
বাঘায় সাবেক এমপি শাহরিয়ার আলমের বাড়িতে আগুন

বাঘা (রাজশাহী) প্রতিনিধি : রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলম এমপির বাড়িতে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার (৬ ফের্রুয়ারি) বেলা ১২ টার সময় এই আগুন লক্ষ করা যায়। হাজারো মানুষ আসেন শাহরিয়ার আলম এমপির বাড়িতে আগুন দেখতে। টানা ৪বার এই আসনের এমপি ছিলেন শাহরিয়ার আলম। এর মধ্যে ২বার ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বে। আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাবস্থায় কয়েক হাজার কোটি টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির মালিক হয়ে যান শাহরিয়ার ও তার পরিবারের লোকজন।
এলাকা বাসী জানায়, ২০০৮ সালে এমপি হওয়ার পর এসব জমি ও অর্থসম্পদ গড়ে তোলার নেশায় শাহরিয়ার তার নির্বাচনি এলাকায় ব্যাপক লুটপাট চালিয়েছেন। তিনি তার এপিএস সিরাজের মাধ্যমে এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করতেন টিআর-কাবিখাসহ সরকারি সব অনুদান ও প্রকল্প। এমনকি স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার শিক্ষক নিয়োগেও করেন বাণিজ্য। চাকরি, বদলিসহ বিভিন্ন কাজেও এপিএসের মাধ্যমে নেন মোটা অঙ্কের টাকা। প্রতিমন্ত্রীর তহবিলে টাকা না দিলে কারও টিআর-কাবিখা বা সরকারি অনুদান পাওয়ার সুযোগ ছিল না। আবার টাকা দিলে ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামেও মিলেছে সরকারি বরাদ্দ।
রাজশাহীতে নামমাত্র ম‚ল্যে ৬০ কোটি টাকার ৪০ বিঘা জমি জোরপ‚র্বক দখল নিয়ে গড়ে তোলেন অ্যাগ্রোফার্ম। কিনেছেন শতাধিক বিঘা আবাদি জমি। ঢাকাতে রয়েছে কয়েকশ কোটি টাকার আটটি পোশাক কারখানা। রাজশাহী এবং ঢাকায় রয়েছে তার কয়েকটি প্লট এবং ফ্ল্যাট। রাজশাহীতে দুইশ কোটি টাকা ব্যায়ে গড়ে তুলেছেন বারিন্দ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। দেশের গÐি পেরিয়ে রাশিয়া, ব্রাজিল এবং চীনেও রয়েছে তার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান।
অভিযোগ রয়েছে-দেশের টাকা পাচার করে শাহরিয়ার এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করেছেন। এ ছাড়া এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগেও হাতিয়ে নিয়েছেন কোটি কোটি টাকা। এভাবে ১৬ বছরে হয়েছেন কয়েক হাজার কোটি টাকার মালিক। তবে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের আগেই অবস্থা বেগতিক দেখে ৪ আগস্ট রাতেই তিনি গা ঢাকা দেন। ইতোমধ্যে শাহরিয়ারের বিরুদ্ধে তার নির্বাচনি এলাকা বাঘা এবং চারঘাট থানায় ৮টি মামলা হয়েছে।
জানা যায়, ২০০৭ সালের মাঝামাঝি সময় বাঘা-চারঘাটে হঠাৎ করেই আবির্ভ‚ত হন শাহরিয়ার। কিছু খাদ্যসামগ্রী বিতরণের মাধ্যমে মানুষের কাছে পরিচিতি পান গার্মেন্টস ব্যবসায়ী শাহরিয়ার। এরপর তিনি আওয়ামীলীগের টিকিট নিয়ে ২০০৮ সালের নির্বাচনে এমপি হন।