প্রিন্ট এর তারিখঃ জুলাই ১, ২০২৪, ৭:৫৩ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ মার্চ ৩, ২০২৪, ১০:৫৯ অপরাহ্ণ
মোহনগঞ্জ প্রেসক্লাবের তহবিলের ৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ মাসুমের বিরুদ্ধে
![](https://spnewsbd.com/wp-content/uploads/2024/03/received_704253445207325.jpg)
নেত্রকোনা প্রতিনিধি : নেত্রকোনার 'মোহনগঞ্জ প্রেসক্লাবের' তহবিলের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানটির সাধারণ সম্পাদক মাসুম আহমেদের বিরুদ্ধে। বিভিন্ন উৎস থেকে আসা দান-অনুদানের টাকা ক্লাবের একাউন্টে জমা না করা ও অনেক অনুদান গায়েব করাসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। এতে ক্লাবের প্রায় ৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
হিসেবের বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রেসক্লাবের সদস্যের বাইরে সমাজের গণ্যমান্য তিনজনকে নিয়ে ওই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
শুক্রবার বিকেল চারটায় মোহনগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা চলে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত। সভায় ক্লাবের তিন বছরের আয়ের হিসেব করলে এমন অনিয়মের চিত্র উঠে আসে সাধারন সম্পাদক মাসুম আহমেদের বিরুদ্ধে। প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম আজাদের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় সাধারণ সম্পাদক মাসুম আহমেদ, কার্যকরী সদস্য সাইফুল আরিফ জুয়েল, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক জালাল উদ্দীন, নরোত্তম রায়সহ ক্লাবের প্রায় সকল সদস্যগণ উপস্থিত ছিলেন।
অনিয়মের বিষয়ে প্রেসক্লাবের সদস্যদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, মোহনগঞ্জ প্রেসক্লাবে একাধারে তিনবার সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন মাসুম আহমেদ। গত তিন বছরে প্রেসক্লাবের দান-অনুদানসহ সকল আয়ের টাকাই তিনি কোনো রেজ্যুলেশন ছাড়াই তুলে নিয়েছেন। গত বছর প্রেসক্লাবের আয়োজনে চলা ''বাণিজ্য মেলা'' থেকে পাওয়া দুই লাখ টাকা ক্লাবের কাউকে না জানিয়েই আত্মসাৎ করেন। এছাড়া সদ্যদের কাছ থেকে চাঁদা তুলে সেই টাকা আত্মসাৎ করেন। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রেসক্লাবে নতুন একজন সদস্য ভর্তির ফি ১২০ টাকা। তিনি এ নিয়ম না মেনেই এমনকি কার্যকরী কমিটির সাথে কোনো আলোচনা ছাড়াই তিনি নিজের ইচ্ছেমতো জনপ্রতি ৩ হাজার টাকা করে ৬ জনের কাছ থেকে ১৮ হাজার টাকা হাতিয়ে তিনি তাদেরকে প্রেসক্লাবের সাংবাদিক সদস্য করে নেন। আর নতুন সদস্যদের কাছ থেকে নেওয়া উক্ত ১৮ হাজার টাকার বিষয়টি তিনি ক্লাবের আয়-ব্যয়ের খাতায় লিখেননি বা ব্যাংক একাউন্টেও জমা দেননি। সব মিলিয়ে প্রায় ৮ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে।
এছাড়াও প্রেসক্লাবের নামে বই বের করা হচ্ছে বলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে প্রায় ১লাখ টাকা নেন মাসুম। পরে বই ছাপানোর পর আবার স্কুল-কলেজ ও বিভিন্ন অফিসে প্রতি বই ৫০০ টাকার বিনিময়ে জোরপূর্বক নিতে বাধ্য করা হয়। ওই বই বিক্রি করে তিনি আরো প্রায় ৩-৪ লাখ টাকার বেশি আয় করেন। তবে এর থেকে প্রেসক্লাবের তহবিলে তিনি এক টাকাও জমা দেননি। শেষে বইটি তাঁর ব্যক্তিগত বলে দাবি করেন অভিযুক্ত মাসুম আহমেদ।
শুক্রবার বিকেলে প্রেসক্লাব কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সাধারণ সভায় এসব বিষয় নিয়ে ক্লাবের সদস্যরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
সভায় সাধারণ সম্পাদক মাসুৃম আহমেদ জমা খরচের বিল-ভাউচার দেখাতে পারেননি। লাখ টাকার মতো মনগড়া খরচের হিসেব দেন। তবে এসব প্রত্যাখ্যান করেন সভায় উপস্থিত সকল সদস্যরা।
পরে গত তিন বছরের আয় ব্যয়ের সঠিক হিসেব বের করতে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি (উচ্চতর অডিট কমিটি) করা হয়। ক্লাবের সদস্য নন এমন তিনজনকে ওই তদন্ত কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
অভিযুক্ত সাধারণ সম্পাদক মাসুম আহমেদ টাকা আত্মসাতের বিষয়টি অস্বীকার করেন। তবে নিয়মানুযায়ী আয় ব্যয়ের বিল ভাউচার সংরক্ষণ করা হয়নি বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে প্রেসক্লাবের কার্যকরী কমিটির সদস্য সাইফুল আরিফ জুয়েল বলেন, প্রেসক্লাবে আয় ব্যয়ের কোন কিছুই সংরক্ষণ করেননি সাধারণ সম্পাদক। একাউন্ট প্রায় শূন্য। অথচ গত তিন বছরে প্রায় ৮ লাখ টাকা ক্লাবে এসেছে বিভিন্ন খাত থেকে। মেলার টাকা তিনি নানা বাহানায় আত্মসাৎ করেছেন। সবকিছু মনগড়া কাজ করেছেন তিনি।
প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল কাশেম আজাদ বলেন, প্রেসক্লাবকে ব্যক্তি বাণিজ্যের প্রতিষ্ঠান বানিয়ে ফেলেছেন সাধারণ সম্পাদক মাসুম।
প্রেসক্লাবের উন্নয়ন তহবিলে সরকারি - বেসরকারি বিভিন্ন খাত থেকে অনুদান হিসেবে পাওয়া প্রায় ৮ লাখ টাকা ক্লাবের একাউন্টে জমা না করে তিনি তা আত্মসাত করেছেন। এ ছাড়াও সুচতুর ওই সাধারণ সম্পাদক মাসুম আমার স্বাক্ষর জাল করেও সে একবার একাউন্ট থেকে ৫০ হাজার টাকা উত্তোলণ করে নেয়।
তিনি আরো বলেন, তার এসব অনিয়মের বিষয়গুলো নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ৩ সদস্য বিশিষ্ঠ উচ্চ পর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় সভায়।
প্রধান উপদেষ্টা : ড. সরকার মো.আবুল কালাম আজাদ, সম্পাদক ও প্রকাশক : একরামুল হক বেলাল
ঢাকা অফিস- ২২, মা ভিলা ,পূর্ব তেজতুরী বাজার, ফার্মগেট-১২১৫। ইমেইল-spnews17@gmail.com, রেলওয়ে পার্ক,পার্বতীপুর,দিনাজপুর। ০১৭১২৩৭০৮০০
© 2023 Spnewsbd. All rights reserved.