শুক্রবার, ২৭শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ভোলায় রোপা আমন ও বীজতলার ব্যাপক ক্ষতি

ভোলায় রোপা আমন ও বীজতলার ব্যাপক ক্ষতি

৭০ Views

ভোরা প্রতিনিধিঃ ভোলায় অতি জোয়ার ও বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে আমন ধানের রোপণ করা চারা ও বীজতলা। এতে লোকসানের মুখে পড়েছেন কৃষকরা।
তাদের দাবি বিভিন্ন ব্যাংক, এনজিও ও স্থানীয়দের থেকে ঋণ নিয়ে এবছর আমন ধানের চাষাবাদ করেন। কিন্তু গত কয়েক দিনের অতি জোয়ারের পানি ও টানা বৃষ্টিতে ক্ষেতে রোপণকৃত আমনের চারা ও বীজতলা ভেসে গেছে। তাই ঋণ পরিশোধ নিয়ে চিন্তিত তারা।
ভোলা সদর ও দৌলতখান উপজেলার বিভিন্ন কৃষকের জমিতে গিয়ে জানা গেছে, ভোলায় মেঘনা-তেতুলিয়া নদীতে অতি জোয়ার ও বেশ কয়েক দিনের টানা বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে রোপণকৃত আমন চারা ও বীজতলা। আমনের ক্ষেতে এখন শুধু পানি আর পানি। আবার কোনো কোনো কৃষককে সেই চারাগুলো পানি থেকে টেনে উঠানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়ে মাথায় হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
ভোলার তুলাতুলি গ্রামের কৃষক মোঃ জামাল, দৌলতখানের কৃষক মোঃ মোসলেউদ্দিন ও মোঃ সেলিম জানান, তারা কৃষি কাজ করেই জীবিকা নির্বাহ করেন। অন্যের থেকে জমি লগ্নি নিয়ে এবছর পৃথক পৃথক ভাবে বিভিন্ন ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে আমনের চাষ করেছেন। নিজেরাই বীজতলা তৈরি করে এক মাস আগে সেখান থেকে আমনের চারা এনে ক্ষেতে রোপণ করেছেন। ওই চারা বড় হতে শুরু করেছে। কিন্তু গত কয়েকদিনের অতি জোয়ার ও বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে আমনের ক্ষেত। আর বেশি ভাগ চারাই পানিতে পচে গেছে। এতে কয়েক লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। এখন জমির মধ্যে গরু চড়ে ঘাস খায়।
এই কৃষকরা বলেন, এখন নতুন করে যে আবারও চারা রোপণ করবো সেই টাকা নেই। এছাড়া আমনের চারাও পাওয়া যায় না। এখন ঋণের কিস্তি পরিশোধ করবো কীভাবে। সরকারিভাবে যদি অর্থ সহযোগিতা পাই তাহলে ঘুরে দাঁড়াতে পারবো।
কৃষক মোঃ সেলিম ও আবুল কাশেম বলেন, এনজিও ও স্থানীয়দের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে বীজতলা করেছি। চারা রোপণ উপযুক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই হঠাৎ জোয়ারের ও বৃষ্টির পানিতে বীজ ভেসে গেছে। এতে আমাদের একেক জনের ২০-৩০ হাজার টাকা করে লোকসান হয়েছে। এখন নতুন করে আর বীজতলা তৈরির সময় নেই। অন্য জেলা থেকে আমনের চারা কিনে এনে রোপণ করলে কিছুটা লোকসান পুষিয়ে উঠা যাবে। আর যদি অন্য জেলায় আমনের চারা না পাই তাহলে জমি অনাবাদী থাকবে।
ভোলা খামার বাড়ির অতিরিক্ত উপ-পরিচালক এএফএম শাহাবুদ্দিন জানান, এ মৌসুমে প্রায় ১৯ হাজার ৫২৫ হেক্টর জমি অনাবাদী থাকতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। তবে জমি যাতে খালি না থাকে সেজন্য কৃষকদের অন্য জেলা থেকে আমনের চারা ও অন্য জাতের ধান চাষের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও জানান, জেলায় এ বছর আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৭৫ হাজার ৯৩৬ হেক্টর জমিতে। এরমধ্যে ৬৪ হাজার হেক্টর জমিতে চারা রোপণ হলেও জোয়ার ও বৃষ্টির পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩০ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমির ক্ষেত। এছাড়া ১২ হাজার ৩৪০ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি করা হলেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩ হাজার ৪৩১ হেক্টর।

Share This