পার্বতীপুর (দিনাজপুর) থেকেঃ পার্বতীপুরের বড় চন্ডিপুর চৈতাপাড়া গ্রামের মশিউর রহমান(৪০) নামের এক যুবকের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়েরের দুই মাস পরও এর সঠিক কারন উদঘাটন করতে পারেনি মডেল থানা পুলিশ। মামলার বাদিনী নিহত মশিউর রহমানের স্ত্রী লাবনী বেগম এজন্য কর্তব্য পালনে থানা পুলিশের গাফিলতি রয়েছে বলে আজ রোববার দুপুরে পার্বতীপুর প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেছেন। লাবনী বেগম জানায়, গত ২৮ জুলাই রাত আনুমানিক ৯.২০ মিনিট বা এর পরবর্তী সময়ে এক ব্যক্তির ফোন কল পেয়ে তার স্বামী মশিউর রহমান বাড়ির বাহিরে যায়। এরপর আর বাড়ি ফিরে আসেনি। ২৯ জুলাই সকালে উপজেলার মোমিনপুর ইউনিয়নের দোয়ানিয়া ফকিরপাড়া গ্রামের মমেজা বেগমের বাড়ির পূর্ব পাশের একটি মরিচ ক্ষেতে মশিউর রহমানের মৃত দেহ পাওয়া যায়। পথচারী লোকজনের দ্বারা সংবাদ পেয়ে পুলিশ ও নিহতের পরিবারের লোকজন মশিউর রহমানের মৃতদেহ উদ্ধার করেন। এসময় মশিউর রহমানের কাধের নিচের সর্বাঙ্গে শক্ত অবস্থা পরিলক্ষিত হলেও তার গলা ও ঘাঁড় ছিল নরম। মাথা ও ঘাঁড় চারপাশে ঘুরতে দেখা যায়। কপালে কাটা রক্তাক্ত জখম, কান, নাক ও মুখে রক্তের মত লাল পানি বের হতে দেখা যায়। পার্বতীপুর মডেল থানার অফিসার ইন্চার্জ চিত্ত রঞ্জন রায় ও এস,আই মৃগেন্দ্র নাথ ঘটনার হুবহু বর্ননা দিয়ে সুরতহাল রিপোর্টও তৈরি করেন। এ ঘটনা প্রত্যক্ষ করে উপস্থিত স্বাক্ষীসহ সকলের ধারনা হয় মশিউর রহমানকে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশ মশিউর রহমানের মৃত দেহ উদ্ধার করে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (দিমেক) ময়না তদন্তের জন্য পাঠান। এরপর গত ৩১ জুলাই লাবনী বেগমকে বাদী করে একটি হত্যা মামলা রুজু করা হয়, মামলা নং- ৩০। লাবনী বিগমের অভিযোগ, নিহত মশিউরের ব্যবহ্যত মোবাইলে বিভিন্ন কল লিস্ট অনুসন্ধান করে একাধিক সন্দেহ ভাজন ব্যক্তির নাম পায় পুলিশ। এছাড়াও নিহত মশিউরের আতœীয় স্বজনের পক্ষ থেকেও একাধিক সন্দেহভাজন ব্যক্তির নাম দেয়া হয় তাদেরকে। এসব তথ্য আমলে না নিয়ে হাত গুটিয়ে বসে আছেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। এখনও কাউকে জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় আনা হয়নি। বাদীনির দেয়া তথ্য কর্নপাত না করে পুলিশ তাদের অফিসের কম্পিউটারে দূর্বল মনগড়া তথ্য টাইপ করে মামলার আরজি তৈরি করেন এবং তাতে বাদিনীর স্বাক্ষর নেন বলেও অভিযোগ করেন। মামলার আরজিতে বাদিনীর নামও সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ করা হয়নি। মামলা তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মৃগেন্দ্র নাথ এর ভাষ্য জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, অভিযোগ সঠিক নয়। নিহত মশিউর রহমানের ময়না তদন্তে মৃত্যুর সঠিক কারন চিহ্নিত করা সম্ভব না হওয়ায় ভিসেরা পরীক্ষা করতে পাঠানো হয়েছে। ওই রিপোর্টে হত্যাকান্ড নিশ্চিত হওয়ার পরই পুলিশ আসামী গ্রেফতারে পুরোদমে মাঠে নামবে।