বেড পদ্ধতিতে চাষাবাদ বিষয়ে তিনি বলেন, এই পদ্ধতিতে সরাসরি জমি তৈরী, বীজ বপন, মই দেয়া ও বেড তৈরীর কাজ এক চাষেই হয়। স্বাভাবিক পদ্ধতিরমত চাষ-মই দেয়ার প্রয়োজন পড়েনা। এই চাষ পদ্ধতিতে সার-বীজ সঠিক গভিরতায় পড়ে। ফলে বীজের অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা বাড়ে। দুই লাইনের মধ্যবর্তী স্থানে জমি চাষ পড়েনা। ফলে নাড়া স্বাভাবিক অবস্থায় থাকে। এতে মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষিত হয়। চাষের সময় একই সাথে বেড ও নালা তৈরী হয়। বেডের উপর ফসল ও নালায় পানি দেয়া হয়। এতে সেচ কম লাগে। কম পানিতে গম-ভুট্টার বৃদ্ধি এবং ফলন ভালো হয়। গাছের শেকড় গভীরে থাকায় গাছ হেলে পড়েনা। আবার বেডের সাথে নালা থাকায় আগাছা দমন সহজ হয়। পর্যাপ্ত আলো বাতাস চলাচল করায় ইঁদুরের আক্রমণ হয়না। একই বেড না ভেঙে বিভিন্ন ফসল চাষ করা যায়।
ভুট্টা চাষের হিসেব ধরে তিনি বলেন, ভুট্টা চাষের জন্য প্রচলিত পদ্ধতিতে এক হেক্টর জমি চাষে খরচা হয় প্রায় ১২ হাজার টাকা। বীজ বপনে শ্রমিক খরচা হয় ১৫ হাজার টাকা। নালা তৈরীতে আরও শ্রমিক খরচা ১১ হাজার টাকারমত। সব মিলিয়ে হেক্টরে কৃষকের খরচ ৩৮ হাজার টাকা। কিন্তু বেড পদ্ধতিতে মাত্র একটি চাষেই বেড তৈরী, বীজ বোনা এবং চাষ হয়ে যায়। এতে সাকুল্যে খরচ হয় ৪ হাজার টাকা। এই পদ্ধতিতে চাষে হেক্টরে ৩৪ হাজার টাকা-ই সাশ্রয় কৃষকের। আবার প্রচলিত চাষে প্রতি হেক্টরে ৪৫ লিটার জ্বালানি পোড়ে। তাতে উৎপন্ন হয় ১১২ কেজি কার্বন-ডাই-অক্স্রাইড। কিন্তু বেড পদ্ধতিকে চাষে জ্বালানি পোড়ে ১৭ লিটার। তাতে কার্বন-ডাই-অক্সাইড উৎপন্ন হয় ৪২ লিটার। এই পদ্ধতিতে চাষে ৭০ লিটার কম কার্বন-ডাই-অক্সাইড নি:সরণ হয়।
কর্মশালায় অংশ নেওয়া সাপাহার উপজেলার কৃষক সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমাদের এলাকায় ধান চাষ হয়না বললেই চলে। খরা হওয়ার কারনে অনেক জমি অনাবাদি পড়ে থাকে। এখানে প্রশিক্ষণ নিয়ে অনেক কিছুই জানতে পারলাম। আমি গম ও ভুট্টার আবাদ শুরু করবো এবার।
পোরশা উপজেলার কৃষক মামুন শাহ বলেন, বেড প্ল্যান্টার’ যন্ত্রে বেড তৈরি করে চাষাবাদ করার ফলে কম সময়ে জমি যেমন তৈরি করা যায়। তেমনি সার, বীজ এবং পানির অপচয় কম হয়। আধুনিক এ পদ্ধতিতে এক চাষেই জমি তৈরি, সার দেওয়া, বীজ বপন, মই দেওয়া ও বেড তৈরির কাজ হয়। সার-বীজও সঠিক গভীরতায় পড়ে। ফলে বীজের অঙ্কুরোদগম ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। আমরা প্রশিক্ষনে যা শিখলাম তা কাজে লাগাবো।
নিয়ামতপুর উপজেলার কৃষক আব্দুল মালেক বলেন, এই পদ্ধতিতে গাছের বৃদ্ধি ভালো হয়, গাছ মোটা হয়, সেচও নাকি কম লাগে। এই পদ্ধতিতেই আমি গম ও ভুট্টার আবাদ করতে চাই।
প্রধান উপদেষ্টা : ড. সরকার মো.আবুল কালাম আজাদ, সম্পাদক ও প্রকাশক : একরামুল হক বেলাল
ঢাকা অফিস- ২২, মা ভিলা ,পূর্ব তেজতুরী বাজার, ফার্মগেট-১২১৫। ইমেইল-spnews17@gmail.com, রেলওয়ে পার্ক,পার্বতীপুর,দিনাজপুর। ০১৭১২৩৭০৮০০
© 2023 Spnewsbd. All rights reserved.