প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ২১, ২০২৪, ১০:০৭ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ অক্টোবর ২৯, ২০২৪, ১:৫২ অপরাহ্ণ
পত্নীতলায় ৬ বিঘা আধাপাকা ধানক্ষেত কীটনাশক স্প্রে ঝলসিয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা!
ইখতিয়ার উদ্দীন আজাদ, পত্নীতলা (নওগাঁ): কাঁদছেন নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার শিহাড়া ইউনিয়নের আমন্ত গ্রামের কৃষক আব্দুল সোবাহান (৭০)। কাঁদার কারণ, তার কষ্টে রোপণ করা প্রায় ৬ বিঘা জমির আধাপাকা ধান কে বা কাহারা তাকে সর্বশান্ত করতে কীটনাশক প্রয়োগ করে ঝলসিয়ে দিয়েছে।
এ বিষয়ে আব্দুল সোবহান বিচার চেয়ে ধরনাও দিচ্ছেন বিভিন্ন জনের কাছে। কিন্তু কোথাও বিচার না পেয়ে অবশেষে থানায় লিখিত অভিযোগ দিলেও তা গ্রহণ করেননি। এ বিষয়ে পত্নীতলা থানা ওসি শাহ্ মোঃ এনায়েতুর রহমান সাফ জানিয়ে দেয়, অভিযোগে সুনির্দিষ্ট কেউ সাক্ষী না থাকায় অভিযোগ গ্রহণ করা হয় নাই।
আমন্ত গ্রামের হেলাল উদ্দিন বলেন, আর মাত্র দেড় থেকে দুই সপ্তাহ পরই ধান ঘরে তুলে আনার মৌসুম আসতো। কিন্তু পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিবেশীর সঙ্গে সামান্য মনোমালিন্য চলছিল। হয়তো তারাই রাতের অন্ধকারে এ জঘন্য কাজ করতে পারে।’
স্থানীয় এলাকাবাসীরা জানায়, 'ধান বাড়িতে উঠানোর আগেই ওই অমানুষরা কীটনাশক স্প্রে করে আধাপাকা ধান পুড়িয়ে দিয়েছে। দেশের সম্পদ নষ্ট করেছে। চুরি করলেও তো কারো না কারো কাজে লাগে, কিন্তু পুড়িয়ে ফেললে কি কাজে লাগে? এ কেমন শত্রুতা! আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
ভুক্তভোগী আব্দুল সোবহান কান্না জড়িত কণ্ঠে এই প্রতিবেদকের কাছে বলেন, 'প্রায় ৬ বিঘা আধাপাকা ধান সমস্ত কীটনাশক বিষ স্প্রে করে পুড়িয়ে দেয় আমার। পূর্ব শত্রুতা জেরে আমাকে হুমকি দিয়ে তা করেন। আমার নিজ নামীয় আমন্ত দক্ষিণ পাড়া মাঠের যার জেএল নং-৩১, আরএস খতিয়ান নং-২৩৬, দাগ নং-১৬৭৮। এ ঘটনায় তিনি আরও দাবি করেন, ৬ বিঘা আধাপাকা ধান উৎপাদন ব্যয়সহ আনুমানিক আড়াই লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
এ বিষয়ে পত্নীতলা উপজেলা কৃষি অফিসের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মুনতাসীর বলেন, 'ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের মাঠ মঙ্গলবার দুপুরে পরিদর্শন করেছি। প্রায় ৬ বিঘা আধাপাকা ধান কীটনাশক বিষ স্প্রে করে দুর্বৃত্তরা বিনষ্ট করছে। এ ঘটনায় কৃষি বিভাগ হতে তদন্ত প্রতিবেদন ভুক্তভোগীকে লিখিত প্রত্যায়ন আকারে দেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ ফসল আর রক্ষা করা সম্ভব না। কেননা, অতিরিক্ত কীটনাশক বিষ স্প্রে করার জন্য আধাপাকা ধান ক্ষেতের ফসল পুরোটাই ঝলসিয়ে দিয়েছে।
পত্নীতলা উপজেলা কৃষি অফিসার (অতিরিক্ত) মো: মোহাইমিনুল ইসলাম বলেন, এ ক্ষতি শুধু ভুক্তভোগী ধান চাষী আব্দুল সোবহান সাহেবের একার না। এটি আমাদের বাংলাদেশের ক্ষতি। এ বিষয়ে কৃষি বিভাগের পক্ষে আমরা আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে ভুক্তভোগী পরিবারকে সহযোগিতা করবো।
Copyright © 2024 সংবাদ প্রতিক্ষণ. All rights reserved.