বুধবার, ৮ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

চোখ হারানো সাইদুল পেলেন জীবিকার সহায়তা

চোখ হারানো সাইদুল পেলেন জীবিকার সহায়তা

১২ Views
পটুয়াখালী প্রতিনিধি।। জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুলির আঘাতে চোখের আলো হারিয়ে বিপর্যন্ত হয়ে পড়েন পটুয়াখালীর যুবক সাইদুল। দুর্ঘটনার পর জীবিকা ও পরিবার হারিয়ে অন্ধকারে ডুবে গিয়েছে তার। তবে সম্প্রতি কিছু হৃদয়বান মানুষের সহায়তায় আবারও জীবিকা নির্বাহের সুযোগ পেয়েছেন সাইদুল যা তার জীবনে নতুন আশার আলো জ্বালিয়েছে। সোমবার পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের ড. আখতার উদ্দিন মিলনায়তনে জুলাই- আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গুলির স্প্লিন্টারে চোখের আলো হারিয়ে কর্মহীন হয়ে পড়া পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের বাঁশবাড়িয়া গ্রামের যুবক সাইদুল (২৫)। সাইদুলের বিপর্যস্ত জীবন নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করলে ঢাকার কয়েকজন হৃদয়বান পাঠকের নজরে পড়ে। তিনি ওই সাংবাদিকের মাধ্যমে সাইদুলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং সাইদুলের চাহিদা অনুযায়ী একটি ব্যাটারিচালিত রিকশা উপহার দেন। পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও দি ডেইলি স্টারের পটুয়াখালী প্রতিনিধি সোহরাব হোসেন সাইদুলের হাতে রিকশাটি তুলে দেন। দুর্ঘটনার পূর্বে সাইদুল ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। সাইদুল বলেন, আমি কৃতজ্ঞ। আমার দুঃসময়ে যারা সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন তাদের প্রতি শুভকামনা। এখন আমি রিকশাটির মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করতে পারবো। সাইদুল বাঁশবাড়িয়া গ্রামের মোহাম্মদ মৃধার ছেলে। চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে সাইদুল সবার বড়। অভাবের সংসারে বেশিদূর পড়াশোনা না করতে পারা সাইদুল ঢাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। শরীরে অসংখ্য স্প্রিন্টারের অসহ্য ব্যথা আর চোখ হারিয়ে চিকিৎসাবিহীন দিন কাটছে বেকার যুবক সাইদুলের। সাইদুল বলেন- আমার দুঃসময় দেখে স্ত্রী পান্না আক্তার আমাকে তালাক দিয়ে দেড় বছরের একমাত্র মেয়ে সুমাইয়াকে নিয়ে চলে গেছেন। তিনি আরো জানান, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতন আন্দোলনে সামিল হন তিনি। ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে আন্দোলনের সময় চোখে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে প্রায় অর্ধশতাধিক স্প্রিন্টার বিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। ওই সময় আন্দোলনে উপস্থিত শিক্ষার্থী ও জনতা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে এক সপ্তাহ ভর্তি থাকার সময় তার চোখ থেকে স্প্রিন্টার বের করা হয়। পরে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে আরো এক সপ্তাহ চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। সেখানে তার চোখে অপারেশন করা হয়। স্প্রিন্টারের আঘাতে তার বাম চোখ সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে।
Share This

COMMENTS