মঙ্গলবার- ২রা জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -১৮ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
ঝিনাইদহে নবজাতককে গলা টিপে হত্যর ঘটনায় অবশেষে মামলা, অভিযুক্ত তিনজন কারাগারে

ঝিনাইদহে নবজাতককে গলা টিপে হত্যর ঘটনায় অবশেষে মামলা, অভিযুক্ত তিনজন কারাগারে

স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ- ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে সদ্য ভুমিষ্ঠ এক ছেলে শিশুকে গলা টিপে নির্মমভাবে হত্যার অভিযোগে মামলা হয়েছে। বুধবার ঝিনাইদহ সদর থানার এসআই রিফাত হোসেন বাদী হয়ে মামলাটি করেন।

মামলার আসামীরা হচ্ছে নবজাতকের মা নুরুন্নাহার খাতুন, নানি কমলা খাতুন ও মায়ের কথিত প্রেমিকা আলিফ আবেদীন গুঞ্জন। ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি (অপারেশন) হরিদাশ রায় জানান, পিতৃত্ব নিয়ে ঝামেলা সৃষ্টি হতে পারে এমন শংকা থেকে মা ও নানির যৌথ ষড়যন্ত্রে শিশুটিকে হত্যা করা হয় বলে প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা মিলেছে।

তিনি বলেন, গত সোমবার (১৫ আগষ্ট) রাতে যখন প্রসব বেদনা নিয়ে নুরুন্নহার হাসপাতালে ভর্তি হয় তখন ভুয়া ঠিকানা ব্যবহার করে। অভিভাবক হিসেবে মা বলে এক নাম মেয়ে বলে আরেক নাম। এতে হাসপাতালের নার্সদের মাঝে সন্দেহ হয়। প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ননামতে, বাচ্চাটি জন্ম নেওয়ার পর মা নুরুন্নাহার ও নানি কমলা খাতুন যুক্তি করে নবজাতককে হাসপাতালের একটি গলির মধ্যে নিয়ে হত্যা করে।

প্রথমে শিশুটির অন্ডকোষ টিপে ধরে গলায় গামছা জাতীয় কিছু পেচিয়ে হত্যা করে আবার হাসপাতাল বেডে আনা হয়। বেডে আনার পর দেখে নবজাতকের সারা শরীরে আঁচড়ের দাগ। পুরুষাঙ্গ দিয়ে রক্ত ঝরছে। গলায় দাগ। খবরটি দ্রæত হাসপাতাল এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে উৎসুক জনতার ভীড় বাড়তে থাকে। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ সৈয়দ রেজাউল ইসলাম বুধবার বিকালে জানান, নার্সদের কাছ থেকে এমন নির্মম খবরটি পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে জানানো হয়।

পুলিশ এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতারসহ ঘটনার অন্তরালে লুকিয়ে থাকা ক্লু ও মোটিভ উদ্ধার করতে সমর্থ হয়। নবজাতকের মা নুরুন্নাহারের ভাষ্য, বাচ্চা জন্মদানের ১৫ দিন আগে কালীগঞ্জের আড়পাড়ায় তার বিয়ে হয়। বিয়ের সময় তিনি যে গর্ভবতী ছিলেন, তা গোপন রাখা হয়। এর আগে সদর উপজেলার গান্না ইউনিয়নে নুরুন্নাহারের বিয়ে হলে তিন বছর পর স্বামী তাকে তালাক দেয়। নুরুন্নাহার পুলিশ ও গনমাধ্যম কর্মীদের কাছে স্বীকার করেন এই নবজাতকের পিতা হচ্ছে ব্যাপারীপাড়ার তারেক আবদীনের ছেলে আলিফ আবেদীন গুঞ্জন।

এক বছর ধরে গুঞ্জনের সঙ্গে তার অবৈধ সম্পর্ক রয়েছে। গুঞ্জন সম্পর্কে তার চাচাতো ভগ্নিপতি বলে নুরুন্নাহার দাবী করেন। নুরুন্নাহার আরো জানিয়েছেন, তার পিতা হরিণাকুন্ডু উপজেলার হামিরহাটি গ্রামের আকতার হোসেন মৃত্যুবরণ করলে তার মা কমেলা খাতুনের সঙ্গে নানা বাড়ি কালীগঞ্জ উপজেলার কাদিরকোল গ্রামে চলে আসেন।

কালীগঞ্জ শহরের আড়পাড়ায় নুরুন্নাহারের বিয়ে হলে তারা শহরে নদীপাড়ায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করছে। মামলা রকের্ড হওয়ার খবর নিশ্চিত করে ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ সোহলে রানা জানান, নবজাতক হত্যার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনজনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেছে। আসামীরা সবাই কারাগারে। তাদের রিমান্ডে নিয়ে জজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

১১৪ বার ভিউ হয়েছে
0Shares