলা, এই দুইজন ইতি মধ্যে মৃত্যু বরণ করেছে। মো: জামাল উদ্দিন এর মৃত্যুরপর হইতে তার ৩ ছেলে ১। মো: মামুনুর রশিদ মামুন, ২। মো: মাসুদ ও ৩। মো: মোস্তাফিজার এই ৩ জন মামলা গুলি পরিচালনা করিতেছে। জোতরাম ও চন্দ্রকোলা মৌজায় মো: মামুনুর রশিদ মামুনের নিজস্ব ভূমি দর্স্যু, লাঠিয়াল বাহিনী রয়েছে। এলাকার মানুষ মামুনের ভয়ে মুখ খুলতে সাহস পায় না। মামুনের পিতার জাল দলিলের মাধ্যমে মামুন ও তার সহদর দুই ছোট ভাই মাসুদ ও মোস্তাফিজার তার পিতার সৃষ্টিকৃত জাল দলিল সম্পর্কে অবগত থাকা স্বত্বেও ধামইরহাট ভূমি অফিসে প্রতারনার আশ্রয় লইয়া সত্য বিষয়টি গোপন করে তাহাদের নামে ও আরও কায়েক জনের নামে আমার খারিজকৃত জায়গা জমি চুপি সারে খারিজ করে নিয়েছে। সে কারণে আমি মামুন গং দের বিরুদ্ধে গত মার্চ মাসে ২০২৪ সালে আরও একটি নওগা ধামরহাট ৯ নং আমলী আদালতে নতুন মামলা করিয়াছি। যাহার মামলা নং ৭৮সি/২৪। এই মামলাটি আদালতের নির্দেশ ক্রমে নওগা পি,বি,আই কর্মকর্তা তদন্তকাজ শুরু করেন। তদন্ত কার্য শুরু হওয়ার পর হইতে মামুন মোবাইল ফোনে আমার মামলার স্বাক্ষীগণকে ও আমাকে নানা প্রকার ভয় ভিতি প্রদর্শন করিতেছে। গত ২৭/০৪/২০২৪ ও ২৮/০৪/২০২৪ ইং তারিখে মামুন তার নাম ও ঠিকানা গোপন করিয়া ছদ্দ নাম ধারন করিয়া ইকবাল নাম পরিচয় দিয়া ০১৭৩৮১৯১৪৮৩ মোবাইল হইতে ফোন করিয়া আমার করা মামলার স্বাক্ষীদের ও আমাকে অশ্রাব্য ভাষায় গালমন্দ ভয়ভিতি প্রদর্শন করিয়াছে। যাহার অডিও রেকর্ড আমার স্বাক্ষীর নিকট রহিয়াছে এবং আমার স্বাক্ষীগণদের নামে ইতি মধ্যে মো: আতাউর রহমান হিটলার, পিতা- মৃত: তোফাজ্জল হোসেন, সাং- গৌরীপাড়া, থানা- ফুলবাড়ী, জেলা- দিনাজপুর’ নামে ও আমার আদিয়ার সোবহান সরকার, পিতা- আসির উদ্দিন সাং- পূর্ব উচনা, পোষ্ট- ধরঞ্জি, থানা- পাঁচ বিবি, জেলা- জয়পুরহাট এবং আমার অচেনা আরও কয়েকজনকে মোট ৬ জন কে আসামী করিয়া পাঁচ বিবি থানায় পর্দার আড়ালে থাকা পশু সমতুল্য মো: মামুনুর রশিদ মামুন তার ভাড়াটিয়া লোক দ্বারা ৬/৭/৮/১০ মানব পাচার প্রতিরোধ ২০১২ দমন আইনে পাঁচ বিবি থানায় একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করিয়া আমার মামলার স্বাক্ষী ও আদিয়ারকে হয়রানি ও আর্থিক ভাবে জের বার করিতেছে। যাহার মামলা নং- ২৪/২২৬ ইং তাং- ২১/০৬/২০২৪। মামলার বাদীর নাম মো: আফজাল হোসেন, পিতা- মৃত: নজির উদ্দিন, গ্রাম- হালট্রি, উপজেলা- ও থানা- জয়পুরহাট, জেলা- জয়পুরহাট। মানব পাচারকারী ২৪/২২৬ নং মিথ্যা মামলায় ১ নং স্বাক্ষী মো: গিয়াস উদ্দিন, একজন গরু চোর। ২ নং স্বাক্ষী আব্দুল মাজেদ বাদীর আপন ভাই। যাহা মামলার আরজির বর্ণনাতে উল্লেখ রহিয়াছে। আমি মামুনুর রশিদের ও মামলার বাদী আফজালের দৃষ্টান্ত মুলক বিচার চাই। বর্তমানে আমি নওগাঁ আদালতে ভয়ে ভয়ে মামলার ধার্য্য তারিখে যাওয়া আসা করিতেছি। যে কোন সময় মামুনের লাঠিয়াল ভাহিনী ও ভূমি দর্স্যুরা আমার ও স্বাক্ষীগনের বড় ধরনের ক্ষীতি স্বাধন করতে পারে, এমনকি মেরে ফেলিতে পারে বলিয়া আমি আসঙ্কা বোধ করছি। মামুন সাধারণ মানুষের জীবন ও জীবিকা লইয়া এ-কি নিষ্ঠুর খেলা করিতেছে ? মামুন তার পিতার জীবমান সময়কাল হইতে অদ্যাবধি জাল দলিল সৃষ্টিসহ জমি দখল ভূমি অফিসে জাল দলিলের মাধ্যমে নিজের নামে ভূয়া ভাবে জমি খারিজ ইত্যাদি বিষয়ে পর্দার আড়াল হইতে মামলার সকল কার্য পরিচালনা করে আসছে। এখানে উল্লেখ করা আবশ্যক যে, ৭৮সি/২৪ নং মামলার আসামী মামুনের লাঠিয়াল বাহিনীর লোকজন আমার স্বামীকে ইতি পূর্বে মারিয়া ফেলার উদ্দেশ্যে চন্দ্রকোলা ইনিয়নের আমার বশত: বাড়ীর নিকট রাস্তা হইতে জোর পূর্বক ধরে নিয়ে যায়। ঈশ্বেরের কৃপায় আমার স্বামী ঐ যাত্রায় প্রানে বাচিয়া ফিরিয়া আসিলে আমি ও আমার স্বামী প্রান ভয়ে চন্দ্রকলার বাড়ীঘর জয়গা জমি ও জোতরামের জায়গা জমি ছাড়িয়া প্রাণ রক্ষার্থে স্বামীর জন্ম স্থান দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ী থানার খয়েরবাড়ী গ্রামে চলে আসি এবং তখন হইতে খয়েরবাড়ী গ্রামে বসবাস করতেছি। মামুনুর রশিদ মামুনের পূর্ণ ঠিকানা, মো: মামুনুর রশিদ মামুন, পিতা- মৃত: জামাল উদ্দিন, সাং- জোতরাম, থানা- ধামইর হাট, জেলা- নওগাঁ। আমি সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলির কাছে ন্যায় বিচারের দাবী করছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, খয়েরবাড়ী গ্রামের হারাধন সাহার মেয়ে সোমা সাহা, স্ত্রী তপতী সাহা সহ তার পরিবারের লোকজন।