নিজস্ব সংবাদদাতা,বিরামপুর, দিনাজপুর ; বিরামপুর শহর থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার পশ্চিমে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া বগড়া গ্রাম। এই গ্রামের বাসিন্দা অনিল চন্দ্র সরকার ও সুনতী বালা দুই ভাই-বোনের পরিবারে ১২ জন বাক প্রতিবন্ধী । প্রতিবন্ধী ভাতা যাদের একমাত্র ভরসা। খাবার জোটে না ঠিকমত। এদের মধ্যে প্রদীপ (১৮) শারীরিক ও বাক প্রতিবন্ধী, একটি হুইল চেয়ারের অভাবে পারছে না চলাফেরা করতে।
জানা যায়, অনিল চন্দ্র সরকারের পরিবারে তিনি নিজে ২ মেয়ে ১ ছেলে ও তাদের ৪ সন্তানসহ ৮ জন বাক প্রতিবন্ধী। তারা হলেন- অনিল চন্দ্র সরকার (৬০),মেয়ে সোহাগী রায় (৩২) ও তপতী (২২), ছেলে অনিল (৩৫), বাক প্রতিবন্ধী সোহাগী রায়ের স্বামী ফটেন রায় সংসার ফেলে পালিয়ে গেছে ১ যুগেরও বেশী সময় আগে। তাদের পুত্র সন্দীপ রায় (১৮) ও কন্যা ইতি রায় (১২) দুজনই বাক প্রতিবন্ধী। বাক প্রতিবন্ধী অনিলের ২ ছেলে আপন (৮) ও পরন (৫) তারাও বাক প্রতিবন্ধী ।
অনিল চন্দ্র সরকারের বোন সুনতী বালা (৭০), তার ছেলে নেপাল সরকার (৪৫), নেপালের ২ ছেলে প্রদীপ (১৮), চন্দন (১৬) বাক প্রতিবন্ধী। আবার এদের মধ্যে প্রদীপ বাক প্রতিবন্ধী ও শারীরিক প্রতিবন্ধী।
এলাকাটিতে নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবর্তী পরিবারের বসবাস। তাই এলাকাবাসী কষ্ট নিয়েই বলেন, এই অসহায় ২টি পরিবারকে তারা যেটুকু করেন, তাদের প্রয়োজনের তুলনায় সেটা নগন্য। তারা সরকারি দপ্তর ও সমাজের দানবীরগনকে এই অসহায় পরিবার দুটির সহযোগিতায় এগিয়ে আসার আহŸান জানান।
বাকপ্রতিবন্ধী নেপালের স্ত্রী মলিকা বলেন, ২ পরিবারে মাত্র ৪জন কর্মক্ষম, তাও সব সময় কাজ জোটে না। সরকারি ভাতা কিছুটা উপকার হয়েছে, তবে খেয়ে-না খেয়ে দিন পার হচ্ছে। সমাজের লোক আমাদের আর কতই দেখবে তারাও তো খেটে খাওয়া মানুষ। তিনি সরকারের অন্যান্য দপ্তর ও মানবতার কাজে নিয়োজিতদের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার আব্দুল আউয়াল বলেন, ১২ জনের মধ্যে ১০ জনই ভাতাভোগী, বাকী ২ জনকেও ভাতার আওতায় নেওয়া হবে। শারীরিক প্রতিবন্ধী প্রদীপকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে হুইল চেয়ার দেওয়া হবে।
বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুজহাত তাসনীম আওন বলেন, একই পরিবারে ১২ জন বাকপ্রতিবন্ধী বিষয়টি সম্পর্কে জেনেছি। সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে অসহায় পরিবার দুটির জন্য সহযোগিতার আন্তরিক প্রচেষ্ঠা থাকবে। অসহায় পরিবারের পক্ষে কথা বলতে পারে এমন একজনকে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করছি।
স্থানীয় বিনাইল ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর বাদশা বলেন, আমাদের এলাকায় ২ পরিবারে ১২ জন প্রতিবন্ধী আছে আজকেই জানলাম। আমি ব্যক্তিগতভাবে ও ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে অসহায় পরিবার দুটিকে সহযোগিতা করবো।