বুধবার, ১২ই মার্চ, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

<span class="entry-title-primary">নওগাঁয় সুইপার পট্টি ও নুনিয়া পট্টিতে হাত বাড়ালেই মিলছে সব ধরনের মাদক!</span> <span class="entry-subtitle">বাড়ছে সামাজিক নানান ধরনের অপরাধ</span>

নওগাঁয় সুইপার পট্টি ও নুনিয়া পট্টিতে হাত বাড়ালেই মিলছে সব ধরনের মাদক! বাড়ছে সামাজিক নানান ধরনের অপরাধ

১১৭ Views

নওগাঁ প্রতিনিধি:

নওগাঁ সদরের সুইপার পট্টি ও নুনিয়া পট্টিতে বেড়েছে মাদকের কারবার। জেলা শহরের ১৫টিরও বেশি চিহ্নিত স্পটে চলছে মাদকের রমরমা কেনাবেচা ব্যবসা। এতে শহরজুড়ে বৃদ্ধি পেয়েছে স্কুল,কলেজ পড়ুয়া ছাত্র ও যুবক মাদকসেবীর সংখ্যা। মাদকের টাকা যোগাতে জেলার সদরে প্রায়শই অপহরণের মতো ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, নওগাঁ সদরের হরিজন সুইপার পট্টি, নুনিয়া পট্টির অধিকাংশ লোক ডিসি অফিস এবং পুলিশ সুপার অফিসসহ নওগাঁর সকল সরকারী দপ্তর ও বেসরকারি অফিস ক্লিনার ঝাড়ুদার পদে চাকুরী করেন। এরা খুব সকালে অফিস গুলো পরিষ্কার করে নিজ বাসায় ফিরে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গাঁজা,চোলাইমদ,বাংলা মদ, ভারতীয় ফেন্সিডিল, ইয়াবা,হেরোইন,টেপেন্ডাডল ও ভারতীয় এ্যাম্পুল ইত্যাদি এসব মরনশীল নেশা দ্রব্য বিক্রি করে থাকে। এমনকি এসব স্পটে রমজান মাসেও চলছে ওপেনে মাদক বিক্রি। হরিজন পট্টির কিছু চিহ্নিত কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ীর নাম গুলো হলো অজয় কুমার,মিন্টু,পিলপিল,তাজ,কার্তিক,সুরুজ,সুরুজের স্ত্রী লতা তিনি ডিসি অফিসের সরকারী ঝাড়ুদার পদে চাকুরী করেন, মিলন ভাস্কর তিনিও পুলিশ সুপার নওগাঁ অফিসে ঝাড়ুদার পদে চাকুরী করেন,ড্যাবুয়া,বুয়ারা,মুন্না,রাজা,ও শান্তসহ আরো অনেকে। এদেরকে মূলত মাদক সাপ্লাই দিয়ে থাকে নওগাঁ ০৬ নং ওয়ার্ডের জোকাবিলা গ্রামের লেবু বিক্রেতা ছামছুর এর ছেলে সুমন নামে এক যুবক। ৫ আগষ্টের পর মাঠে পুলিশ প্রশাসন ছিলোনা বলে ওই সুযোগে সুমন মাঠ গুছিয়ে নিয়ে এখন পর্যন্ত মাদক সাপ্লাই দিয়ে যাচ্ছে। তার নিজ এলাকাবাসীর থেকে তথ্য নিয়ে জানা যায় তিনি হঠাৎ বড়লোক হয়ে গেছে। বাড়ি গাড়ি কিনে তিনি এখন সবাইকে ম্যানেজ করে ধুম চেয়ে মাদক বিক্রি করছে। ওদিকে নুনিয়া পট্টির মাদক সমরাঙ্গী জাকিয়া সুলতানা হেরোইনের বিরাট ডিলার, অর্চনা,পাতাশী নিষিদ্ধ ভারতীয় ফেনসিডিল বিক্রয় করে থাকে। অন্যদিকে নওগাঁ শহরের মাংস হাঁটি ও শৈলগাছী রোডের মালেকের চপ এলাকায় মৃত- জনাব আলীর প্রথম স্ত্রী ময়না, দ্বিতীয় স্ত্রীর আকলীও পট্টিতে হেরোইন সাপ্লাই দিয়ে থাকে। এবং একই এলাকায় আরেকজন বিখ্যাত ফেনসিডিল ব্যবসায়ী হারুন। এদের একটি সংঘবদ্ধ ও পাচারকারী দল নওগাঁয় তৎপর হয়ে উঠেছে। কিছুদিন থেকে হঠাৎ করে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে অপহরণ, চাঁদাবাজী, চুরি, ডাকাতি, হত্যা, ধর্ষন, মাদকের টাকা না পেয়ে আত্মহত্যা, ও ছিনতাইয়ের মতো জঘন্যতম অপরাধের ঘটনা। বাসা-বাড়ির পাশাপাশি চুরি হচ্ছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও। সেই সঙ্গে বেড়েছে মোটরসাইকেল চুরি ও চুরির পর চোরেরা চিঠি লিখে যায় গোয়াল ঘর আপনার গরু আমাদের নওগাঁয় এ ধরনের দুর্ধর্ষ ঘটনা প্রায় দেখা যাচ্ছে।
