আগামীকাল নাচোলের রাণী ইলামিত্রের ২২তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হবে
মোঃ ইব্রাহীম, স্টাফ রিপোটার- আগামীকাল রবিবার চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলের রাণীমা খ্যাত তে-ভাগা আন্দোলনের বীরাঙ্গনা নেত্রী রাণী ইলামিত্রের ২২তম মৃত্যু বার্ষিকী পালিত হবে। রাণী ইলামিত্র স্মৃতি সংসদ ১৩ অক্টোবর রবিবার ইলামিত্রের স্মৃতি বিজড়িত রাওতাড়ায় ইলামিত্র স্মৃতি সংগহশালা পাঙ্গনে তাঁর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে প্রার্থনা ও আলোচনাসভার আয়োজন করেছেন। উল্লেখ্য, জেলার বরেন্দ্র অঞ্চল নাচোলে সাঁওতাল তুড়ি, ঝাঙড়, ওরাও, পৈলা, কোল, মাহাতো, বর্মণসহ প্রায় ১৪টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি সম্প্রদায়ের লোকেরা বর্গচাষী হিসেবে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিল। ততকালীন পূর্ব পাকিস্তানের চাঁপাইনবাবগঞ্জ (ততকালীন চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহুকমা ও মবৃহত্তর মালদহ জেলা)র বরেন্দ্র অঞ্চলের মরুময় জমিতে শুধু একটি ফসল(ধান) উৎপাদন হত। জমিদারী প্রথা বিলুপ্ত হলেও ভূমি মালিকরা জমিতে উৎপাদিত ফসলের ন্যয্য অংশ বর্গা চাষীদের দিতেন না। এ নিয়ে বর্গা চাষী ও ভূমি মালিকদের মধ্যে প্রায়ই বিরোধ লেগেই থাকত। ওই সময় পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে স্বরাজ আন্দোলন চলছিল। কিন্তু ততকালীন পাকিস্তান পুলিশ আন্দোলন ঠেকাতে দমন-পীড়ন চালিয়ে যাচ্ছিল। ঠিক ওই সময় নাচোলে কেন্দুয়া, ঘাষুড়া, রাওতাড়া, ধরইল, শ্যামপুর এলাকায় রাণী ইলামিত্রের স্বামী রমেন মিত্রের জমিদারী পরগনায় বর্গা চাষীদের দুঃখ-দুর্দশার কথা বিবেচনা করে জমিতে উৎপাদন খরচ এক ভাগ, বর্গা চাষীর জন্য এক ভাগ ও জমি মালিকের জন্য এক ভাগ এ তিনভাগা(তে-ভাগা) ণীতি প্রবর্তণ করেন। কট্টর বাম পন্থী রাণী ইলামিত্রের এ তে-ভাগা নীতি অন্যান্য জমিদার(ভূমি মালিক)গণ মেনে নিতে পারেননি। ওই সময় পাকিস্তান সরকারের পুলিশের সাথে বর্গা চাষীদের সংঘর্ষ হয়। রাস্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্তের অভিযোগে রাণী ইলামিত্রের নামে হুলিয়া জারি করে পাকিস্তান সরকার। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির বর্গা চাষীরা। এক পর্যায়ে পাকিস্তান পুলিশ বাহিনীর হাতে আটক ও নির্যাতনের শীকার হন রাণী ইলামিত্র। পরে অবশ্য মুক্তি পান ইলামিত্র। সেই থেকে নাচোলের বর্গা চাষীদের নিকট ইলামিত্র নাচোলের রানীমা হিসেবে চিহ্নিত হন। ১৩ অক্টোবর নাচোলের হিন্দ-মুসলিম সম্প্রদায়কে নিয়ে রাণী ইলামিত্র স্মৃতি সংসদ বীরাঙ্গনা ইলামিত্রের ২২তম প্রয়ান দিবসে তাঁকে শ্রদ্ধা ভরে স্মরণ করছেন।