নাজিম হাসান,রাজশাহী জেলা প্রতিনিধি:
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনায় বন্ধুর বাড়িতে বেড়াতে আসা সোহাগ (২৬) নামে এক যুবককে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়। এই চাঞ্চল্যকর সোহাগ হত্যা মামলায় আরো দুইজন আসামীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঢাকার গাজীপুর এলাকা থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করেন র্যাব।গ্রেপ্তারকৃতরা হলো ঝিকরা ইউনিয়নের মরুগ্রাম ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের মকলেছের ছেলে রনি এবং একই গ্রামের মৃত আজিজার রহমানের ছেলে সাজ্জাদ হোসেন। হত্যাকান্ডের পর থেকেই তারা বিভিন্ন যাযগায় পালিয়ে বেড়াচ্ছিল। এলাকাবাসী জানান নিহত সোহাগ যশোর জেলার মনিরামপুর এলাকার শরিফুল ইসলাম মিস্ত্রীর ছেলে। গত (২ ফেব্রুয়ারি) শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাগমারা উপজেলার ঝিকরা ইউনিয়নের মরুগ্রাম ডাঙ্গাপাড়া এলাকায় বন্ধুর বাড়িতে বেড়াতে এসে গ্রেপ্তারকৃতদের হাতে নির্মাম ভাবে খুন হয় সোহাগ। ওই ঘটনায় সোহাগের চাচাতো ভাই সাইফুল ইসলাম সাগর বাদী (গত ৩ ফেব্রুয়ারি) বাগমারা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই হত্যা কান্ডের পর থেকে এর সাথে জড়িতরা এলাকা থেকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর আগে ৭ ফেব্রুয়ারি আত্রাই উপজেলার দিঘা ব্রীজ বাজার এলাকা থেকে হত্যা মামলায় আসামী রহিদুল ইসলাম এবং ১১ ফেব্রুয়ারি ঝিকরা বাজার থেকে শিবলু রহমানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আইন শৃংখলা বাহিনীর দুরদর্শিতায় হত্যাকান্ডের মামলায় বিভিন্ন এলাকায় থেকে একের পর এক পলাতক আসামী গ্রেপ্তার হচ্ছে। উল্লেখ্য, ২ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে মরুগ্রাম ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের আনিছুর রহমানের ছেলে মনাহার ইসলাম তাদের জমিতে থাকা সরিষা তুলতে বিলে যায়। এ সময় একই গ্রামের বেশ কয়েকজন সংঘবদ্ধ ভাবে হাজির হয় সেখানে। তারা মনাহারকে বলতে থাকে তুকে বিলের জমিতে আসতে নিষেধ করেছি তারপরও কেন সরিষা তুলতে এসেছিস। এ সময় উভয়ের মধ্যে বাকবিতন্ডা বাধে। বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে মনাহারকে সরিষার জমিতেই সন্ত্রাসী কায়দায় বেধড়ক মারপিট করে। সন্ত্রাসী হামলায় আহত মনাহারকে উদ্ধার করে পাশের আত্রাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। বন্ধুর উপরে সন্ত্রাসী হামলার খবর পেয়ে ঢাকা থেকে আহত মনাহার ইসলামের বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হয় সোহাগ সহ তার বন্ধুরা। আহত মনাহারের বাসায় পৌঁছার আগেই সন্ত্রাসী হামলার শিকার হয় সোহাগ সহ তার বন্ধুরা। ওই সকল সন্ত্রাসীর হামলায় ঘটনাস্থলেই নিহত হয় সোহাগ। জানা গেছে, ঢাকার মালিবাগে একটি কোম্পানিতে চাকরি করতে গিয়ে বাগমারা উপজেলার ঝিকরা ইউনিয়নের মরুগ্রাম ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের আনিসার রহমানের ছেলে মনাহার ইসলামের সাথে পরিচয় হয় সোহাগের। সমবয়সী হওয়ায় সেই পরিচয় ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বে রুপ নেয়। এসময় দুই জনেই ওই কোম্পানির চাকরি ছেড়ে দেয়। চাকরি ছাড়লেও বন্ধ হয়নি তাদের যোগাযোগ। প্রায়ই দুজনের মধ্যে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ হতো। সেই যোগাযোগ থেকে আহত বন্ধুকে দেখতে আসছিল সোহাগ সহ তার বন্ধুরা। মামলার বাদী সাইফুল ইসলাম সাগর বলেন, সোহাগকে যারা নির্মম ভাবে হত্যা করেছে তাদের সকলের বিচার চাই। আমার চাচাতো ভাই কোন অপরাধ করেনি। কেন তাকে হত্যা করা হলো। এ ব্যাপারে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রবিউল ইসলাম জানান,সোহাগ হত্যা মামলায় র্যাবের সহযোগিতায় ঢাকার গাজীপুর থেকে রনি এবং সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করা হয়। হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা : ড. সরকার মো.আবুল কালাম আজাদ, সম্পাদক ও প্রকাশক : একরামুল হক বেলাল
ঢাকা অফিস- ২২, মা ভিলা ,পূর্ব তেজতুরী বাজার, ফার্মগেট-১২১৫। ইমেইল-spnews17@gmail.com, রেলওয়ে পার্ক,পার্বতীপুর,দিনাজপুর। ০১৭১২৩৭০৮০০
© 2023 Spnewsbd. All rights reserved.