হাতাহাতি , হট্টগোল ও মঞ্চ ভাঙচুরের মধ্য দিয়ে নাটোরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের সমাবেশ ও মতবিনিময় সভা
৬২ Views
নাটোর প্রতিনিধি : হট্টগোল, হাতাহাতি, চেয়ার ও মঞ্চ ভাঙচুর এর মধ্য দিয়ে নাটোরে শেষ হয়েছে বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের সমাবেশ ও মতবিনিময় সভা।
বুধবার দুপুর দুইটার দিকে নাটোর নবাব সিরাজউদ্দৌলা সরকারি কলেজ মাঠ তৈরি মঞ্চ ও চেয়ার ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। পরে বিকালে ওই মঞ্চেই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ঢাকা থেকে আসা কেন্দ্রীয় সমন্বয়করা সেখানে বক্তব্য রাখেন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, অনেক রক্ত ত্যাগের বিনিময়ে আমরা যে নতুন স্বাধীনতা পেয়েছি তা সবার জন্য কাজে লাগাতে হবে। দেশকে উন্নয়ন ও অগ্রগতির দিকে এগিয়ে নিতে এখন আমাদেরকে ঘুমিয়ে রাখতে হবে। দেশের স্বৈরাচারের পতন হয়েছে আর কোন স্বৈরাচারী শক্তিকে মাথা তুলে দাঁড়াতে দেওয়া হবে না। ছাত্ররা আর কোন বিশৃঙ্খলার সাথে জড়িত হবে না। এখন আমাদের দেশ গঠনের সময়। যে সমস্ত শহীদ ও আহত পরিবার রয়েছেন তাদের পাশে সরকারের সাথে ছাত্রসমাজ তাদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সুখ-দুঃখে পাশে দাঁড়াবে। সামান্য বিশৃঙ্খলার জন্য দুঃখ প্রকাশও করেন নেতৃবৃন্দ।
এর আগে দুপুর একটার দিকে শহরের অনিমা চৌধুরী অডিটোরিয়ামে নাটোরের ছাত্র আন্দোলনের অংশগ্রহনকারীদের মত বিনিময় সভায় ছাত্রদের দুই পক্ষের হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। সেই সভা চলা অবস্থায় দুপুর ২ টার দিকে দুর্বৃত্তরা এনএস কলেজ মাঠের সমাবেশের মঞ্চ ভাংচুর করে।
আয়োজকদের দাবি, অনিমা চৌধুরী অডিটোরিয়াম ছাত্রদের যে পক্ষ হট্টগোল বাধায় তারাই সেখান থেকে বের হয়ে এসে সমাবেশের মঞ্চ ভাঙচুর করে।
সদর থানার উপপরিদর্শক মোস্তফা কামাল বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পৌছতেই দুর্বৃত্তরা চলে যায়।
দুপুর নাগরিক ও শিক্ষার্থীদের সাথে কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের মতবিনিময়কালে শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
দুপুর একটার দিকে দিকে এসময় কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মো. মাহিন সরকার, কুররাতুল আইন কানিজ, ইফতেখার আলম, ফয়সাল আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আয়োজক সুত্রে জানা গেছে, অনিমা চৌধুরী অডিটোরিয়ামে ছাত্র আন্দোলনে নাটোরে নিহত শিক্ষার্থীদের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাতের পর আলোচনা শুরু হলে অন্য গ্রুপের শিক্ষার্থীরা সেখানে ঢুকে পড়ে। এরপর সবাইকে চেয়ারে বসতে বলা হলে উল্টো আয়োজকদের সঙ্গে উত্তেজিত হয়ে হয়ে পড়েন তারা।
একপর্যায়ে দু’গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হলে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এসময় ঢাকার সমন্বয়করা সবাইকে শান্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েও ব্যর্থ হয়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
তবে শিক্ষার্থীদের অন্য একটি পক্ষের দাবি, যারা প্রকৃতপক্ষে নাটোরের আন্দোলনে আহত হয়েছে তাদেরকে এড়িয়ে আজকের আয়োজনে না রাখায় ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েন শিক্ষার্থীরা, ফলে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তারা ছাত্র সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে নাটোরের কয়েকজন ছাত্র’র বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও অনৈতিক সুবিধা নেওয়ার প্রতিবাদও করেন।
তবে অনুষ্ঠান চলা আয়োজকদের দাবি বহিরাগতরা ছাত্রলীগের সাবেক কর্মী অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা তৈরি করতেই তারা এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি করেছে। অনুষ্ঠান শেষ হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে সমন্বয় করে এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এবিষয়ে কথা বলতে নাটোর সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মাহমুদা শারমিন নেলী এবং পুলিশ সুপার মো মারুফাত হুসাইনকে কল করলেও কেউ রিসিভ করেননি।