শনিবার, ১৫ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

যমুনা নদী থেকে বিদ্যুৎশকে অবৈধভাবে মৎস্য নিধন  হুমকিতে দেশীয় প্রজাতির মাছ

যমুনা নদী থেকে বিদ্যুৎশকে অবৈধভাবে মৎস্য নিধন  হুমকিতে দেশীয় প্রজাতির মাছ

Views
এইচএম মোকাদ্দেস,সিরাজগঞ্জ  ::  যমুনা নদী থেকে অভিনব কৌশলে পানিতে বিদ্যুৎ শক দিয়ে অবৈধ পন্থায় কতিপয় অসাধু মৎস্য ব্যবসায়ীরা মৎস্য নিধন করে বাজারজাত করার মহাউৎসবে মেতে উঠেছে । যেন দেখার কেউ নেই। জানাযায়, যমুনা নদীর মিঠা পানিতে জন্ম নেয়া সুস্বাদু মাছের চাহিদা রয়েছে সমগ্র দেশ জুড়ে।শুস্ক মৌসুমে যমুনা নদীর পানি কমে যাওয়ায় যমুনার বুকে বিশাল আয়তনজুড়ে জেগে উঠেছে বালুচর। প্রমত্ত কড়াল গ্রাসী যমুনা আজ মরা নদীতে পরিণত হয়েছে। পানি শূন্যতার কারণে মৎস্য শুন্য হয়ে পড়ায় মাছের আকাল দেখা দিয়েছে অত্র অঞ্চলে। মিলছেনা আগের মতো আর মাছ। সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর উত্তরে কাজিপুরের বিলচতল,  মেঘাই, শুভগাছা, সদর উপজেলার রতনকান্দি, কালিয়া হরিপুর ইউনিয়নের সম্মুখ ভাগে নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে, বিশেষ করে যমুনা সেতুর আশেপাশে বিভিন্ন পয়েন্টে দিনরাত একটি অসাধু মৎস্য ব্যবসায়ী চক্র মাছের খাদ্যে ভারতীয় ঔষধীয় মিশিয়ে ওইসকল খাদ্য যমুনা নদীর পানিতে ছিটিয়ে দেওয়ার কিছু সময় পর পানির নিচে থাকা দেশীয় প্রজাতির ইলিশ, চিংড়ি,  বেলে, বাতাশি, ট্যংড়া, গোলশা, বাঁচা, ঘাইরা,খসল্লা, রিঠা, আইড়, বোয়াল, বাইম, গোচইসহ ছোট-বড় বিভিন্ন প্রজাতির মাছগুলো খাদ্য লোভে পানির উপরে উঠে আসে। এসময় অসাধু মৎস্য শিকারকারীরা সুকৌশলে পানিতে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যাটারির মাধ্যমে বিদ্যুৎ এর শক দেয়ার ফলে নির্দিষ্ট আয়তনে থাকা  দেশীয় প্রজাতির ছোট-বড় মাছগুলো মরে পানির উপরে ভেসে ওঠে। এসময় চাকতির মতো গোলাকার ও তিনকোন বিশিষ্ট জাল দিয়ে এই মাছগুলো ধরে  বিভিন্ন টিনের পাত্র ও পাতিল বোঝাই করে ওই সকল মৎস্য নিধনকারি অসাধু চক্রটি আড়তসহ বিভিন্ন বাজারে বাজার জাত করে এবং বিভিন্ন হোটেলে বিক্রয় করায় তা মহাউৎসবে পরিনত হয়েছে। এতে যমুনার দেশীয় প্রজাতির ছোট-বড় সুস্বাদু মাছগুলো বিলুপ্তির পথে। বাজারে মাছের আকাল দেখা দিয়েছে বলে জানাযায়। স্থানীয় রমজান আলী, আলী আজগর শেখ, সাগর শেখ, ইকবাল হোসেন,আশরাফুল আলম, আবু সামা শেখসহ অনেকেই জানান, যমুনা নদীর সুস্বাদু মাছের চাহিদা দেশজুড়ে। যমুনা নদীর বিভিন্ন স্থান থেকে দিনের তুলনায়  রাতের আধারে প্রায় প্রতিদিনই রাতভর অভিনব কৌশলে অবৈধ পন্থায় বিভিন্ন প্রজাতির মৎস্য নিধন করছে কতিপয় অসাধু মৎস্য শিকারীরা। এতে দেশীয় প্রজাতির মৎস্য আহরণ হুমকির মুখে ধাবিত হচ্ছে বলে মৎস্য সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ করেন। তারা জানান,  জেলা ও উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে যমুনা নদীর বিভিন্ন প্রজাতির সুস্বাদু মাছ ধ্বংস প্রতিরোধে   কোনরূপ অভিযান বা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন না করায় এই মৎস্য নিধন মহামারি আকার ধারণ করেছে। স্থানীয় সচেতন মহলের দাবী, হুমকির মুখে ধাবিত দেশীয় প্রজাতির মৎস্য নিধন বন্ধকরণে জেলা ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে দ্রুত অভিযান অব্যহত রেখে অবৈধ পন্থায় মৎস্য নিধনকারি ওই সকল অসাধু চক্রদের আটক করে আইনের আওতায় এনে কঠিন শাস্তি প্রদানের জোরদাবী জানিয়েছেন সিরাজগঞ্জের সচেতন মহল।

সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ২০১৯ সালের যোগদানের পর কয়েক বার যমুনা নদীতে অভিযান চালিয়েছি কিছু চয়না ও কারেন্ট জাল আটক করে জালিয়ে দিয়েছি। আর এ ছাড়াও বিভিন্ন স্থানে দৌড় ঝাঁপ পারায় অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব হয় না। প্রায় প্রতিদিনই যমুনা নদীতে অভিনব কৌশলে মৎস্য নিধনের বিষয়ে তিনি অবগত নন বলেও জানান।

Share This

COMMENTS