ভোলা প্রতিনিধি : ভোলার মেঘনা ও তেতুলিয়ায় ২২ দিন পর নিষেধাজ্ঞা শেষে ইলিশ শিকারে নদীতে নেমেছেন ভোলার ৭ উপজেলার জেলেরা। সোমবার সকাল থেকে নদীতে জাল ফেলছেন তারা। আশানুরূপ মাছ পাচ্ছেন এবং জালে ধরা পড়ছে ৭০ ভাগ ডিমওয়ালা ইলিশ। জেলেরা খুশি ও আনন্দিত আর ব্যবসায়ীদের লাভ ভাল।
সরজমিনে বুধবার ভোলার বিভিন্ন মাছ ঘাটে দেখা গেছে, ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেদের জালে মিলছে ৭০ ভাগ ডিমওয়ালা ইলিশ, এর মধ্যে মাজারি ও জাটকার পরিমান বেশী। বাজার গুলোতে সয়লাব হয়ে গেছে মাছে, বিক্রি হতে দেখা যায় এসব ডিমওয়ালা ইলিশ। ফলে ইলিশের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। ডিমওয়ালা ইলিশ রক্ষায় সরকার নিষেধাজ্ঞার যে সময়সীমা ঠিক করেছে তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে মৎস্য বিশেষজ্ঞদের মধ্যে।
প্রবীন জেলেরা বলছেন, নিষেধাজ্ঞার সময় নির্ধারণ আরো ভালো ভাবে গবেষণা করে করা উচিৎ, আমরা যখন মাছ ধরেছি তখন দেখেছি ইলিশ ডিম ছাড়ার একমাস আগে সাগর থেকে মিঠা পানিতে (মেঘনা-তেতুলিয়ায়) চলে আসে, তার দুই সপ্তাদের মধ্যে ডিম ছেড়তে শুরু করে। ইলিশ ডিম ছেড়ে অসুস্থ্য হয়ে একই স্থানে ৩-৪ দিন অবস্থান করে। পরে সুস্থ্য হয়ে চলে যায়। ওই সময় আমরা ওই এলাকায় জাল ফেলতামনা। কারন ওই ইলিশগুলো খাবার উপযোগী নয়। এখন সেই ইলিশ গুলো ধরে এনে কেজি ১ থেকে দেড়শত টাকায় বিক্রি করে।
জেলে ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, অভিযান মাত্র শেষ হয়েছে। এখনো আশানুরূপ ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। এখন ৭০ ভাগ ইলিশের পেটে ডিম রয়েছে। এইজন্য আমরা নিষেধাজ্ঞা মধ্যে নদীতে নামিনি, ওঠার পরই আমরা নদীতে নৌকায় জাল নিয়ে ইলিশ শিকারে নামি। জালে এখনো প্রচুর ডিমওয়ালা ইলিশ উঠছে। সামনে মাছের পরিমাণ আরো কমবে নাকি বাড়বে তা বুঝা যাচ্ছে না।
ভোলা ঘাটের ব্যবসায়ীরা জামাল বলেন, নিষেধাজ্ঞার ২২ দিনে আমাদের কোনো ব্যবসা ছিল না। এ সময় জেলেদের অনেককে অগ্রিম দাদন দিতে হয়েছে। এছাড়া কিছু করার ছিল না। জেলেরা খেয়ে বেঁচে থাকলে আমাদের ব্যবসা হবে। এখন নিষেধাজ্ঞা উঠেছে। আশা করা যায় আবার মাছের ব্যবসা জমজমাট হয়েছে। প্রচুর মাছ পাওয়া যাচ্ছে, জেলেরা বেশী মাছ পেয়ে খুবই খুশি ও আনন্দিত আর আমাদের লাভও এখন ভাল।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ^জিৎ কুমার দে বলেন, ইলিশ সারা বছরই ডিম দেয়। তবে এই অক্টোবর মাসে ইলিশ অনেক বেশি পরিমাণ ডিম দেয়, যার কারণে এই সময়টা নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। আর জাটকার বিরুদ্ধে বাজার মনিটরিংসহ অভিযান চালানো হবে।