প্রিন্ট এর তারিখঃ জুন ২৯, ২০২৪, ৬:০৭ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ জানুয়ারি ১৬, ২০২৪, ১১:০২ অপরাহ্ণ
কুড়িগ্রাম জেলার শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠানটির বেহাল দশা
মোঃ বুলবুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ কারিগরি শিক্ষায় জেলায় শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি মিললেও স্বীকৃতি মেলেনি প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত উন্নয়নের। অবকাঠামোগত,যাতায়াত সমস্যা, প্রযুক্তিগত অসুবিধাসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার প্রথম স্বতন্ত্র কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রৌমারী টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজটি। প্রতিষ্ঠান প্রধানের দাবি,সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ একাধিক বার আশ্বাস দিলেও আজবধি কোনো প্রতিকার মেলেনি। দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের দাবি শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় সুধীজনদের।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা ও জানা যায়, প্রতিষ্ঠানটির একমাত্র প্রবেশ পথে সেতুটি গত ২০১৮ সালের বন্যায় ভেঙ্গে যায়। পরে চলাচলের জন্য এলাকাবাসীর উদ্যোগে একটি বাঁশের সাঁকো নির্মিত হয়। যে সাঁকোটি বর্তমানে চলাচলের একেবারে অযোগ্য। প্রতিষ্ঠানটিতে পুরাতন টিনশেড দ্বারা নির্মিত ৩ কক্ষ বিশিষ্ঠ পাঠদান ভবনটি জরাজীর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর কর্তৃক বরাদ্দকৃত ৫ লাখ ও প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব তহবিল থেকে ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত (২ কক্ষ) বিশিষ্ঠ ভবনটি গাইড ওয়াল না থাকায় ব্যবহারের আগেই ২০২০ সালের বন্যার প্রবল স্রোতে ভেঙ্গে গেছে। ১.০৬ একর জমিতে এই প্রতিষ্ঠানের মাঠের মাঝ দিয়ে জামালপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মেইন লাইন চলে গেছে। যা প্রতিষ্ঠানের জন্য হুমকিস্বরুপ। প্রতিষ্ঠানের সীমানা প্রাচীর না থাকায় বখাটেদের মাদক সেবনের নিরাপদ স্থান হয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়াও শিক্ষা উপকরণ,পাঠাগার,খেলাধুলা সংক্রান্ত নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত প্রতিষ্ঠানটি।
জানা গেছে, ২০২২ সালে কারিগরি শিক্ষায় ৩টি সেক্টরে সফলতা অর্জন করায় কুড়িগ্রাম জেলায় শ্রেষ্ট প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃতি পায় প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়াও ২০২৩ সালে জেলায় শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান প্রধান নির্বাচিত হয় এই প্রতিষ্ঠান হতে। প্রতিষ্ঠানটিতে এসএসসি ভোকেশনাল ৫টি ট্রেড, এইচএসসি বিএমটি ৫টি ট্রেড, ৬ মাস মেয়াদী শর্ট কোর্স ২টি চালু রয়েছে। প্রতিষ্ঠানে ২২জন শিক্ষক, ১০জন কর্মচারী কর্মরত রয়েছে।
দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী অমিত হাসান,একাদশ শ্রেণীর লিটন মিয়া ও মুক্তা খাতুন জানান, প্রতিষ্ঠানের সাথে সংযোগ সড়ক, একাডেমিক ভবন না থাকাসহ নানা অসুবিধার কারণে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় ব্যাঘাত ঘটছে।
এ বিষয়ে অত্র প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক (বাংলা) মোছা. হাছনা বানু জানান, প্রতিষ্ঠানটিতে এসএসসি (ভোকেশনাল) ও এইচএসসি (বিএমটি) এর ১০টি ট্রেডে প্রায় ৭ শতাধিক শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে। এখানে একাডেমিক কোন ভবন না থাকায় শিক্ষার্থীদের পাঠদানে নানা ধরনের জটিলতার সম্মুখীন হতে হয়।
প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও সমাজসেবক ছাইদুর রহমান জানান, যাতায়াত সমস্যাসহ নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত এই প্রতিষ্ঠানটি ২০০২ সালে প্রতিষ্ঠা হলেও আজবধি কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। যার ফলে দিন দিন স্বনামধন্য এই প্রতিষ্ঠানটির প্রতি শিক্ষার্থীদের চাহিদা কমে যাচ্ছে।
অধ্যক্ষ এস এম হুমায়ুন কবীর বলেন, হতদরিদ্র চরাঞ্চলের অবহেলিত পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠির মাঝে কারিগরি শিক্ষা বিস্তারে অত্র প্রতিষ্ঠানটি এক অন্যর্থ ভূমিকা পালন করলেও এখন পর্যন্ত একাডেমিক ভবন, ডিজিটাল ল্যাব ও যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নতি না হওয়ায় দিন দিন পিছিয়ে পড়ছে স্বনামধন্য এই প্রতিষ্ঠানটি। এ বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও আজও কোন সুফল পাওয়া যায়নি। দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবিও জানান তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও অত্র প্রতিষ্ঠানের সভাপতি নাহিদ হাসান খান বলেন, প্রতিষ্ঠানের যাবতীয় সমস্যা নিরসনে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রধান উপদেষ্টা : ড. সরকার মো.আবুল কালাম আজাদ, সম্পাদক ও প্রকাশক : একরামুল হক বেলাল
ঢাকা অফিস- ২২, মা ভিলা ,পূর্ব তেজতুরী বাজার, ফার্মগেট-১২১৫। ইমেইল-spnews17@gmail.com, রেলওয়ে পার্ক,পার্বতীপুর,দিনাজপুর। ০১৭১২৩৭০৮০০
© 2023 Spnewsbd. All rights reserved.