মঙ্গলবার, ৪ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

দুপচাঁচিয়া উপজেলা জামায়াতের মুনসুর আলী। দীর্ঘ ১৬ বছর তিনি উপজেলা আমিরের দায়িত্ব পালন।।

দুপচাঁচিয়া উপজেলা জামায়াতের মুনসুর আলী। দীর্ঘ ১৬ বছর তিনি উপজেলা আমিরের দায়িত্ব পালন।।

২০ Views

মোসাব্বর হাসান মুসা স্টাফ রিপোটার বগুড়াঃ

গাড়িতে যিনি বসে আছেন, তিনি আমাদের উপজেলা জামায়াতের সদ্য বিদায়ী আমির, নাম মুনসুর আলী। দীর্ঘ ১৬ বছর তিনি উপজেলা আমিরের দায়িত্ব পালন করেছেন, তার আগে উপজেলা নায়েবে আমির ছিলেন ৪ বছর, উপজেলা সেক্রেটারি ছিলেন ৮ বছর। ২৮ বছর উপজেলার শীর্ষ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন, আলহামদুলিল্লাহ। তিনি মজলুম, ৯ বার কারাবরণ করেছেন। কারামুক্ত হয়েই নতুন উদ্যোমে সাংগঠনিক কাজ চালিয়ে নিয়েছেন। আমাদের উপজেলা সংগঠনকে দারুণ শক্তিশালী হিসেবে তৈরি করেছেন৷

নতুন সাংগঠনিক সেশনে নতুন উপজেলা আমির দায়িত্বে এসেছেন। জামায়াতের সাংগঠনিক সিস্টেমে দায়িত্ব পরিবর্তনের সাথে সাথে সংগঠনের সকল আমানত নতুন দায়িত্বশীলদের কাছে হস্তান্তর করতে হয়৷ মুনসুর আলী সাহেবের কাছে সংগঠনের একটা মোটরসাইকেল ছিল, মোবাইল ছিল। সংগঠনের অনুশীলন অনুযায়ী তিনি নতুন আমিরের কাছে সাংগঠনিক সম্পদ হস্তান্তর করেছেন।

আমরা দীর্ঘ একমাস ধরে দেখছি, তিনি হেঁটে অথবা ভ্যানে চলে সাংগঠনিক কাজে যাচ্ছেন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে তিনি হাঁটুতেই আঘাতপ্রাপ্ত।

একজন স্থানীয় দায়িত্বশীল এক সন্ধ্যায় এসে বললেন, মুনসুর ভাই এভাবে কষ্ট করে সাংগঠনিক কাজ কীভাবে করবেন?

সোজা মোটরসাইকেলের শো-রুমে গেলাম। হাতে যা ছিল, তা দিয়ে শো-রুমকে বললাম কয়েক সপ্তাহের মধ্যে টাকা পরিশোধ করে দেবো ইনশাআল্লাহ, এখন যা আছে নিন৷ শো-রুম মালিক বললেন, নিয়ে যান ভাই, যখন সুযোগ হয় দেবেন।

আলহামদুলিল্লাহ, আজ সন্ধ্যায় আমরা কয়েকজন মিলে সাবেক আমির সাহেবকে এই নতুন মোটরসাইকেল উপহার দিয়েছি। আমরা জানতাম, তিনি বুঝতে পারলে কোনোভাবেই এই কাজটা করতে দেবেন না। শো-রুম থেকে গাড়ি নিয়ে সরাসরি তার স্থানীয় বাজারে গিয়ে সারপ্রাইজ দিয়েছি। তিনি কিছু বুঝে ওঠার আগেই গাড়িতে তুলে দিয়েছি। তিনি আমতাআমতা করছিলেন, কিন্তু আমাদের সকলের কাছে তিনি কুলাতে পারলেন না। তিনি গাড়িতে উঠে বসলেন। তার চোখ ভিজে উঠেছিল, আমাদেরও।

আলহামদুলিল্লাহ, আমরা পরিতৃপ্ত। আমাদের জন্য তিনি যতটা করেছেন, তার জন্য এই সামান্যটুকু করতে পেরে আমরা স্বস্তি পেয়েছি কিছুটা। প্রাপ্য সম্মানের খুব সামান্যই আমরা তাকে দিতে পারছি। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাকে সম্মানিত রাখুন৷

সন্ধ্যায় ভাবছিলাম—জামায়াত এক দারুণ সাংগঠনিক অনুশীলন তৈরি করেছে আলহামদুলিল্লাহ। সংগঠন তার সাংগঠনিক আমানতদারিতার ব্যাপারে যত্নশীল। সংগঠনের প্রয়োজনে দায়িত্বশীলবৃন্দ কিছু লজিস্টিক সাপোর্ট গ্রহণ করে। কিন্তু সংগঠনের সিদ্ধান্ত যখন এসে যায় কিংবা নতুন নেতৃত্ব আসে, সাথে সাথে সে লজিস্টিকস হস্তান্তর করতে হয়। এ এক দারুণ ব্যাপার! এই সিলসিলা নিয়েই আজ আমরা এখানে এসে দাঁড়িয়েছি।আলহামদুলিল্লাহ, ছুম্মা আলহামদুলিল্লাহ।

Share This