প্রিন্ট এর তারিখঃ জুলাই ৩, ২০২৪, ৫:৫১ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ জুন ২৬, ২০২৪, ১০:৫৩ অপরাহ্ণ
![](https://spnewsbd.com/wp-content/uploads/2024/06/IMG20240625181358.jpg)
নীলফামারীর সৈয়দপুর বিসিক শিল্প নগরী এলাকায় ২৫ জুন মঙ্গলবার দুপুরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এনএস আই, র্যাব ১৩, উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের যৌথ অভিযানে প্রায় ১০০ টন নিষিদ্ধ ঘোষিত এসিআই কোম্পানীর ব্রিফার ৫জি (কার্বোফুরান) বালাইনাশক আটক করা হয়।
কার্বোফুরান নামের বালাইনাশকটি মানুষ তো বটেই, বেশির ভাগ প্রাণীর জন্যই মারাত্মক ক্ষতিকর। সেই ২০১৬ সালে জাতিসংঘ এটি নিষিদ্ধ করতে সদস্যরাষ্ট্রগুলোর প্রতি আহ্বান জানায়। এরপর এখন পর্যন্ত বিশ্বের ৮৭টি দেশ বালাইনাশকটি নিষিদ্ধ করেছে।
গত জানুয়ারিতে২০২৩ এ ৮৮তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এটি নিষিদ্ধ করে। রাষ্ট্রপতির আদেশ অনুযায়ী, গত জুন২০২৩ ইং থেকে এটি আর ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু গত ৩১ জুলাই সরকারের বালাইনাশকবিষয়ক জাতীয় কারিগরি কমিটির (পিটাক) সভায় আগামী ৩০ অক্টোবর২০২৩ পর্যন্ত কার্বোফুরান ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
কার্বোফুরান মারাত্মক ক্ষতিকর বালাইনাশক হওয়ার কারণেই এটি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। রয়ে যাওয়া বালাইনাশক দ্রুত শেষ করা এবং আমন ও বোরো মৌসুমে যাতে পোকামাকড়ের কারণে খাদ্য উৎপাদন না কমে, সে কথা বিবেচনা করে তিন মাস সময় বাড়ানো হয়েছে।
পিটাকের সভায় কার্বোফুরানকে মারাত্মক ক্ষতিকর বা এক্সট্রিমলি হ্যাজার্ডাস বালাইনাশক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। । কোম্পানিগুলোর কাছে রয়ে যাওয়া কার্বোফুরান নষ্ট করার কোনো ব্যবস্থা দেশে নেই বলে জানানো হয়। এই পরিস্থিতিতে আগামী আমন মৌসুমে ওই অবশিষ্ট কার্বোফুরানগুলো শেষ করার ব্যাপারে সুপারিশ করা হয়।
সভায় সিদ্ধান্ত হিসেবে বলা হয়, ৩০ অক্টোবরের পর কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছে কার্বোফুরান পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে নিবন্ধন বাতিল ও চরম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যাদের কাছে অবশিষ্ট কার্বোফুরান রয়ে যাবে, তাদের নিজ দায়িত্বে এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে তা নষ্ট করতে হবে।
পিটাকের সদস্য ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ বিভাগের উপপরিচালক (বালাইনাশক প্রশাসন) রফিকুল আলম খান এর আগে এক সংবাদ মাধ্যমে বলেন, কোম্পানিগুলোর কাছে রয়ে যাওয়া বালাইনাশক আপাতত কোথাও ব্যবহার করা না হলে তা প্রকৃতিতে রয়ে যাবে। তাই এগুলো দ্রুত ব্যবহার করে শেষ করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এরপর যদি কারও কাছে থাকে, তাহলে এর পর আর ছাড় দেওয়া হবে না।
এর আগে ২০১৬ সালেও কার্বোফুরান নিষিদ্ধের ব্যাপারে আলোচনা উঠেছিল। তবে কয়েকটি বালাইনাশক কোম্পানির চাপে তা পিছিয়ে যায়। সর্বশেষ ২০২২ সালে বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র বা বিটাকের সভায় এটি নিষিদ্ধের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়। অবশ্য কোনো প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়ায় এর বিক্রি ও উৎপাদন অব্যাহত থাকে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্রমতে, দেশে ২৫২টি কোম্পানি কার্বোফুরান আমদানি, বিক্রি ও প্রক্রিয়াজাত করে। দানাদারজাতীয় ওই বালাইনাশক ভেজা মাটিতে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। ফলে উদ্ভিদের শিকড় দিয়ে পাতা, ডাল ও শস্যের মধ্যে প্রবেশ করে। অন্যান্য বালাইনাশক সাধারণত প্রয়োগের পর ৫ থেকে ২০ দিন তা উদ্ভিদে থাকে। কিন্তু কার্বোফুরান থাকে ৩০ থেকে ৬০ দিন। ফলে ভোক্তার শরীরে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
বালাইনাশক আমদানি, উৎপাদন, পুনঃউৎপাদন, বিক্রয়, বিতরণ ও ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ এবং এ সংক্রান্ত আনুষঙ্গিক বিষয়ে বিধান প্রণয়নে 'বালাইনাশক আইন-২০১৮' এর ধারা ১৫, ১৮, ১৯, ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ধারা এবং 'বালাইনাশক বিধিমালা, ১৯৮৫' এ দেওয়া ক্ষমতাবলে সরকার এ আদেশ জারি করেছে বলে প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়েছে।
কার্বোফুরান একটি দানাদার কীটনাশক। এটি প্রতিরোধক এবং প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে। অর্থাৎ পোকা লাগার আগে কার্বোফুরান ব্যবহার করলে পোকা লাগবে না এবং পোকা লাগার পর ব্যবহার করলে পোকা মারা যাবে।
মানব স্বাস্থ্যের জন্য অন্তত ক্ষতিকর একটি পদার্থ হিসেবে কার্বোফুরানকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর সংস্পর্শে আসলে মানুষের বিভিন্ন ধরনের রোগ দেখা দেয়।
কার্বোফুরানের একটি দানা একটি পাখি মেরে ফেলতে পারে। পাখিরা প্রায়ই ভুল করে বীজের বদলে এ কীটনাশক খেয়ে মারা যায়। যুক্তরাষ্ট্র, কানাডাসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এ কীটনাশকের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা : ড. সরকার মো.আবুল কালাম আজাদ, সম্পাদক ও প্রকাশক : একরামুল হক বেলাল
ঢাকা অফিস- ২২, মা ভিলা ,পূর্ব তেজতুরী বাজার, ফার্মগেট-১২১৫। ইমেইল-spnews17@gmail.com, রেলওয়ে পার্ক,পার্বতীপুর,দিনাজপুর। ০১৭১২৩৭০৮০০
© 2023 Spnewsbd. All rights reserved.