ক্ষমতাকে শ্বশুরবাড়ির নিয়ামত ভাববেন না, এটা জনগণের আমানত -জামায়াত আমির
৮৩ Views
ইসাহাক আলী, নাটোর- জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ক্ষমতাকে শ্বশুরবাড়ির নিয়ামত ভাববেন না, এটা জনগণের ও রাষ্ট্রের আমানত। এই আমানতের খেয়ানত করবেন না। অথচ স্বাধীনতার পরে দফায় দফায় যারা ক্ষমতায় এসেছে তারা আমানতের খেয়ানত করেছে। কম-বেশি সবাই এজাতিকে কষ্ট দিয়েছে। সবচেয়ে বেশি কষ্ট দিয়েছে গত পনেরো বছর। দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর দিয়ে শুরু করে একটার পর একটা হত্যা কান্ড চলিয়েছে তারা (আওয়ামী লীগ)। সবশেষ ২০২৫ সালে নিজের দেশের মানুষের উপর নির্মম নির্যাতন চালিয়েছে।
শুক্রবার বেলা ১২ টায় নবাব সিরাজ-উদ- দ্দৌলা সরকারি কলেজ মাঠে নাটোর জেলা জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শফিকুর রহমান বলেন, এতো মানুষ জিবন দিয়েছে কেনো, তারা চেয়েছে বিষম্যহীন সমাজ। তারা বলেছে, আমরা চাঁদাবাজি বিরুদ্ধে , সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে। দশমাসের সন্তান থেকে শুরু করে ৮০ বছরের বৃদ্ধরা জুলাই আন্দোলনে নেমেছিল। সকল শ্রেণী পেশার মানুষ আন্দোলনে সংহতি জানিয়েছিল।
আওয়ামী লীগ বিভিন্ন দলের দেশ প্রেমিক নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে। নির্বাচন তাদের জন্য, যারা দেশের মাটিকে আমানত মনে করে। আমরা চাই অতিদ্রুত সংস্কার করে দেশে একটি নির্বাচন দিক। আশা করি তারা সেই দিকেই যাবে।
জামায়াতের আমির বলেন, যারা বাংলাদেশে অকাম-কুমাম করেছে, তারাই মানুষকে চোর বলতো। যারা মানুষের সম্পদ, ইজ্জতের ওপর হাত দিচ্ছে না তাদের মানুষ গ্রহণ করবে। পট পরিবর্তনের পর নেতাকর্মীদের বলেছি, সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে। আলহামদুলিল্লাহ, সবাই সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে ছিল। আন্দোলনে হতাহতদের পাশে দাঁড়িয়েছে। আমরা যুবকের হাতকে দেশ গড়ার হাতে পরিণত করবো।
তিনি আরো বলেন, আমরা বিদেশি বন্ধু চাই, প্রভু চাই না। আমরা পিন্ডির হাত থেকে মুক্ত হয়েছি অন্য কারো হাতে যাওয়ার জন্য নয়। কারো লাল চোখ আমরা দেখতে চাই না। জামায়াত ইসলাম বৈষম্য হীন মানবিক সমাজ করতে চায়। আমরা বিভেদ নয়, ঐক্য চাই। এদেশের হিন্দু-মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবাই গর্বিত নাগরিক।
ডাক্তার শফিকুর রহমান আরো বলেন, নাটোর একটি ঐতিহাসিক জেলা । অথচ এই জেলার কোনো সুসময় উন্নয়ন হয়নি। এখানে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত নেই। সরকারকে এ ব্যাপারে নজর দিতে হবে। আর জামায়াত যদি কোনদিন রাষ্ট্রের উন্নয়নের এই দায়িত্ব পায় তাহলে জাম াত সুষম নীতিতে উন্নয়ন করবে। আর জামায়াত যদি বিরোধী দলে থাকে তাহলে , সুষম উন্নয়ন না হওয়ার প্রতিবাদ আপনাদের সাথে কন্ঠ মিলিয়ে তাল মিলিয়ে করবে, উন্নয়ন আদায় করে নেওয়া হবে।
স্বৈরাচার পতন আন্দোলনে শহী দ ও আহতদের সহায়তার জন্য সরকারের দৃশ্যত কার্যক্রম দেখতে চায় জামাত। এটি সরকারের অগ্রাধিকার ভিত্তিক দায়িত্ব।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জামাতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান বলেন, অন্যায় অবিচার ও জুলুম নির্যাতন করে কোন দলকে নিঃশেষ করা যায় না । জামাতে ইসলামী তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ,। জামাতের নেতাকর্মীদের ফাঁসি দিয়ে ও নির্যাতন করে এদেশ থেকে জামাতকে নিঃশেষ করা যায়নি বরং জামাত এখন ক্ষমতার দ্বারপ্রান্তে। যদি জামাতের কর্মীরা দৃঢ়তার সাথে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় মনোবল দিয়ে কাজ করে তাহলে জনগণ তাদের দিকে পথ চেয়ে আছে। তাই নেতাকর্মীদের আরো ধৈর্য ও আন্তরিকতা নিয়ে কাজ করতে হবে।
জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক ড. মীর নুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, জামায়াতের ইসলামের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাও. রফিকুল ইসলাম খান, জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন, মোবারক হোসেন , জেলা জামাতের নায়েবে আমির ও সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অধ্যাপক ইউনুস আলী, নাবে আমি র অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন খান ও সহকারি সেক্রেটারি আতিকুল ইসলাম রাসেল প্রমুখ।
পরে বিকালে জামা তামির ডাক্তার শফিকুর রহমান স্থানীয় অনিমা চৌধুরী অডিটোরিয়ামে এক সুধী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।