শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ধান কাটা-মাড়াইয়ে ব্যস্ত বীরগঞ্জের কৃষকরা

ধান কাটা-মাড়াইয়ে ব্যস্ত বীরগঞ্জের কৃষকরা

৪৯ Views

খায়রুন নাহার বহ্নি,বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি : দিনাজপুরের বীরগঞ্জে মাঠজুড়ে এখন সোনালি ধানের উৎসব। শুরু হয়েছে আমন ধান কাটার মৌসুম। দলবদ্ধভাবে এখন ধানকাটা ও মাড়াইয়ের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও ধান কাটার কাজে নিয়োজিত হচ্ছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে এবার বীরগঞ্জ উপজেলায় আমন মৌসুমে রোপা আমনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল প্রায় ২৯ হাজার ৫৭৫ হেক্টর জমিতে আমণ ধানের চাষ করেছে কৃষকরা। লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয় ২৯ হাজার ৫৭৮ হেক্টর। এর মধ্যে ব্রি -৪৯ ধান,ব্রি- ৭৫ ধান,ব্রি ৮৭ -ধান,ব্রি- ৫১ ধান,বেনা ধান -৭,বেনা ধান -১৭,বেনা ধান- ২০,ক্ষীর কোন ধান,স্বর্ণা ধান চাষ করেছে কৃষকরা। ধানসহ অন্যান্য ফসল কাটা ও সংগ্রহের কাজে কৃষকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। কষ্টের ফসল ঘরে তোলার আনন্দে কৃষকদের মনে বেশ উচ্ছ্বাস দেখা যাচ্ছে, কারণ এই ফসলের উপরই নির্ভর করছে তাদের বছরের আয়ের একটি বড় অংশ।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ইতিমধ্যে অনেক কৃষকরা তাদের মাঠের পাকা আমণ ধান কেটে ঘরে তুলেছে। কৃষকরা জানান,ভালো রৌদ্র হওয়ার ফলে আমরা ধান কাটতে পারছি। বীরগঞ্জ উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় অধিকাংশ গ্রামে কৃষকরা আমন ধানের আবাদ করেছে। প্রতি বিঘাতে ১৬/১৭ মণ ধান হবে বলে কৃষকরা ধারণা করেছে। উপজেলার শিবরামপুর, পলাশবাড়ী, শতগ্রাম, পাল্টাপুর, সুজালপুর, নিজপাড়া, মোহাম্মদপুর,ভোগনগর, সাতোর,মোহনপুর ও মরিচা ইউনিয়নের বেশ কয়টি গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে পুরুষের পাশাপাশি নারীরা ধান কাটা কাজে ব্যস্ত সময় পার করেছেন। সুজালপুর ইউনিয়নের বোয়ালমারী গ্রামের সতীশ বর্মন,শিবরামপুর গ্রামের জালাল উদ্দীন , শীতলাই গ্রামের পদ্মা রায়,সানোয়ারসহ অনেক কৃষকরা জানান,গত বছরের তুলনায় এবছরে বৃষ্টির পানি কম থাকলেও ফলন ভালো হয়েছে। বিঘা প্রতি জমিতে ১৮ /১৯ হাজার টাকা খরচ করে প্রায় ১৭/১৮ মণ ধান পাবে বলে তারা ধারণা করেছে। এছাড়া পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও শ্রম হিসাবে কাজ করে থাকে। কৃষক সতীশ বর্মন বলেন, জমিতে আমণ আবাদের চাষ করেছে। ধানের ফলন দেখে আমি আনন্দে আত্মহারা হয়েছি। অনেক কৃষকরা জানান, এবছরে বৃষ্টির পানি কম থাকলেও প্রতি বিঘাতে ১৬/১৭/মণ ধান আশা করছি। বাজারের দরও ভালো। আমাদের প্রতি বিঘা জমিতে ধান রোপন শুরু থেকে ঘরে তোলা পর্যস্ত প্রায় ১০/১২ হাজার টাকা খরচ হলেও আনন্দ পাচ্ছি। জমিতে মটরের সেচ দিয়ে খরচ বেশী হলেও ধানের ফলন হয়েছে। কৃষি শ্রমিকরা বলেন,প্রতিদিন সকাল ৭ টা থেকে বেলা ১ টা পর্যন্ত ৫ শত টাকা করে শ্রমের মজুরি পায় ও দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত দেড়শত টাকা শ্রমের মজুরি আসে। আমরা গরীব ঘরের স্ত্রী হওয়ায় ঘরে বসে থাকতে পারি না। শ্রম দিয়ে অর্থ উপার্জন করে স্বামী সন্তাানদের নিয়ে আমরা ভালই সুখে আছি। আমরা বাড়ি বসে না থেকে কাজ করে খেটে খেয়েও মনের মাঝে একটু সুখ আনন্দ খুজে পায়। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শরিফুল ইসলাম জানান,এবার বীরগঞ্জ উপজেলায়
২৯ হাজার ৫শত ৭৫ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ধান চাষ করেছে কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ফলন ভালো হয়েছে। ইতিমধ্যে কোন কোন এলাকায় কৃষকরা তাদের মাঠের পাকা ধান কেটে ঘরে তুলছে।

Share This

COMMENTS