ধামইরহাট (নওগা) প্রতিনিধি-
নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান লক্ষণপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে চলমান ৪ বছরের দ্বন্দ নিরসন করেছেন সদ্য যোগদানকৃত উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মোস্তাফিজুর রহমান। চলতি মাসের ৪ তারিখে বাদী ও বিবাদী উভয় পক্ষকে ডেকে তাদের অভিযোগ শুনে আইনগত সু-পরামর্শ প্রদান করেন ইউএনও মোস্তাফিজুর রহমান। এতে বিধি ও আইনের প্রতি সম্মান শ্রদ্ধা জানিয়ে বিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা ও সকলের শান্তির লক্ষে উভয় পক্ষই তাদের ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটান।
বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ও বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালনকারী মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ২০১৯ সালে বিদ্যালয়ের প্রধান আব্দুল গফুর অবসর গ্রহণ করায় বিধি মোতাবেক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে আমি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব আইনতভাবে গ্রহণ করি। পরবর্তীতে ২০২০ সালে প্রধান শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে তৎকালিন প্রয়াত সাবেক সভাপতি আমিনুল হক নতুন প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দিতে ব্যর্থ হয়ে আমাকে অন্যায়ভাবে আমার পদ থেকে জোর পূর্বক অপসারণ করে বিধি বহির্ভূতভাবে সহকারি শিক্ষক মো. নুরুল ইসলামকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেন এবং পরবর্তী নুরুল ইসলাম অবসর গ্রহণ করলে সাবেক সভাপতি আবু রাশেদ ইমামও একই ভাবে নিয়ম ভঙ্গ করে আমাকে দায়িত্ব না দিয়ে সহকারি শিক্ষক ছাদেকুর রহমানকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দিয়ে আমাকে বঞ্চিত করা হয়। বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘ ৫ বছর যাবৎ চলা দ্বন্দ নিরসনে কেউই যখন এগিয়ে আসেনি, ঠিক তখনই শান্তির বার্তা নিয়ে আমাদের উভয় পক্ষকে আইনের উদ্ধৃতি দিয়ে বর্তমান উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোস্তাফিজুর রহমান বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও সকল শিক্ষকদের নিয়ে এই দ্বন্দ নিরসন করে আমাকে বিধি মোতাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে, আমি সহ বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক তথা ধামইরহাট বাসী আমরা ইউএনও স্যারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।’
বিদ্যালয়ের অফিস সহকারি মো. গোলাম মরতুজা বলেন,‘আমরা দীর্ঘদিন পর যে সকলেই এক সাথে মিলে মিশে চলতে পারছি, এত সবকিছুর অবদান ইউএনও স্যারের, আমরা তার প্রতি দীর্ঘায়ু কামনা করছি।
স্থানীয় সমাজসেবক ও শিক্ষানুরাগী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি শামীম কবির মিল্টন বলেন,‘বিদ্যালয়টি আওয়ামী ফ্যাসিবাদীদের কবলে ছিল, তার আজ রক্ষা পেয়েছে এবং শিক্ষা পরিবেশ ফিরিয়ে এসেছে।
মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শেখ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ২০২৪ সালের ৮ আগস্টের পরিপত্র অনুসরণ করে বিষয়টি সমাধানে ইউএনও স্যারের ভূমিকা ছিল মুখ্য, যা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীদের কল্যাণ হয়েছে।
সহকারি শিক্ষক ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ছাদেকুর রহমান বলেন, ‘আমরা সকলেই খুশি হয়েছি এবং মানসিক শান্তি পেয়েছি বিষয়টি সমাধান হওয়ায়।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘উভয় পক্ষই উদার মনের ছিলেন জন্য সমস্যা সমাধান সম্ভব হয়েছে, আমি শুধু সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করেছি মাত্র, যাতে করে বিদ্যালয়টি শিক্ষার পরিবেশ ফিরে আসে।’