রবিবার, ২৪শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বিয়ের বছর পার না হতেই লাশ হয়ে ফিরলো রূপসার প্রিয়ন্তী

বিয়ের বছর পার না হতেই লাশ হয়ে ফিরলো রূপসার প্রিয়ন্তী

৬০ Views

রূপসা প্রতিনিধি : বিয়ের বছর পুরতে না পুরতে লাশ হয়ে ফিরলো রূপসা উপজেলার তালিমপুর গ্রামের দিলীপ দে’র কিশোরী কণ্যা প্রিয়ন্তী দে (১৭)। ১৩ জুলাই পিয়ান্তীর মৃত্যু নিয়ে শ^শুর বাড়ির লোকজনের অসংলগ্ন কথাবার্তায় সন্ধেহের দানা বাধছে। যশোর শ^শুর বাড়ি এলাকা থেকে ১৪ জুলাই বিকেলে রূপসায় তার লাশ পৌঁছালে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
প্রিয়ন্তীর পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১৪ জুলাই যশোরের বড় বাজার চুরিপট্টি এলাকার নিতাই লাল দে’র ছেলে নয়ন দে’র সাথে রূপসার তালিমপুর গ্রামের দিলীপ দে’র দশম শ্রেণী পড়–য়া কণ্যা প্রিয়ন্তির বিয়ে হয়। বিয়ের আগে ছেলের বাবা-মা প্রিয়ন্তিকে কণ্যার ¯েœহে রাখার কথা বললেও বিয়ের পর তার উপর চাপিয়ে দেওয়া হয় সংসারের কাজের বোঝা। পাশাপাশি পিত্রালয়ের আত্মীয়-সজনের সাথে তার সকল প্রকার যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এমনকি শ^শুর বাড়ির প্রতিবেশীদের সাথে মেলামেশা নিয়েও তার উপর ছিলো বিধিনিষেধ। এমন কঠিন পরিস্থিতির মাঝে স্বামী-সংসার সামলিয়ে প্রিয়ান্তী এবার এসএসসি বি-গ্রেড পেয়ে উত্তীর্ণ হয়।
প্রিয়ন্তীর মা দুলালী দে বলেন, ১৩ জুলাই সকাল সাড়ে ৮টার দিকে প্রিয়ন্তীর শ^শুর নিতাই লাল দে আমাকে ফোন করে বলে ওর গ্যাসপাম করেছে। তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছি তোমরা আসো। খবর পেয়ে প্রিয়ন্তীর মা ও ঠাকুরমা দুপুরে যশোর হাসপাতালে পৌঁছে জানতে পারে প্রিয়ান্তী মারা গেছে। তবে লাশ দেখার ভাগ্য জোটেনি তাদের কপালে। এমনকি কি কারণে প্রিয়ান্তীর মৃত্যু হয়েছে জানতে পারেনি তারা। পরে লাশের ময়না তদন্ত শেষে বিকেলে তারা লাশ নিয়ে গ্রামে ফিরে আসে।
প্রিয়ন্তীর মা দুলালী দে আরো বলেন, আমার মেয়ে বিভিন্ন সময় অভিযোগ করেছে শ^শুর বাড়িরে লোকজন তাকে শারীরিক ও মানষিকভাবে নির্যাতন করতো। পিয়ান্তীর এসব অভিযোগ নিয়ে আমি যেন তাদের সাথে আলোচনা না করি সে ব্যাপারে আমাকে বার বার সতর্ক করতো। বলতো আমি তোমাদের বলেছি জানতে পারলে নির্যাতন আরো বাড়বে। তিনি বলেন, আমার মেয়ের এই মুত্যু স্বাভাবিক মৃত্যু না। তাকে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
প্রিয়ন্তীর মেশো বিজন কুমার দত্ত বলেন, নয়নের বাবার অনুরোধে আমি থেকে প্রিয়ন্তীর বিয়ে দিয়েছিলাম। বিয়ের আগে ওরা আমাদের মেয়েকে যেভাবে রাখার কথা বলেছিলো বিয়ের পর তারা সব উল্টো কাজ করে। একের পর এক নির্যাতনের পর পর প্রিয়ন্তীকে ওরা মেরে ফেলেছে। সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক দোষীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তিনি।
প্রিয়ন্তীর ঠাকুর মা বলেন, জুন মাসের প্রথম দিকে প্রিয়ন্তী ওর স্বামী নয়নকে নিয়ে আমাদের এখানে বেড়াতে এসেছিলো। যাওয়ার সময় নয়ন তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে প্রিয়ন্তীকে সকলের সামনে শাসিয়ে বলে আমার উপরটা দেখেছো, ভিতরটা দেখোনি। এবার থেকে দেখাবো। এভাবে হুমকি দিয়ে নয়ন প্রিয়ন্তীকে নিয়ে চলে যায়। এরপর জীবন্ত প্রিয়ন্তীর আর বাবার বাড়ি আসা হলোনা। ফিরলো লাশ হয়ে। প্রিয়ন্তীর অকাল মৃত্যুতে ক্ষুব্দ এলাকাবাসী। তারা এই অকাল মৃত্যু কেউ কোনভাবেউ মেনে নিতে পারছেনা। তার মৃত্যু রহস্য উদঘাটনে সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান।

Share This