সোমবার- ১লা জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৭ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সৈয়দপুরে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোমিনুলের প্রচেষ্ঠায় একই গ্রামে ৩৫টি পারিবারিক পুষ্টি বাগান

সৈয়দপুরে উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোমিনুলের প্রচেষ্ঠায় একই গ্রামে ৩৫টি পারিবারিক পুষ্টি বাগান

দুলাল সরকার, সৈয়দপুর-নীলফামারী প্রতিনিধি : মুজিব বর্ষ উপলক্ষ্যে সারাদেশে পুষ্টির চাহিদা মেটানোর লক্ষ্যে কৃষি বিভাগের অধিনে গড়ে তোলা হয়েছে পারিবারিক পুষ্টি বাগান। এর পরিপ্রেক্ষিতে নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের ব্রন্মোত্তর গ্রামে গড়ে তোলা হয়েছে ৩৫টি পারিবারিক পুষ্টি বাগান।

স্থানীয় কৃষি স¤প্রসারণ বিভাগের সহযোগিতায় গ্রামের প্রত্যেকটি পরিবার দেড় শতক জমিতে গড়ে তুলেছে সবজির এ বাগান। বর্তমানে পাট শাক, কাঁচা মরিচ থেকে শুরু করে শাকসবজি, সবকিছুর দাম চড়া। তবে সে আঁচ লাগেনি রাসেল ইসলাম এর ঘরে। বরং তারা বাড়ির আঙিনায় লাগানো শাকসবজি খেয়ে ভালোভাবে দিন পার করছেন।

সঙ্গে প্রতিবেশীদের প্রয়োজন মেটাচ্ছেন। বাড়তি কিছু থাকলে বাজারেও বিক্রি করছেন। এ বাগান পরিবারের সদস্যদের পুষ্টির চাহিদা মেটাচ্ছে বলে এর নাম রাখা হয়েছে পুষ্টি বাগান। সুবিধাভোগীরা বলেন, নিজেদের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি পথ খুলেছে বাড়তি আয়ের। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে গ্রামটির ফুতুপাড়া, দেওয়ানীপাড়া, নতুনহাট, ব্রম্মোত্তর সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, পতিত জমিতে লাগানো গাছে ধরেছে নানা রকম সবজি। কৃষক রাসেল ইসলাম দেড় শতক জমিতে আবাদ করেছেন পেঁপে, করলা, ঢেড়স, লালশাক, পাটশাক, কাঁচা মরিচের।

আর বস্তায় আবাদ করেছেন আদা। তিনি বলেন, এলাকার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোমিনুল মোস্তফা জামানের অক্লান্ত প্রচেষ্ঠা ও পরামর্শে এ বাগান করেছেন এবং তিনি নিয়মিত বাগান পরিচর্যার ব্যাপারে খোঁজখবর করেন। তিনি আরো জানান, কোদাল দিয়ে মাটি কেটে চাষ উপযোগী করার পর পাঁচটি বেড তৈরি করা হয়। প্রতিটি বেড এক মিটার চওড়া, মাঝখানে এক ফুট নালা যাতে পানিসেচ দেওয়া হয়। গত জানুয়ারি মাসে বাগান করেছেন।

এর মধ্যে তিনবার ফলন পেয়েছেন। জহির উদ্দিনের স্ত্রী জোহরা বেগম বলেন, ‘আমার বাগানে এখন আছে ঢেড়স, বরবটি, করলা, ঝিঙে, ধুন্দুল ও মরিচ। মাত্র দেড় শতক জায়গায় কত ফসল, না দেখলে বিশ্বাস হবে না। ছয় মাস ধরে আমরা কোনো সবজি কিনে খাইনি। বাগান থেকে যা পাই তা-ই অনেক। শুধু তা-ই নয়, প্রায় দুই হাজার টাকার সবজিও বিক্রি করেছি আমি।

ব্রম্মোত্তর গ্রামের পারিবারিক পুষ্টি বাগানের দেখাশোনা করছেন কৃষি বিভাগের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোমিনুল মোস্তফা জামান। তিনি বলেন, ব্রম্মোত্তর গ্রামটিতে এখন আর পতিত জমি নেই। এসব বাগানে কোনো রাসায়নিক সার ব্যবহার হয় না। মুরগির বিষ্ঠা, বায়োগ্যাসের বর্জ্য, গৃহস্থালি আবর্জনা দিয়ে কম্পোস্ট সার তৈরি করে জমিগুলোতে প্রয়োগ করা হচ্ছে। আর কীটনাশক হিসেবে তামাকের গুড়া ব্যবহার করা হচ্ছে। পুষ্টি বাগানের ফসল স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মমতা সাহা ওই উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোমিনুল মোস্তাফা জামানের কাজে ভ‚য়সী প্রশংসা করেন।

১৪২ বার ভিউ হয়েছে
0Shares