সচেতন মহল বলছেন, জেলা শহরের কলোনী ,হরিজন সুইপার পট্টি, নুনিয়া পট্টি, তাজের মোড় এলাকা, মাছ বাজার, ঔষধ পট্টি এলাকা, চকপ্রাণ,শাহী মসজিদ এলাকা, মৃধা পাড়া, কালীতলা ,আরজি নওগাঁ উত্তর পাড়া, আরজি নওগাঁ ডাঙ্গাপাড়া, ফয়েজ উদ্দিন মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজ সংলগ্ন দুর্গাপুর এলাকা,ঈদুরবটতলী সহ প্রায় ১৫টির মতো বেশি চিহ্নিত স্পটে চলছে ওপেনে মাদক কেনাবেচা। প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে বেশি করে জমে উঠে এসব এলাকায় মাদকের কারবার। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতার অভাবে মাদক সহজলভ্য হয়ে উঠেছে বলে দাবি সচেতন মহলের।
নওগাঁ সদর উপজেলার পাশাপাশি জেলার মোট ১১টি উপজেলাতেও বাড়ছে মাদকের ছড়াছড়ি। বিশেষ করে সীমান্তবর্তী উপজেলায় চলছে মাদকের রমরমা ব্যবসা। এসব মাদকের স্পষ্টগুলো বন্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এমনটাই প্রত্যাশা স্থানীয়দের।
নওগাঁ হরিজন সুইপার পট্টির ইয়াবা বিক্রেতা অজয় কুমার ও নুনিয়া পট্টির জাকিয়া সুলতানা যায়যায়দিনকে বলেন, আমরা ডিবি পুলিশ, নওগাঁ সদর মডেল থানার ওসি ও কালিতলা পুলিশ ফাঁড়ির রায়হান, বজলু কনস্টেবলসহ সবাইকে নিয়মিত টাকা দিয়ে এ ধরনের মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছি। আর আপনারা সাংবাদিক লাগলে কিছু টাকা দিচ্ছি তবে নিউজ করবেন না বলে অনুরোধ জানান।
নওগাঁ একুশে পরিষদ সামাজিক সংগঠনে সভাপতি এ্যাড.আব্দুল বারী বলেন, ছাত্র ও যুব সমাজ ধ্বংসকারী মরণ নেশা আমাদের নওগাঁ জেলায় অধিক হারে বেড়ে গেছে। আমরা আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে এসব সামাজিক কাজ গুলো সচেতন অভিবকদের মাঝে তুলে ধরবো এবং সেই সঙ্গে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী যদি একটু তৎপর হয় তবেই মাদক নির্মূল হবে বলে আমি আশাবাদী।
বিশিষ্ট ইয়াবা ব্যবসায়ী সুমনের ফোনে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ না করে কল কেটে দিয়ে থাকে।
এ বিষয়ে নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিকীর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে, তিনি সাংবাদিকের ফোন পেয়ে মাদক সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে বারবার হ্যালো হ্যালো শোনা যাচ্ছে না বলে মোবাইল ফোনটি কেটে দেয়।
নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান বলেন, এ জেলার মাদকবিক্রেতা সদস্যদের তালিকা করে নিয়মিত গ্রেফতার করা হচ্ছে সেখানে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারাও কাজ করছে। কিছুদিন আগে জেলায় একদিনে চিহ্নিত ৩০জন মাদক কারবারিকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, মাদক বন্ধে কমিউনিটি পুলিশিং এর মাধ্যমে জনসচেতনতামূলক সভাসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। মাদক বিক্রেতা পুলিশকে নিয়মিত নাকি টাকা দিয়ে থাকে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি তা অস্বীকার করে বলেন কেউ যদি পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে মাদক ব্যবসায়ীর কাছে টাকা পয়সা নিয়ে থাকে হোক সে পুলিশ সদস্য বা অন্য কেউ তদন্ত করে তাদের বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Share This