রবিবার- ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ -৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
পদত্যাগ করলেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী

পদত্যাগ করলেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী

 চলমান আন্দোলনের মুখে অবশেষে পদত্যাগ করলেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে। সোমবার (৯ মে) তিনি পূর্ব সিদ্ধান্ত মোতাবেক পদত্যাগের ঘোষণা দেন।টানা আন্দোলনের মুখে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে পদত্যাগ করতে রাজি না হলেও, চাপের মুখে মুখে নিজের পদ ছাড়তে রাজি হয়েছিলেন মাহিন্দা রাজাপক্ষে। মন্ত্রিসভার এক বিশেষ বৈঠকে ছোট ভাই ও দেশটির প্রেসিডেন্ট গোতাবায়ার অনুরোধে তিনি এ সিদ্ধান্ত নেন বলে জানা গেছে।

এদিকে শ্রীলঙ্কার বিরোধী দলীয় নেতা সাজিথ প্রেমাদাসাকে প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য প্রস্তাব দিয়েছেন গোতাবায়া। শনিবার (৭ মে) শ্রীলঙ্কার সংবাদমাধ্যম কলম্বো পেজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট বিরোধীদলীয় নেতাকে টেলিফোন করেছেন এবং দেশের বর্তমান সংকটের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ গ্রহণে অনুরোধ জানিয়েছেন। এ বিষয়ে বিরোধীদলীয় নেতা প্রেসিডেন্টকে বলেছেন, তার সাংসদদের সঙ্গে বৈঠক করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।

এর আগে চরম অর্থনৈতিক সংকট ও দেশ পরিচালনায় ব্যর্থতার অভিযোগে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে ও তার সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগের দাবিতে ধর্মঘট শুরু করে দেশটির জনগণ। শুক্রবার (০৬ মে) থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয় স্কুল-কলেজ ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও। এর পরিপ্রেক্ষিতেই আসে জরুরি অবস্থা জারির ঘোষণা।

আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার (৬ মে) শ্রীলঙ্কার প্রধান রফতানি প্রক্রিয়া অঞ্চল থেকে কমপক্ষে তিন হাজার কারখানা শ্রমিক ধর্মঘটে যোগ দেন। ট্রেড ইউনিয়ন নেতা রাভি কুমুদেশ বলেন, আমরা প্রেসিডেন্টের (গোতাবায়া রাজাপক্ষে) নীতিগত ভুলগুলো চিহ্নিত করতে পেরেছি, যা দেশের অর্থনীতিকে দুর্দশার দিকে নিয়ে গেছে। তাকে অবশ্যই পদত্যাগ করতে হবে।

আমদানিকৃত খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধের ঘাটতির প্রতিবাদে গত এক মাসের বেশি সময় ধরে ভারত মহাসাগরীয় দ্বীপ দেশটির বিভিন্ন শহরে থেমে থেমে বিক্ষোভ চলছে। শুক্রবার (৬ মে) শ্রীলঙ্কার বড় শহরগুলোর দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় রাজধানী কলম্বোর প্রধান রেল স্টেশনও। ধর্মঘটে যোগ দেন স্বাস্থ্যকর্মীরাও। তবে চালু রাখা হয় জরুরি পরিষেবা।

এদিকে সড়কের পাশাপাশি অনলাইনেও জোরদার হয় শ্রীলঙ্কার সরকারবিরোধী আন্দোলন। রাজাপক্ষে সরকারকে হটাতে আন্তর্জাতিক সংস্থার হস্তক্ষেপ চেয়েছিল দেশটির নাগরিকরা।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, ‘সেভ শ্রীলঙ্কা’ নামে অনলাইন প্ল্যাটফর্মের অধীনে জাতিসংঘ, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল ও বিশ্বব্যাংকের কাছে পাঠানো হয় আবেদন। এতে লঙ্কান সরকারের ভুল অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত, রাজনীতিবিদ ও সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতির কথা তুলে ধরা হয়।

শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপক্ষে ও তার মন্ত্রিপরিষদ উৎখাতে সম্প্রতি অনাস্থার ঘোষণা দেয় দেশটির প্রধান বিরোধীদল। পার্লামেন্টের স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা আবিওয়ারদেনার কাছে অনাস্থা ভোটের প্রস্তাবও দেওয়া হয়।

অবশেষে মাহিন্দা রাজাপক্ষেকে পদত্যাগে বাধ্য করে তার মন্ত্রিপরিষদও ভাঙতে সক্ষম হলো দেশটির বিরোধীদল ও বিক্ষোভকারীরা।

৬৫ বার ভিউ হয়েছে
0Shares