শুক্রবার, ২১শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সিরাজগঞ্জে ভারতীয় টিনজাত চিনি ও আখের রসে তৈরি হচ্ছে  ভেজাল পাটালি গুড়

সিরাজগঞ্জে ভারতীয় টিনজাত চিনি ও আখের রসে তৈরি হচ্ছে  ভেজাল পাটালি গুড়

৯৪ Views

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি   :; রাজশাহী নাটোর ও সিরাজগঞ্জের তাড়াশ অঞ্চলের  খেজুরের গুড়ের সুখ্যাতি দেশব্যাপী। শীতের তীব্রতা বাড়ার সাথে সাথে  পাটালী গুড়ের চাহিদা বেড়ে যায়।শীত মৌসুমে দুধের পিঠা, তেলের পিঠা, ভাপা পিঠাসহ রকমারি পিঠা খাওয়ার ধুম পড়ে যায় ।

শহর থেকে শুরু করে গ্রামাঞ্চলে সকল শ্রেনী মানুষের  মাঝে ঐতিহ্যের প্রথা দুধের পিঠা ঘরে ঘরে তৈরি করা হয়। শীত এলেই জামাই-ঝি,আত্বীয় স্বজনদের নবান্নের পিঠায় আতিথিয়তার পুর্ণতা পায়। এই জন্য পিঠা তৈরির প্রধান উৎস পাটালী গুড়ের কদর সর্বজনীন। শীত মৌসুমে রমরমা থাকে খেজুরের গুড়ের বাজার। খেজুরের রসের পাটালী গুড় খুবই সুস্বাদু হওয়ায় এই গুড়ের জনপ্রিয়তা সকল মানুষের মাঝে। খেজুরের গুড় উৎপাদনের চেয়ে  চাহিদা বেশি হওয়ায় ব্যবসায়িরা ভেজাল করতে নানা  কৌশল অবলম্বন করে।সিরাজগঞ্জের সদরে খেজুর গাছ চোখে না পড়লেও ভেজাল খেজুরের গুড়ের কমতি নেই।

বিভিন্ন কোম্পানির ভারতীয় টিনজাত চিনির ক্যামিকেলের সাথে আখের  রস মিশ্রিত  করে ফিটকিরি  হাইড্রোজ সোডা ও আটা বা সুজিসহ  মিশিয়ে সুদর্শন পাটালী গুড় তৈরি করে চড়া দামে বিক্রি করায় ভোক্তারা প্রতারিত হচ্ছে। সুস্বাদু পাটালী গুড়ের পরিবর্তে ভারতীয় টিনজাত চিনির ক্যামিকেলের সাথে আখের রসে মিশ্রিত পাটালী গুড় বাজারে বিক্রি হচ্ছে। আখের রসের পাটালী গুড় চেনার কোন উপায় নেই। ওই সকল কেমিক্যাল মেশানো পাটালী গুড় কিনে একদিকে ক্রেতারা প্রতারিত হচ্ছে অন্যদিকে সেই গুড় খেয়ে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে সাধারণ মানুষ। ভেজাল পাটালী গুড় বিক্রি করে লাভবান হচ্ছে ব্যবসায়িরা। সরেজমিনে গিয়ে দেখাযায়, তাড়াশের প্রত্যান্ত অঞ্চল ও সদর উপজেলার ছোনগাছা ইউনিয়নের পাঁচঠাকুরী ও পারপাচিল ব্রাক্ষন বয়ড়া গ্রামে আখের রস ও ভারতীয় টিনজাত চিনি মিশিয়ে

জ্বাল করে ঘন করার পর আটা ও পরিস্কার করার জন্য ফিটকিরি হাইডোস সোডা সুজিসহ কেমিক্যাল মিশিয়ে সুদর্শন  হুবহু পাটালী গুড় তৈরি করে বাজারজাত করা হচ্ছে। সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ছোনগাছা, মেছড়া, কাওয়াকোলা কাজিপুরের নাটুয়ারপাড়া নলিন রুপসার চরসহ যমুনার বিভিন্ন  চরাঞ্চলের হাট বাজারে ব্যবসায়ীরা এ সকল গুড় ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা দরে বিক্রি করছেন বলে স্থানীয়রা জানান। তাদের অভিযোগ প্রতি সপ্তাহে ছোনগাছা  ও পাঁচ ঠাকুরী বাজারে ১০ টনের  ট্রাকে করে প্রায় ১০০ টন ভারতীয় টিনজাত এসব চিনি আমদানি করে বাজারজাত করছে। প্রতি কেজি ৯৬ টাকা দরে ২৫ কেজির চিনির টিন  ভারত থেকে এলসির মাধ্যমে আমদানি করা হয় বলে ব্যবসায়ীরা জানান।

সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট  জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক

ডা. আকিকুন নাহার বলেন, কেমিক্যাল মানব দেহে মারাত্মক ক্ষতি করে। এসব  কেমিক্যাল মিশ্রিত গুড় খেয়ে ডায়রিয়া, আলসার, কিডনি, হার্ট ও লিভার নষ্ট হবার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই এসব ভেজাল গুড়ের ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান সচেতন মহল।

Share This