
বাঘায় পেয়ারার বাম্পার ফলন-লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা

১১ Views
বাঘা (রাজশাহী) : প্রতিনিধি : পেয়ারা একটি অত্যন্ত পুষ্টি ও স্বাস্থ্যকর ফল। এটি খাওয়ার ফলে হৃদরোগ প্রতিরোধ করে, পেয়ারার পটাশিয়াম এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং হার্টে স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়। এ ছাড়াও ত্বক উজ্জ্বল করে এবং পেয়ারায় থাকা ভিটামিন সি এবং এ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখে । নানা কারণে রাজশাহীর বাঘায় পেয়ারার চাষ দিন-দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে এ উপজেলার পদ্মার চরাঞ্চরের পেয়ারা স্থানীয় চাহিদা পুরণ করে আমদানি করা হচ্ছে, ঢাকা সহ-দেশের বিভিন্ন বাজারে।
সরেজমিন ঘুরে ও পেয়ারা চাষীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বাঘায় দিন দিন বাড়ছে পেয়ারা চাষ। এটি লাভজনক ও পুষ্টিকর ফল হওয়ায় কৃষকদের মাঝে উৎপাদনের আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিজেদের জমি না থাকলেও অনেকে জমি বন্ধক (বর্গা) নিয়ে পেয়ারা বাগান করছেন। এর ফলে অত্র উপজেলায় যে পরিমাণ পেয়ারার বাগান রয়েছে তা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে জেলার বাইরে বিভিন্ন শহরে পাঠানো সম্ভব হচ্ছে।
বাঘা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এ উপজেলায় প্রায় এক হাজার হেক্টর জমিতে পেয়ারা বাগান রয়েছে। এর মধ্যে উপজেলার দুটি পৌর সভা এবং ছয়টি ইউনিয়ন মিলে যে পরিমান পেয়ারা চাষাবাদ হয়েছে তার সম পরিমান চাষ হয়েছে পদ্মা বিধৌত চকরাজাপুর ইউনিয়নে। তাঁদের মতে, পেয়ারা লাভজনক ফল হওয়ায় এর ব্যবকতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বাঘার পেয়ারা চাষি শফিকুল ইসলাম ছানা বলেন, গত তিন বছর পূর্বে আমার দুই বিঘা জমিতে জৈব ও রাসায়নিক সার প্রয়োগ করে জমি প্রস্তুত করার পর প্রায় এক হাজার পেয়ারা গাছ লাগায়। বর্তমানে সেসব গাছে ফল আসা শুরু হয়। তাঁর মতে, সামনে বছর থেকে বাগানে পরিপুর্ণ ভাবে পেয়ারা ধরা শুরু হবে। এখানে বাগানে এসে ব্যবসায়ীরা মন হিসাবে পেয়ারা কিনে নিয়ে যায়। এরপর বাজারে খুচরা ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রয় করছেন।
এদিকে উপজেলার বাউসা গ্রামের তরুন উদ্যোক্তা শাহিন ইকবাল ও শফিক বলেন, আমাদের দেশে সারাবছর বিভিন্ন ধরনের ফলের চাষ করা হয়। তার মধ্যে পেয়ারা অন্যতম একটি সু-স্বাদু ও পুষ্টিকর ফল। দেশের প্রায় সব জেলাতেই কমবেশি এই ফল চাষ হয়ে থাকে। তবে মাটি গুনে রাজশাহী বাঘার পদ্মার চরাঞ্চর-সহ সমতল এলাকার সকল ইউনিয়নে চাষকৃত পেয়ারার স্বাদ সু-মিষ্ট হওয়ার কারনে এ উপজেলার পেয়ারা অন্য যে কোন অঞ্চলের চেয়ে একটু বেশি দাবি বিক্রি করা হয়ে থাকে। তাঁদের মতে, জমিতে পেয়ারা বাগান করার তিন থেকে চার বছর পর ব্যাপক উৎপাদন শুরু হয়।এ বিষয়ে বাঘা উপজেলা কৃষি অফিসার শফিউল্লাহহ সুলতান বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মাটির নিচে থাকা খনিজ সম্পদ সেই দেশের অর্থনৈতিক চিত্র পুরোপুরি বদলে দেয়। কিন্তু আমাদের দেশে খনিজ সম্পদ নেই। তবে আছে অত্যান্ত উর্বর মাটি। এ কারণে আমরা কৃষিতে স্বনির্ভর। তিনি কৃষিকে আরো উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিতে বৈজ্ঞানিক উপায়ে চাষাবাদ-করা সহ শিক্ষিত যুবকদের উৎসাহিত করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন বলে উল্লেখ করেন।