শেখ ফজলে শামস পরশের স্ত্রী অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথি ও তার মেয়ে তানজিন বৃষ্টিকে হয়রানির অভিযোগে করা মামলায় দুইজনকে মোট দুই কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে ইতিহাদ এয়ারওয়েজকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ১০ বছর আগে টরন্টো যেতে না দিয়ে আবুধাবি বিমানবন্দরে নামিয়ে দেয়ার ঘটনায় তাদের ওই ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়েছে।
আদালত জানায়, বাংলাদেশের ওই দুই যাত্রীকে মাঝপথে নামিয়ে দিয়ে ‘স্বেচ্ছাচারী, অযৌক্তিক ও অসদাচরণ’ করেছে ইতিহাদ এয়ারওয়েজ। সেই রিটে ক্ষতিপূরণ প্রশ্নে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ গত বছর ৮ অক্টোবর রায় দেন।
বুধবার প্রকাশিত পূর্ণাঙ্গ রায়ে সমান ২০টি মাসিক কিস্তিতে মা ও মেয়েকে ক্ষতিপূরণের টাকা পরিশোধ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ইতিহাদ এয়ারওয়েজকে। আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী রিপন বাড়ৈ ও সঞ্জয় মণ্ডল।
ইতিহাদ এয়ারওয়েজের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী আজমালুল হেসেন কিউসি। তার সঙ্গে ছিলেন মো. আজিজ উল্লাহ ইমন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ওয়ায়েস আল হারুনি।
২০১১ সালে ২৮ জুন কানাডা যাওয়ার জন্য ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরের ইতিহাদ এয়ারলাইনসের কাউন্টার থেকে বোর্ডিং পাস নেন তানজিন বৃষ্টি ও তার মা নাহিদ সুলতানা যুথি। তার মধ্যে একটি ঢাকা-আবুধাবী EY 253 ফ্লাইটের জন্য, অন্যটি আবুধাবী-টরন্টো EY 141 ফ্লাইটের জন্য। পরদিন সকাল ৮টায় তারা আবুধাবি বিমানবন্দরে পৌঁছান। তাদের পরবর্তী ফ্লাইটটি (আবুধাবি-টরন্টো) আবুধাবীর স্থানীয় সময় রাত ১০টায় নির্ধারিত ছিল। যথাসময়ে তারা EY 141 ফ্লাইটের জন্য লাইনে দাঁড়ান।
চেক-ইন শেষে তানজিন বৃষ্টিকে ওয়েটিং রুমে ঢুকতে দিলেও বোর্ডিং পাসে সিল না থাকায় তার মা নাহিদ সুলতানা যুথিকে সেখানে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। পরে ইতিহাদের কর্মীরা মা ও মেয়েকে জোর করে দেশে ফিরতে বাধ্য করেন।
ঢাকায় ফিরে তানজিন বৃষ্টি ২০১১ সালের ৩০ জুন বিমানবন্দর থানায় জিডি করেন। পরে ই-মেইলে ইন্টারন্যাশনাল সিভিল এভিয়েশন অথরিটির (আইসিএও) কাছেও অভিযোগ করেন।
এরপর ওই বছরের ৪ জুলাই ঢাকায় ইতিহাদের কান্ট্রি ম্যানেজারের কাছে অভিযোগ জমা দিয়ে ক্ষতিপূরণের আবেদন করেন বৃষ্টি। তাতে সাড়া না পেয়ে ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন তিনি। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আদালত ওই বছরের ১৪ জুলাই রুলসহ আদেশ দেয়। আদালত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলে। সেই সঙ্গে ইতিহাদ এয়ারওয়েজের কান্ট্রি ম্যানেজারকে আদালতে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।
আটক, হয়রানি ও নির্যাতনের অভিযোগ বিচারে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থাপন করার জন্য কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং এ দুই যাত্রীকে ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে সে সময় রুলও জারি করে হাইকোর্ট।
ইতিহাদ এয়ারওয়েজের কান্ট্রি ম্যানেজার হাজির হয়ে ব্যাখ্য দেওয়ার পর মামলার রুল শুনানির শুরু হলে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফের আদালত মামলাটি শুনানিতে অপারগতা প্রকাশ করে।
পরে প্রধান বিচারপতি রুল শুনানির জন্য মামলাটি বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চে পাঠান। শুনানি শেষে গত বছর ৮ অক্টোবর ওই বেঞ্চ রায় দেয়। বুধবার (১৬ জুন) হাইকোর্টের ওই রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা : ড. সরকার মো.আবুল কালাম আজাদ,
সম্পাদক ও প্রকাশক : একরামুল হক বেলাল,
নির্বাহী সম্পাদকঃ জিকরুল হক
ঢাকা অফিস- ২২, মা ভিলা ,পূর্ব তেজতুরী বাজার, ফার্মগেট-১২১৫। ইমেইল-spnews17@gmail.com ০১৩১৪১৪৬৬৬২ রেলওয়ে পার্ক,পার্বতীপুর,দিনাজপুর। ০১৭১২৩৭০৮০০
Copyright © 2025 Spnewsbd. All rights reserved.