ভোলা প্রতিনিধিঃ ভোলা-২,আসনের বিএনপির সাবেক এমপি আলহাজ¦ হাফিজ ইব্রাহীম এমপি বলেছেন আমরা শৈ^রাচার আওয়ামীলীগ সরকারের গায়েবি মামলায় ভোলা ও ঢাকায় আদালতে হাজিরা দিতে দিতে আমরা স্বর্বশান্ত। বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের দিন কাটে আদালত চত্বরে। বুধবার বোরহান উদ্দিনের ১/১১নং মামলায় হাজিরা দিতে এসে এ কথা বলেন। ২৩ অক্টোবর আরো একটি মামলার হাজিরা রয়েছে তার। তিনি রাজনৈতিক গায়েবি সকল মামলা বাতিল চেয়ে বিএনপির নেতা কর্মীদের মুক্তির দাবী জানান। এসময় ভোলা জেলা ও উপজেলার হাজার হাজার নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন। তিনি আরো বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীদের মা,বাবা, ভাই-বোন, স্ত্রী-সন্তান আছে। তাদের সংসার পরিচালনা করতে হয়। তারা যদি ৫ কার্যদিবসে মামলার হাজিরা দিতে কোটের বারান্দায় বারান্দায় ঘুরে বেড়ায়, তাহলে সংসার চলবে কি করে। প্রতিটি নেতা-কর্মীর পরিবার দূর্বিসহ জীবন যাপন করেন। অনাহারে অর্ধাহারে তাদের জীবন চলে।
বিএনপির নেতা-কর্মীদের নামে মোট কত গুলো মামলা দিয়েছে তার কোনো অফিসিয়াল তথ্য পাওয়া যায়নি।বিএনপির মামলা তথ্য সংরক্ষণ সেলের তথ্য অনুসারে, ২০০৯ সাল থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভোলায় বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের ৬ হাজার নতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করে শতাধীক মামলা দিয়েছেন। অজ্ঞাত আসামী রয়েছে আরো কয়েক হাজার। চরফ্যাশন উপজেলায় সাবেক এমপি র্দূনীতির মহারাজা আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব,আদালত চরফ্যাশনে নিয়ে সেখানেও অর্ধশত মামলা করে রেখেছেন। চরফ্যাশন আদালত পরিচালিত হতো জ্যাকবের কথায়, সেখান থেকে তিনি হাতিয়ে নিয়েছেন শত শত কোটি টাকা।
জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলহাজ¦ রাইসুল আলম বলেন, আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে শতাধীক মামলা করেছেন। বিচ্ছিন্ন ভাবে প্রতি বছর বিএনপির নামে কমপক্ষে ২শতাধীক এবং গড়ে প্রতিদিন ৭টি করে মামলা করতেন। মামলায় মৃত ব্যক্তি, সাংবাদিক, প্রবাসি,চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে থাকা নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধেও গায়েবি মামলা করা অব্যহত ছিল। জুলাই-আগষ্ট মাসেও পুলিশের গুলিতে নিহত ছাত্রদলের সভাপতি মরহুম নুরে আলমসহ আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক, পুলিশের কাজে বাধার আইনে মামলা করে পুলিশ।
সদর উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব হেলাল উদ্দিন বলেন, বিএনপির নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে যে সব মামলা হয়েছে তা মানুষে শুনলে হাসে। তার মধ্যে রয়েছে হাস-মুরকা, ছাগর-গরু, কলা, নারিকেল ও মাছ চুরির মামলা। বিএনপির নামে করা সকল গায়েবি মামলা অবিলন্বে বাতিল করতে বিচারকদের প্রতি আহবান জানাই।
দৈনিক দিনকালের সাংবাদিক মিজানুর রহমান জানান,এই মামলা গুলোর তথ্য স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি। পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আগে ঘটনা ও অভিযুক্তদের সম্পর্কে ন্যূনতম তথ্যও সংগ্রহ করেনি। বিএনপির নেতা-কর্মীদের হয়রানী করার জন্য এই মামলা করা হয়েছে। তিনি নিজেও একটি মিথ্যা চাদা বাজি মামলার গায়েবি আসামী।
এ্যাড. বাছেত বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মী ও সাংবাদিকদেরকে হয়রানি করার জন্যই মিথ্যা মামলা করা হয়। আইনে এর কোনো প্রতিকার মূলক ব্যবস্থাও নেই। রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত মামলা গুলো কীভাবে একটি পরিবারকে আর্থিকভাবে ধ্বংস করে দিতে পারে তার উদাহরণ বিএনপির লাখ লাখ নেতা-কর্মী।
বিএনপির আহবায়ক আলহাজ¦ গোলাম নবী আলমগীর ও সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ¦ শফিউর রহমান কিরন বলেন,খুব ভয়ংকর একটা পরিস্থিতির মধ্যে আছি। আমাদের নেতা-কর্মীরা খুব কঠিন সময় পার করছেন। তারা চরম কষ্টে তাদের পরিবার নিয়ে বেঁচে আছেন। অনেকে তাদের চাকরি হারিয়েছেন, অনেকের ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমাদের কত নেতাকর্মী তো জীবিকার জন্য শ্রমিকের কাজও করছেন। এখন গায়েবি মামলা গুলো বাতিল করা সময়ের দাবী।