
সৈয়দপুরে ভারতীয় নাগরিকের রেখে দেয়া ৫০ কোটি টাকার ভূ-সম্পদ দখলে নিতে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ

মোঃ দুলাল সরকার, সৈয়দপুর (নীলফামারী) : নীলফামারীর সৈয়দপুরে ভারতীয় নাগরিকের রেখে যাওয়া ৫০ কোটি টাকা মূল্যের ভূ-সম্পদ দখলে নিতে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ মিলেছে। রেখে যাওয়া ওই ভূ-সম্পদের মালিক ছিলো প্রদীপ কুমার আগরওয়ালা ও স্বজন কুমার আগরওয়ালা। শহরের শহীদ তুলশীরাম সড়কে রয়েছে এই ভূ-সম্পদ।
গতকাল শনিবার নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করে উত্তরাধিকার সূত্রে ভূ-সম্পদের মালিকানার দাবি করেন সুমিত কুমার আগরওয়ালা নিক্কি ও অমিত কুমার আগরওয়ালা রিক্কি। তারা উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন ভারতীয় নাগরিক প্রদীপ কুমার আগরওয়ালা ও স্বজন কুমার আগরওয়ালা আমার চাচা। পৈত্রিক সূত্রে তারা যত ভূ-সম্পদের মালিক ছিলেন তা তারা বিক্রি করে দিয়ে অনেক আগেই ভারতীয় নাগরিকত্ব নিয়ে ভারতেই বসবাস করছেন। এমনকি প্রাপ্ত অংশের চেয়ে অনেক বেশি তারা বিক্রি করে নিঃস্বত্ববান হয়ে ভারতে চলে গেছে। বর্তমানে উত্তরাধিকার সূত্রে এই ভূ-সম্পদের মালিক আমরা। ভুলক্রমে বিএস রেকর্ড তাদের নামে প্রচারিত হয়েছে। এ নিয়ে আমরা আদালতে ২০১৮ সালে বাটোয়ারা মামলা দায়ের করি। যা বর্তমানেও চলমান রয়েছে। অথচ গত ৮ মার্চ ভাড়াটিয়া সেজে দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ২০০/২৫০ লোক নিয়ে ওই সম্পদ দখলে নিতে যান সৈয়দপুরের ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলতাফ হোসেন।
এই ব্যবসায়ীও গত ১৩ মার্চ তার ভাড়াটিয়ার বৈধতা জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। এ ব্যবসায়ী সাংবাদিকদের বলেন, ভূ-সম্পদের মালিক প্রদীপ কুমার আগরওয়ালা ও স্বজন কুমার আগরওয়ালা বিরোধীয় ভূ-সম্পদ আমমোক্তারনামা দেন (পাওয়ার অফ এ্যাটর্নি) অ্যাডভোকেট হিমেল রায়কে। সেই সুবাদে আমি হিমেলের কাছে বাড়িসহ ওই ভূ-সম্পদ এ বছরের ১ জানুয়ারী ভাড়া নেই। ভাড়াটিয়া হিসাবেই সেখানে অবস্থান করছি। কোনো ধরনের জবর দখল করি নাই। অথচ সুমিত কুমার আগরওয়ালা নিক্কি ও অমিত কুমার আগরওয়ালা রিক্কি ওই সম্পদের মালিকানা দাবি করে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে।
গতকাল শনিবার অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলা শাখার সভাপতি অধ্যক্ষ আব্দুল গফুর সরকার, সিনিয়র সহ-সভাপতি শফিকুল ইসলাম জনি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সামসুল আলম, সাংগঠনিক সম্পাদক এম এ পারভেজ লিটন, আনোয়ার হোসেন প্রামানিক, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শেখ বাবলু, বিএনপি নেতা শাহিন হোসেন।
সুমিত কুমার আগরওয়ালা নিক্কি এদিনের অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে আরও বলেন, বিবাদীয় ওই বাড়িতে আমার বাবার জন্ম হয়েছে। আমাদের দুই ভাইও জন্ম নিয়েছি ওই বাড়িতে। বিএনপির চেয়ারপার্সন ও তিনবারের সফল সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদ জিয়া আমার বাবা সুশীল কুমারের সুবাদে আমাদের বাড়িতে দুইবার এসেছিলেন। আমাদের পৈত্রিক বাড়িটি বেগম খালেদা জিয়ার স্মৃতি বিজড়িত বাড়ি। অথচ বর্তমান সময়ে ভূমিখেকো ব্যবসায়ী নেতা আলতাফ হোসেন বাড়িটি দখল করতে তার অনৈতিক চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছে। হয়রানি করতে ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। আমাদের পরিবারের সবাই ভারতে গেলেও এদেশের মায়ায় আমরা মাটি কামড়ে পড়ে আছি। অথচ আমাদের ভূ-সম্পদ আত্মসাত করতে ষড়যন্ত্রের বীজ বপণ করা হচ্ছে। এমন অবস্থা থেকে বাঁচতে আমরা সকলের সহযোগিতা চাইছি। (ছবি আছে)