রবিবার, ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পেকুয়ার করিয়ারদ্বিয়া নদীতে ডাকাতের উপদ্রবে অতঙ্কিত জনগন

পেকুয়ার করিয়ারদ্বিয়া নদীতে ডাকাতের উপদ্রবে অতঙ্কিত জনগন

২০৭ Views
স্টাফ রিপোর্টারঃ  কক্সবাজার জেলার পেকুয়া উপজেলার করিয়ারদ্বিয়া নদীতে আতঙ্কজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে জলদস্যুদের উপদ্রব। হরহামেশাই ঘটছে ডাকাতির ঘটনা। দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির দূর্বলতার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে জেলফেরত ও বিভিন্ন এলাকার চিহ্নিত পেশাদার ডাকাত সদস্যরা তাদের বিভিন্ন এলাকার সাঙ্গ পাঙ্গদের নিয়ে পুনরায় একের পর এক ডাকাতির ঘটনা সংঘটিত করে চলছে। তাদের নেতৃত্বে ঘটছে নিয়মিত ডাকাতির ঘটনা।
১৪ অক্টোবর (সোমবার) রাতে উপজেলার উজানটিয়া ইউনিয়নের করিয়ারদ্বিয়া নদীতে হেদাতাবাদ নামক ঘাট এর পশ্চিম পার্শ্বে দুইটি বড় আকারের লবণের কার্গো বোটে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে।
খোজঁ নিয়ে জানা গেছে, ডাকাত দল বোটের নাবিকদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে কেবিন ঘরে হাত,পা বেঁধে বোট থেকে অনেক মেশিনারি পার্ট সহ ১২/১৫ লক্ষ টাকার গুরুত্বপূর্ণ মালামাল লুটপাট করে নিয়ে যায় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ডাকাতি হওয়া দুটি ট্রলারে মধ্যে একটি উজানটিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নং ওয়ার্ডের সদস্য জাফর আলম চৌধুরীর মালিকানাধীন অপরটি করিয়ারদ্বিয়া এলকার খলিলুর রহমানের ছেলে সাহাব উদ্দীনের মালিকানাধীন বলে জানা যায়।
ডাকাত দলের মধ্যে বেশ কজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। পরিচয় পাওয়া ব্যক্তিরা সবাই একাধিক ডাকাতি মামলার আসামি, পেশাদার ডাকাত বলে জানা যায়। ডাকাতির ঘটনায় পরিচয় পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন, করিয়ারদ্বিয়া এলাকার মৃত আনছারুল করিমের ছেলে মজিবুল হক প্রকাশ মুজিব্যা ডাকাত (৪০), একই এলাকার মৃত নুরুচ্ছফার ছেলে শাহাজাহান ডাকাত (৩৬), উজানটিয়া ২নং ওয়ার্ড  মিয়াপাড়া এলাকার বাইদুল হকের ছেলে বোরহান উদ্দিন (৩০), মহেশখালী নলবিল এলাকার কুখ্যাত জনু ডাকাত (৪০), মাতারবাডী ষাট ডেইল এলাকার কুখ্যাত  ইলিপ মিয়া (৩৮), ইলিপ ডাকাত সহ অজ্ঞাত ১০/১৫ জন লোক এই ডাকাতিতে অংশ নিয়েছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে। ডাকাতির ঘটনায় বোটের মালিক শাহাবুদ্দিন বাদী হয়ে চিহ্নিত ডাকাতদের নাম উল্লেখপুর্বক অজ্ঞাতদের আসামী করে পেকুয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। এসব ডাকাতির ঘটনায় উল্লেখিত ডাকাতদের সাথে পেকুয়ার রাজাখালীর চিহ্নিত অনেক ডাকাতের নামও শোনা যাচ্ছে। পতীত স্বৈরাচার সরকারের দোসর দুর্ধর্ষ যুবলীগ নেতা টিপু বাহিনীর বেশ কয়েকজন পেশাদার ডাকাত সদস্যদের নামও এ ডাকাতির ঘটনায় বেশ আলোচিত হচ্ছে, যার মধ্যে অন্যতম রাজাখালী মাতবর পাড়ার  মোসলেহ উদ্দিনের ছেলে ওসমান গণি, মৃত ইমাম উদ্দিনের ছেলে জয়নাল আবেদীন সহ আরো কয়েকজন। তাদের গড ফাদার দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, ডাকাত টিপু পলাতক থাকায় ওসমান-জয়নালরা তাদের সঙ্গি সাথি সহ তাদের এলাকা ত্যাগ করে করিয়ারদ্বিয়া এলাকায় অবস্থান নিয়ে ডাকাতিসহ বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত বলে জানা গেছে, প্রশাসনের সুষ্ঠ তদন্তে অভিযুক্ত ডাকাত সহ অন্যান্যদের নামও বেরিয়ে আসবে। ডাকাতির পর ডাকাত দলের বিরুদ্ধে  পেকুয়ায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বোট মালিক জাফর আলম চৌধুরী ও সাহাব উদ্দীন।
বোটের মালিক ইউপি সদস্য জাফর আলম চৌধুরী বলেন, করিয়ারদ্বিয়া বিচ্ছিন্ন দ্বীপ প্রশাসনের নজরদারি করতে পারছে না। আগে কোস্ট গার্ড ও নৌ-পুলিশের টহল জোরদার ছিল। এখন কমে যাওয়ায় বিভিন্ন এলাকার বড় বড় ডাকাতরা একত্রিত হয়ে নিয়মিত ডাকাতি করছেন।
গত রাতে আমার ও সাহাব উদ্দীনের দুইটি লবণ ট্রলারে ডাকাত দল হানা দিয়েছে।
মাঝিসহ কর্মচারীরা ঘুমন্ত অবস্থায় তাদের মারধর করেছে মেশিনারি পার্ট, নগদ টাকা সহ দুইটি বোট থেকে ৮/১০লক্ষ টাকার মালামাল লুট করেছে।  করিয়ারদ্বিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমে বসতি ও মানুষের আনাগোনা কম থাকায় ডাকাতরা আস্থানা গেড়েছে নদীর পারে। চিহ্নিত দুস্কৃতিকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে ডাকাতীর সাথে জড়িত সকলকে সুষ্ঠ তদন্তপুর্বক গ্রেফতার করে এলাকার জনগনকে ডাকাতের উপদ্রব থেকে রক্ষা করতে এলাকাবাসী প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন।
Share This

COMMENTS