বুধবার, ১২ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

গোবিন্দগঞ্জের প্রতি বছর বাড়ছে তামাক চাষ\ ঝুকিতে স্বাস্থ্য ও পরিবেশ

গোবিন্দগঞ্জের প্রতি বছর বাড়ছে তামাক চাষ\ ঝুকিতে স্বাস্থ্য ও পরিবেশ

১৫ Views

গাইবান্ধা প্রতিনিধি; সুযোগ সুবিধা ও নিশ্চিত আর্থিক লাভের আশায় গাইবান্ধার পলাশবাড়ী ও গোবিন্দগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় প্রতি বছর বাড়ছে তামাক চাষ। তামাক পাতা প্রক্রিয়াজাত করনে নানা স্বাস্থ্য ঝুঁকি জেনেও শুধু লাভের আশায় এই ক্ষতিকারক ফসল চাষ করতে আগ্রহী হচ্ছেন কৃষকরা। কোন ভাবেই তামাক চাষ বন্ধ না হওয়ায় এবং বাতাসে তামাকের নিকোটিন মিশে যাওয়ায় স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পরছে চাষি সহ সাধারণ মানুষ।

গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার হোসেনপুর,কিশোরগাড়ী,মোহদীপুর ও বেতকাপা এবং গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সালমারা, মহিমাগঞ্জ, হরিরামপুর, নাকাই, রাখালবুরুজ, তালুক কানুপর, শিবপুর, কোচাশহর, কামাদহ, গুমানীগঞ্জ, সাপমারা, দরবস্ত, কাটাবাড়ী ইউনিয়নের করতোয়া নদীর চর এলাকায় প্রতিবছরই বৃদ্ধি পাচ্ছে তামাক চাষ । আর্থিক ভাবে লাভবান হওয়ায় প্রচলিত বিভিন্ন ফসলের তুলনায় কৃষক পর্যায়ে তামাকের আবাদ সম্প্রসারণ ঘটছে। এক সময় নদী তরবর্তী চর গুলোতে তামাক চাষ বেশি হলেও এখন তা সমতলের তিন খেকে চার ফসলী জমিতে ছড়িয়ে পড়েছে। তামাক চাষ ও প্রক্রিয়াজাত করনে স্বাস্থ্য ঝুঁকি এবং পরিবেশ জন্য ক্ষতিকর হলেও এ চাষ আবাদে নিরাপদ সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণে সচেতন নন চাষিরা। তামাক রোপন ও পরিচর্যায় চাষিরা কোন ধরণের সুরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করছে না। এছাড়াও ক্ষেত থেকে তামাক পাতা উত্তোলনের সময় হাতে গেøাবস, মুখে মাস্ক ব্যবহার করছেনা তারা। জমি থেকে তামাক পাতা তুলে খোলা উম্মুক্ত স্থানে শুকানোর ফলে বাতাসে মিশছে তামাকের পাতায় থাকা ক্ষতিকর নিকোটিন।

সাপামারা ইউনিয়নের মেরী গ্রামের রুবেল মিয়া জানান তামাক আবাদ ও প্রক্রিয়াজাত করণের সময় চাষিরা শারীরিক নানা সমস্যার শিকার হয়। এর মধ্যে শ^াস কষ্ট, হাত পায়ে ঘা, খাওয়ার রুচি কমে যাওয়া অন্যতম। অনেক সময় ভাত খেতে তিতা লাগে। কিন্ত কিছু করার নেই। কারণ নির্ধারিত মূল্যে তামাক বিক্রির নিশ্চয়তা রয়েছে। যা অন্য ফসলে নেই। এ জন্য তামাক আবাদ ছাড়তে পারছিনা।
সাতানা বালূয়া, রামনাথপুর গোশাইপুর দুর্গাপুর বিশ^নাথপুর গ্রামের তামাক চাষিরা বলেন আর্থিক ভাবে লাভবান হওয়ার আশায় স্বাস্থ্য ঝুঁকি জেনেও তামাক চাষ করছি।

গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মাসুদার রহমান আকন্দ তামাক চাষের ফলে ফসলি জমির মাটি, পরিবেশ ও মানবদেহের নানা ধরণের ক্ষতির পাশাপাশি স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।

গাইবান্ধা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ খোরশেদ আলম বলেন তামাক চাষে ক্ষতিকর ও কুফল দিক তুলে ধরে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের মাঝে প্রচারনা চালানো সহ নানা ধরণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আগামীতে তামাক আবাদ শুণ্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে কাজ করছে কৃষি বিভাগ।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সুত্রে জানা গেছে এ বছর জেলায় প্রায় ২৬ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়েছে। সরকারী-বেসরকারী ভাবে তামাক চাষের ক্ষতিকর দিক গুলি তুলে ধরে কৃষকদের সচেতন করার মাধ্যমে তামাক চাষ নিরুৎসাহিত করতে পারলে অধিক খাদ্য উৎপাদনের পাশপাশি কমবে স্বাস্থ্য ঝুঁকি।

Share This

COMMENTS